চাষাড়ায় ফুটপাথ-মার্কেটে জমে উঠেছে গরম কাপড়ের বেচাকেনা
# ‘মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতাদের ভিড় বেশি’
# ‘ক্রেতাদের মাঝে টুপি-কান টুপির বেশ চাহিদা আছে’
# ‘সন্ধ্যা থেকে কাপড় কেনাকাটায় হিড়িক পড়ে’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহ শেষ হলো মাত্র, শীতের তীব্রতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে নগরী, শুষ্ক হয়ে উঠেছে আবহাওয়া। দুই এক দিন বাদে সপ্তাহের বেশির ভাগ সময়েই বেশ ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। আর শীত জেঁকে বসার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠেছে গরম কাপড়ের বাজার। নগরীর বিভিন্ন বিপনী বিতান, ফুটপাথের দোকানগুলোতে ক্রেতারা ভিড় করছেন।
মাথার টুপি, পায়ের মোজা, হাত মোজা, কান টুপি, জাম্পার, সোয়েটার, ফুলহাতা গেঞ্জি, হুডি, উলের পোশাক, রেকসিনের জ্যাকেট, ওভারকোট, কার্ডিগান, মাফলার, শিশুদের জিন্সের ফ্রক, নারীদের জন্য লং সোয়েটার, ডেনিম জ্যাকেটসহ নানান ধরণের গরম কাপড় মিলছে দোকানগুলোতে। সকাল থেকে বিভিন্ন দোকান খোলা হলেও, বিকেল থেকে ধুম বেচাকেনা চলে।
সোমবার ( ২৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর বিভিন্ন বিপনী বিতানে হিড়িক পড়েছে গরম কাপড় কেনাকাটায়। সেই সাথে সলিমুল্লাহ সড়ক, বঙ্গবন্ধু রোডের পাশে ফুটপাথে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নানা ডিসাইনের গরম কাপড় নিয়ে পসড়া বসিয়েছেন। ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী, কারখানার শ্রমিক, শিক্ষকসহ প্রায় সকল শ্রেণীপেশার মানুষ আসছেন গরম কাপড় কিনতে। দোকানের হরেক রকমের কাপড়ের মাঝ থেকে ক্রেতারা নিজের পছন্দমতো কাপড় বাছাই করছেন। হাত দিয়ে কাপড়ের গুণমান পরখ করছেন। ভালো লাগলেই দোকানীর সাথে কাপড়ের দাম নিয়ে মুলামুলি করছেন। কেউ নিজের জন্য হাত মোজা, সোয়েটার কিংবা জ্যকেটে কিনছেন। কেউ নিজের ছেলে-মেয়ের জন্য কানটুপি, জ্যাকেট কিনছেন। কেউবা বাবা-মায়ের জন্য শাল কিনছেন। ক্রেতাদের সাথে কথা হলে জানান, ঠান্ডা আবহাওয়া আরাম কি স্বাচ্ছন্দবোধ করতে গরম কাপড়ের বিকল্প নেই। শীতকাল শেষ হতে আরও দেড় মাস বাকি। তাই নিজের জন্য, পরিবার-স্বজনদের জন্য গরম কাপড় কিনতে মার্কেট, ফুটপাথের দোকানগুলোতে আসতে হচ্ছে।
বিক্রেতাদের সাথে কথা হলে জানান, শীতের জন্য সাধারণ মানুষদের মাঝে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। নতুন,পুরান দুই ধরণের কাপড়ের দিকে ক্রেতাদের ঝোঁক রয়েছে। সকাল থেকে কাপড় বেচাকেনা শুরু হয়। দুপুর পর্যন্ত ক্রেতাদের হলাকা চাপ থাকে। সন্ধ্যা থেকে ক্রেতাদের চাপ বাড়ে। এই সময়ে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুরা দোকানে ভিড় জমান।
চাষাড়ায় প্রিপারেটোরি স্কুলের সামনে এক ভাসমান দোকান থেকে কাপড় কেনার সময় নসরিন আক্তার লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, জানুয়ারি থেকে মেয়ের স্কুল শুরু হবে। মেয়ের জন্য সোয়েটার দেখছিলাম। ফুটপাথ, মার্কেট দুই জায়গা থেকেই কাপড় কেনা হয়। মাঝে মধ্যে ফুটপাথের দোকানগুলোতে ভালো কাপড় চোখে পড়লে কেনা পড়ে। তবে কেনার আগে কাপড় দেখে-বুঝে নিতে হয়।
আবির নামে এক তরুণ বিক্রেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, শীতের জন্য পুরুষদের জন্য জাম্পার, কার্ডিগান, লং স্লিভ শার্ট সংগ্রহ করেছি। গত বছরের তুলনায় এইবার কাপড় বিক্রি ভালো হচ্ছে। ঢাকা থেকেই আমরা মালামাল এনে থাকি। পাঁচশত থেকে দেড় হাজারের মধ্যে বিভিন্ন ডিসাইনের কাপড় আছে। কিশোর-তরুণ বয়সীরা আমার দোকানে ভিড় করছেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্রেতারা আসেন। তবে সন্ধ্যার পর থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে। এই সময়ে কাপড় ভালো বিক্রি হয়।
জাকির নামে অপর এক বিক্রেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, টুপি, কান টুপি, হাত মোজা, পা মোজা, মাফলার বিক্রি করছি। ক্রেতাদের মাঝে টুপি-কান টুপির বেশ চাহিদা আছে। টুপি-কান টুপি দেড়‘শ থেকে দুই‘শ টাকায় মিলছে। মোজা মানভেদে ৩০ টাকা, ৮০ টাকা, ১০০ টাকায় মিলছে। বিকাল থেকে ভালো বেচাকেনা শুরু হয়, একেবারে রাত পর্যন্ত চলে।
সায়াম প্লাজার পাশের মার্কেটে দোকানের বাইরে হ্যাঙ্গারে ঝুলানো হয়েছে বিভিন্ন রঙের লং সোয়েটার। স্বামী সাব্বিরকে নিয়ে এক একটি সোয়েটার দেখছেন সামিনা বেগম। কথা হলে জানান, আগের সোয়েটারটা বেশ পুরোনো হয়েছে। নতুন একটা কেনা দরকার। তাই স্বামীকে নিয়ে মার্কেটে ঘুরছিলাম, পছন্দ হলেই কিনবো। কাপড়ের ভালো ভ্যারাইটি পাওয়া যায় শহরে।
মার্কেটে শ্যামলী ফ্যাশন নামে এক দোকানের সেলসম্যান সিয়াম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, মার্কেটে বেশিরভাগ শপে কাপড় ফিক্সড প্রাইসে মিলছে। আমরা শীতের জন্য এইবার বিভিন্ন ডিসাইনের লেডিস ডেনিম জ্যাকেট ও লং সোয়েটার বিক্রি করছি। ডেনিম জ্যাকেট ৬০০ টাকায় বিক্রি করছি। আর লেডিস লং সোয়েটার ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি করছি। শীতের শুরুতে কাপড় ভালো বিক্রি হয়েছিল। এখন কিছুটা কম। তবে শীত বাড়ার সাথে সাথে মানুষের কাপড়ের চাহিদা বাড়বে।