শামীম ওসমানদের আট-দশটা র্টচার সেল ছিলো: রফিউর রাব্বি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেছেন, আজকে আমরা এখানে যারা আছি, আমরা সকলেই একটা ইতিবাচক শহর গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের লড়াই সংগ্রাম দীর্ঘদিন যাবত জারি রয়েছে। আমাদের সামনে আমাদের একটা লক্ষ্য বাস্তবায়নের সুযোগ এসেছে। সেই সুযোগ আমরা কিভাবে কাজে লাগাতে পারি, সবাই মিলে আলোচনার মধ্যে দিয়ে একটি জায়গায় উপনিত হওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজনটি। আমাদের নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন প্রচারণা রয়েছে দেশে এবং দেশের বাহিরে, তবে খুব ইতিবাচক প্রচারণা না। আমরা যারা নারায়ণগঞ্জে বসবাস করি, আমাদের এই নারায়ণগঞ্জে বাস্তবতা, ইতিহাস, সংস্কৃতি না জানার কারণে আমাদের মধ্যে একটি হীনমন্যতা কাজ করে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও মডেল গ্রুপের এমডি মাসুদুজ্জামান এর আয়োজিত ‘আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই?’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিউর রাব্বি বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জে মন্ডলপাড়া যে মসজিদটি রয়েছে, সেটি তৈরী হয়েছে ১৪৮২ সালে। এছাড়া বন্দরে শাহী মসজিদটি একই সময়ে তৈরী করা হয়। বাণিজ্যের দিক থেকে ও অর্থনীতির দিক থেকে আমাদের নারায়ণগঞ্জ একটি গৌরব। নারায়ণগঞ্জের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে, কিন্তু নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রসের প্রথার কারণে এগুলো চাপা পড়ে গেছে। আমাদের এখন এই পরিচয় উঠে এসেছে যে, নারায়ণগঞ্জ একটি সন্ত্রাস-গডফাদারের নগরী। এখানে মানুষ বসবাস করলে লাশের পর লাশ তারা ফেলে দেয়। এবং এই প্রচরণা মিথ্যা নয়, এর বাস্তবতা আছে আমরা দেখেছি। নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান গডফাদাররা, শেখ হাসিনা ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় হেনো কোন কর্মকান্ড নাই তারা করে নাই। চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, মাদকের ব্যবসাসহ সমস্ত অপকর্ম তারা করেছে। এর প্রতিবাদ যদি কেউ করতে চেয়েছে, তাহলে আমরা দেখেছি তারা লাশের পর লাশ ফেলেছে।
তিনি বলেন, শামীম ওসমানদের আট-দশটা র্টচার সেল ছিলো। আমরা ২০১৩ সাথে এগুলোর ঠিকানা দিয়ে বন্ধ করতে চেয়েছিলাম। ত্বকী হত্যার পর প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে সেটি বন্ধ করেছিলো। পরবর্তীতে অন্য জায়গায় এই র্টচার সেল শুরু হয়েছে। তারা বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করবো, এবং তা দিতে অস্বিকার করলে তাদের টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতন করতো। এমন একটা অবস্থা তৈরী করতো যে, তাদের কথা না শুনলে লাশ হয়ে শীতলক্ষ্যায় ভাসতে হবে। এই ভয়ে এই আতঙ্কে আমাদের নারায়ণগঞ্জে মানুষ, ব্যবসায়ীরা। যে যে জায়গা গুলো তারা নিয়ন্ত্রণ করেছে ব্যবসায়ী, সাংবাদিকতা, আদালতসহ বিভিন্ন জায়গা গুলো তারা তাদের তাবেদার তৈরী করেছে। আর এদের সবাই ৫ আগস্টের পরে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়েছে বা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে এমন নয়। তারা এখনো দেশ ও দেশের বাহিরে বহাল তবিয়েত রয়েছে।
‘কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই’ এ বিষয়ে রফিউর রাব্বি বলেন, আমরা একটি যানজটমুক্ত নারায়ণগঞ্জ চাই। চাষাঢ়া থেকে ডিআইটি যেতে ১ ঘন্টা সময় লাগে। এই শহরে বের হলে কোন ভাবে মনে হয়না এই শহরের মা-বাপ বা প্রশাসন কোন সংস্থা রয়েছে। এগুলোর মূল দায়িত্ব হলো সিটি কর্পোরেশনের। ফুটপাত দখল করে রাস্তার অর্ধেক পর্যন্ত হকাররা দখল করে রেখেছে। আওয়ামী লীগের আসলে আমরা দেখেছি তারা কিভাবে চাঁদা তুলেছে আজকেও সেটা বন্ধ হয়নি। সিটি কর্পোরেশন এই কাজ গুলো করছে না। তারা নিয়োগ বাণিজ্য করছে।