ফেব্রুয়ারি ঘিরে নগরীতে চড়া ফুলের দাম, প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা
# কেনাবেচা বাড়েনি তবে আমরা আশাবাদী: ব্যবসায়ী
# এ মাসে ফুলের চাহিদা বাড়ায় ব্যবসায়ীরা সুযোগটি নিচ্ছেন: ক্রেতার
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: একই মাসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস। সারা বছরের অন্য মাসগুলোর তুলোনায় ফেব্রুয়ারি ঘিড়ে সর্বচ্চ চাহিদা বাড়ে ফুলের। এ মাসের দিবসগুলো শুরু হয় রোজ ডে বা গোলাপ দিবস দিয়ে। এরপর টানা ৬ দিন বিভিন্ন দিবসের পর ভালোবাসা দিবসেও বিশেষ চাহিদা থাকে গোলাপ ফুলের। মাঝের দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা কিছুটা কমে গেলেও ব্যবসায়ীরা হিমশিম খেয়ে যায় ১৪ তারিখে। তাছাড়া পহেলা ফাল্গুনে মেয়েরা একটু নিজেদের সাজাতে ফুল বেছে নেয়। ফাল্গুনকে ঘিড়ে স্কুল কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাজ-সজ্জায় ব্যবহার হয় বাহারী রঙের ফুল।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী) নগরীর বিভিন্ন দোকান ঘুড়ে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে ফুল বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে নগরীর ফুল ব্যবসায়ীরা। ফুলের দোকানগুলো দেখে মনে উঠছে এটা দোকান নয় কোন ফুলের বাগান। ফেব্রুয়ারি মাসকে ঘিরে ফুলের দোকানগুলো যে সেজে ওঠে এক অনন্য রূপে। রাজধানীর ফুলের আড়তে দিয়ে দিচ্ছেন অগ্রিম অর্ডার কিংবা বুকিং। তবে এখন থেকেই ফুলের চাহিদার সাথে বেড়েছে দামও। একটি গোলাপের স্টিক অন্যান্য সময়ে যেখানে ১০ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হতো সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া বোতাম ফুল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, জিপসী ৩৫০ টাকায়, গ্ল্যাডিওলাস ৪০ টাকায় ও জারবালা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। দাম বেড়েছে রজনীগন্ধা, গাদা, চন্দ্রমল্লিকা, এস্টার, লিলিয়ামসহ বিভিন্ন ফুলের। চাহিদার সাথে অতিরিক্ত দাম বাড়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন ক্রেতারা।
ফুল ব্যবসায়ী জাকির জানায়, এবছর অন্যান্য সময়ের থেকে এখন বেচাকেনা তুলনামূলক কম। তবে আসনে আরো কিছু দিন আছে। তখন বাড়তে পারে। ক্রেতাদের কাছে বছরের সব সময় এই ফুলের চাহিদা থাকে না। সারা বছর যে চাহিদা থাকে তার থেকে এ বছর চাহিদা বেশি থাকে। আমরা ফুলগুলো তো এখানে এনে রেখে দিতে পারবে না। ফুল তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায় তাই এখন অর্ডার করা সব ফুল আনি নি, ধীরে ধীরে আনবো। আমরা এইদিনগুলোতে বিক্রির জন্য ফুল সংগ্রহ করে দোকান সাজিয়েছি। দেশে এক অন্যরকম অবস্থা তৈরি হওয়ায় ব্যবসা একেবারেই কমে গেছে। তবে আশা করছি আমরা প্রতিবছরের মতো এইসময়টা ভালো বেচাকেনা করতে পারবো। দাম একটু বেড়েছে কারণ চাষিরা সারা বছর ছেড়ে এই সময়টার আশায় থাকে। তারাও ফুলের দাম বেশি রাখে আমাদেরও বেশি দিয়ে কিনতে হয়। তাই অন্য সময়ের তুলোনায় এবার দাম বেশি।
আরেক ব্যবসায়ী ইয়াসীন জানায়, একটি ডালা বা তোড়া তৈরিতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ ধরনের ফুল দরকার। এতে গোলাপ, গাদা ছাড়াও আরও নানা ধরনের ফুলের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এবার সব ধরনের ফুলের দাম আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি। এতে লাভ কম হলেও বিক্রি যথেষ্ট হয়। দাম বেশি হলেও ক্রেতা আগের চেয়েও বেড়েছে। ইতোমধ্যে একুশ বরণের জন্য বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অর্ডার পাওয়া শুরু করেছি। আবার অনেকেই তৈরি ডালা কিনে নিচ্ছে যায়। তাই আগে থেকে কিছু বানিয়ে সাজিয়ে রাখবো।
শিক্ষার্থী মো. রাশেদ ও নিগার সুলতানা বলেন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে এরই মধ্যে ফুলের চাহিদা বেড়েছে। অন্য সময়ের চেয়ে ফুলের দাম তিনগুণ বেশি। ভালোবাসা দিবসে ফুলের চাহিদা বেশি হয়ে ওঠে, কারণ এটি ভালোবাসা প্রকাশের উপযুক্ত উপহার। ফুলের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভালোবাসার আনন্দ ও মনোমুগ্ধতা বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা ঠিক এ সুযোগটি নিচ্ছেন। এটি কিন্তু ঠিক না