বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
সোশ্যাল মিডিয়া

বইমেলায় আসছে সাব্বির সেন্টুর ‘স্বপ্নভরা দুটি চোখ ও শর্ট স্ক্রিপ্ট’

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: এবারের একুশের বইমেলায় কথা সাহিত্যিক ও নাট্যকার সাব্বির আহমেদ সেন্টুর আসছে দু’টি গ্রন্থ। যার মধ্যে একটি হচ্ছে উপন্যাস অপরটি নাটকের। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে লাইভ নারায়ণগঞ্জেকে এ তথ্য জানানো হয়।

উপন্যাস গ্রন্থটি মূলত নারী নেতৃত্ব লেখা হয়েছে। নারীত্বের আড়ালে তারা যে একজন মানুষ তাদেরও যে সুন্দর একটি মন, আশা-আকাঙ্খা রয়েছে তারই প্রতিফলন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গল্পটিতে। উপন্যাস গ্রন্থটির নাম রাখা হয়েছে ‘‘স্বপ্নভরা দুটি চোখ’’। উপন্যাস গ্রন্থ নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে লেখক বলেন,প্রতিটি মানুষের জীবনই এক একটি চরিত্র। আর প্রতিটি চরিত্র থেকে তৈরি হয় নতুন নতুন গল্প। মানুষের জীবনের গল্প নিয়েই সাজানো হয়েছে বাস্তবধর্মী উপন্যাস ‘স্বপ্নভরা দুটি চোখ’। উপন্যাসটি মূলতঃনারী নেতৃত্ব এবং নারী—পুরুষের বৈষম্যের বিষয়টির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পুরুষ শাসিত সমাজে নারী কতটুকু নিরাপদ,কতটা মর্যাদাশীল তা সুচারুভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মেহের আফরোজ আর সীমাদের মতো নারী নেত্রীদেরকে জীবনে কত যে হেঁাচট খেতে হয়,কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয় সেটা অজানা থাকলে এই সমাজে নারীদের প্রতি অবিচারই করা হবে। পুরুষদেরকেও নারীদের পাশে প্রয়োজন রয়েছে তাও বলা হয়েছে এখানে। প্রতিবাদী নারীদেরকে কেউ কেউ আড় চোখে দেখে। বলে বেড়ায় এরা পুরুষ বিদ্বেষী। আসলে বিষয়টি অমন নয়, নারীদেরও মন আছে, তারাও পুরুষের প্রতি দুর্বল কিন্তু ভাষায় প্রকাশ করা হয়ে ওঠেনা। তারা ‘‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটেনা’’স্বভাবের। বাস্তবতঃনারীরা পুরুষ ছাড়া চলতে পারে না পারবেনা। শুধু একটা কারণেই নারীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে যখন নারীর প্রতি অবিচার করা হয়। কল্যাণীদের মতো সহজ সরল নারীদের সম্ভ্রমহানি আর হত্যা করা হয়। এসবের প্রতিবাদ করতে গিয়েই মেহের আফরোজ আর সীমারা জীবন বাজী রেখে নারী অধিকার বাস্তবায়নে রাজপথে নামেন। নারীদের জন্য কাজ করতে করতে এক সময় নিজেদের পরিবার পরিজনের কথা ভুলে যান। তাদেরওতো একটা জীবন। তাদের ওতো স্বপ্ন-সাধ আছে। সেই বিষয়গুলোই গভীরভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাসটিতে। আমার বিশ্বাস উপন্যাসটি নারী নেতৃত্বদানকারীদের জন্য কাজে আসবে। আমি এও বিশ্বাস করি আমার এই বইটি নারীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগাবে। লেখকের অপরাপর নাট্যগ্রন্থটির নাম দিয়েছেন ‘‘শর্ট ষ্ক্রিপ্ট’’।

