মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫
Led01অর্থনীতি

নগরীতে বেড়েছে তেল-চালের দাম, স্থিতিশীল কাঁচা বাজার

# ব্যবসায়ি আর সরকার যে কী চায়, সেটাই বুঝতে পারি না: ক্ষুব্ধ ক্রেতা
# রোজায় সবজির দাম এমনই কম থাকবে বলে আশা করি: ব্যবসায়ী

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: পূর্বের তুলনায় বাজারে বেড়েছে সয়াবিন তেল ও চালের মূল্য। সরকার প্রতি লিটার তেলের মূল্য ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করলেও বাজারে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা। একই ভাবে নানা অজুহাতে দাম বেড়েছে চালেরও। তবে তেল-চালের দাম বাড়লেও কমেছে কাঁচাবাজারের বিভিন্ন রকমের সবজির দাম। ব্যবসায়ীরা বলছে শীতের মৌসুম থাকায় কিছুটা দাম কমেছে সবজির। সবজির দাম কমায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা। সোমবার (৩ ফেব্রয়ারী) সকালে সরেজমিনে নগরীর দিগুবাবুর বাজার ও আশেপাশের এলাকা ঘুরে পাওয়া যায় এ তথ্য। সর্বশেষ ৯ ডিসেম্বর পাঁচ লিটার তেলের দাম ৮৭৫ টাকা করার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এর পরেও বাজারগুলোতে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হয়ে আসছে সয়াবিন তেল। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জনসাধারণ। বাজারে দাম বেড়ে মিনিকেট বা নাজির চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি, পাইজাম বা আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, পোলাও চাল ১২৫ টাকা কেজি।

বাজার করতে আসা গৃহিনী আলেয়া বেগম বলেন , তেল নিয়ে কি তামাশা চলতেছে আল্লাহ ভালো যানে। তেলের দাম সরকার বাড়াইসে সেই ডিসেম্বরে। এখনও তার থেকে বেশি দামে বিক্রি হইতেসে। খোলা তেলের দাম আরও অনেক বেশি রাখে। যারা বলছে তেল নেই, তাদের কাছে তেল আছে। বিক্রি করছে না। সামনে রোজা, তখন আরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করবে। আমরা যারা মধ্যবিত্ত তারাতো আছি বিপদে। আসলে ব্যবসায়ী আর সরকার যে কী চায়, সেটাই আমরা বুঝতে পারি না। তারা কী আরও দাম বাড়াতে চায়? সবজির দাম একটু কমছে কিন্তু ৪ টাকা কমাইয়া রোজার সময় ২০ টাকা বাড়াইবো।

এক মুদি দোকান ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান বলেন, ডিলাররা আমাদের তেল দেয় না। আমরা ডিলারের কাছে বললে তারা বলে, তেল নাই। ডিলার যদি না দিতে পারে তাহলে আমরা কীভাবে পাবো? এ ছাড়া বাকি সদায় তো আমরা যে রেটে কিনি সেই ভাবেই বিক্রি করি।

এছাড়াও কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে আদা ১০০ টাকা, দেশী রসুন ২৪০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা আবার দেশী রসুন ২০ টাকা বাড়তি ২৪০। এছাড়াও আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি, পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি, বাধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, ব্রকলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি, সিম বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি, আকার বেদে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, বেগুন কেজি প্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়াও মূলা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, মোটা লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, সাজনা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি, পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, লাল শাক বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি, মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি, পিয়াজ পাতা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি, ধনে পাতা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, ঢেঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি, উস্তা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি, ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি, বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা হালি, গাজর বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, শসা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি। ব্যবসায়ী আবু বক্কর জানায়, শীতকাল থাকাতে আর জোগান বেশি থাকা সবজির দাম কম। আমাদের বাজার এই ওঠে, এই নামে। এবারের রোজায় দাম এমনই কম থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়াও মাছের বাজারে ঘুড়ে দেখা যায় আকার ভেদে বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮৫০ টাকা কেজি, ছোট আকারের ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি, রুই বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি, পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি, কাঁচকি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি, গলদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা কেজি,টাকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি, শিং বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি, কই বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা কেজি, আইর মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি, চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা কেজি, পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি, বোয়াল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি ।

তবে বাজারে কিছুটা বেড়েছে বিভিন্ন প্রকার মাংসের দাম। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৭৮০ টাকায়, খাসি মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১১০০ টাকায়, ভেরা মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায়, কক মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকায়, লেয়ার মুরগি (লাল) কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়, ব্রয়লার কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়, খাসি মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকায়, খাসি মোরগ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ টাকায়।

পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ও মধ্যবিত্ত মানুষদের বিকল্প খাবার ডিম বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে (লাল) ৪৪ টাকা হালি, সাদা ডিম ৪৪ টাকা হালি, হাসের ডিম ৮০ টাকা হালি, দেশি মুরগীর ডিম ৮৪ টাকা হালি, কক মুরগী ৮০ টাকা হালি, কোয়েল ১৫ টাকা হালি।

মুদি বাজারে সরিষা তেল ২৪০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি, আটা ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা কেজি, ময়দা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, মসুরের ডাল ১২০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি, এ্যাংকার ডাল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি, শুকনা মরিচ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি, চিনি সাদা ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি, লাল চিনি ১৫০ টাকা কেজি, হলুদ গুরা ৩৬০ টাকা কেজি, মরিচ গুরা ৪২০ টাকা কেজি।

RSS
Follow by Email