১০ নাটকের সমন্বয়ে এ গ্রন্থটি সাজানো হয়েছে। মহামারি করোনা ও মাদক নিয়ে দু’টি নাটক রয়েছে গ্রন্থটিতে। গ্রন্থটির নাম শর্ট স্ক্রিপ্ট রাখার
কারণ জানতে চাওয়া হলে লেখক জানান, তথ্য প্রযুক্তির কারণে মঞ্চ নাটক অনেকটা হারিয়ে যাওয়ার পথে। এক সময় আমাদের সমাজের মানুষগুলো ঘন্টার পর ঘন্টা বসে পরিবার পরিজন নিয়ে খোলা মাঠে মঞ্চ নাটক দেখতো। অনেকটা বিনোদনের মধ্য দিয়েই সময় কাটতো সবার এখন আর তা
হয়না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসে সেই ক্ষণ সেই মন আর পরিলক্ষিত হয়না। ২ থেকে ৩ঘন্টা বসে নাটক বা সিনেমা দেখার ধৈর্য এখন আর কারো নেই। মঞ্চ নাটকের কথা শুনলেই দীর্ঘশ্বাস নিতে দেখা যায় অনেককেই। তাদের অভিমত,ওরে বাবারে বাবা ২/৩ ঘন্টা বসে নাটক দেখার প্রশ্নই ওঠেনা। এতো সময় নষ্ট করার জো নেই। ইত্যাদি আরো অনেক ধরণের প্রশ্ন তাদের মাঝে ঘুরপাক খায়। সময়ের সাথে সাথে মানুষের মানেভাবের পরিবর্তণের কারণে এখন সবাই সংক্ষিপ্ত পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করছে বেশি। আগে টেলিভিশন নাটকের সময়সীমা থাকতো ১ থেকে দেড় ঘন্টা এখন সেগুলোকে শর্টফিল্ম করে সময়সীমা করা হয়েছে ৫মিনিট থেকে শুরু করে ৪০মিনিট ব্যাপ্তী। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই মঞ্চ শিল্পীদের জন্য আমিও সিংক্ষপ্তের কাতারে চলে এলাম কাকতলীয়ভাবে। আমার এ গ্রন্থটির প্রথমে নাম নিয়ে খটকা ছিল কি দিলে ভাল হয় বা কি দিতে পারি। কখনো মনে হয়েছিল ‘নাটক পাড়া’’ দেই এরপর নাট্যাঙ্গন,নাট্যজগৎ,নাট্যাকাশ আরো বেশ কয়েকটা নামই প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা ছিল। বিষয়টি নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশনীর মুনীর আহমেদ এর সঙ্গে বুঝা পড়া করলাম সে আমাকে বললো বইটি কি বিষয় নিয়ে আমি তাকে বললাম আমার প্রত্যেকটা গল্প শর্ট ষ্ক্রিপ্ট তখন সে আমাকে বললো অতো না প্যাচিয়ে দিয়ে দেন সাব্বির আহমেদ সেন্টু’র শর্ট স্ক্রিপ্ট। তার পরামর্শটা আমার ভাল লাগলো এরপর সেই মোতাবেক কাজ হলো ব্যাস দিয়ে দিলাম ‘‘শর্ট স্ক্রিপ্ট’’।

বইটিতে ১০টি গল্প নাটক আকারে সাজানো হয়েছে। চলমান প্রেক্ষাপটসহ সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়েছে গল্পগুলো আশা করি সবার কাছে ভাল লাগবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস নাট্যকার,নাট্যপ্রেমী,পরিচালক— প্রযোজকদের কাছে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াসটি ভাল লাগবে। সেই ভাল লাগার প্রত্যাশা নিয়েই আগামী দিনগুলোতেও এভাবে সকলের পাশে থাকার ইচ্ছা পোষণ করছি। গতবারের বইমেলাতেও সাব্বির আহমেদ সেন্টু একটি ছড়াগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে যার নাম ছিল ‘‘ছড়ার বুলেট’’। বইটি বেশ কাটতি হয়েছিল গতবার। ছড়ার মন মাতানো গাঁথুনির কারণে বইটি
সর্বত্রই আলোড়ন সৃষ্টি করে।

RSS
Follow by Email