ঢাকা-না.গঞ্জ রেলপথে বিভিন্ন স্থানে নেই গেইটম্যান, রশি দিয়ে আটকায় যানবাহন
# চোখের সামনে দেখেছি রশি মানছে না: স্থানীয়রা
# স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা রিস্ক নিয়ে যাতায়ত করে: গেইটম্যান
# দ্রুত সমাধান করা হবে: স্টেশন মাস্টার
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ঢাকার পাশেই নারায়ণগঞ্জ একটি ব্যস্ততম শহর। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখানে এসে মানুষ বসবাস করে। ব্যবসায়িক এই অঞ্চলের নগর থেকে রাজধানীতে যাত্রা করতে, গণপরিবহন বাস ও অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি রেল সংযোগ রয়েছে। যার দুটি স্টেশন শহরের ভেতরে হওয়ায় প্রতিদিন মূল সড়কের উপর দিয়ে ক্রোসিং করে যাতায়াত করে ট্রেন। প্রধান দুটি ক্রোসিং লাইন ২নং রেলগেট ও চাষাঢ়া রেলগেট। দুটি গেইটের রেল বেড়িয়ার ৮টি হলেও অকেজ হয়ে আছে ৬টি। এতে গেইটের রেল বেরিয়ার বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে দঁড়ি। যার ফলে নিয়ম না মেনেই যানবাহন চলাচলে কয়েকদিন পর পর হচ্ছে দুর্ঘটনা।
এছাড়া, নগরীর ১নং রেলগেট ও উকিলপাড়াসহ কয়েকটি স্থানে ব্যস্ততম সড়কের পাশে নেই রেল ক্রোসিংয়ে গেইটেম্যান। প্রতিনিয়ত সেসব জায়গায় ঘটছে দুর্ঘটনা। একদিকে মানুষ যেমন ভীত তেমনি খুঁজছে সমাধানের পথ। ঝুঁকিতে বসবাস করছে রেল গেইটের দুপাশে থাকা সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। তবে কতৃপক্ষ বলছে খুব শীঘ্রই শেষ করা হবে সংস্কার কাজ।
নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থিত ৪টি রেলওয়ে স্টেশন, এর মধ্যে দুটিই মূল শহরে। স্টেশন গুলো নারায়ণগঞ্জ শহর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাকে সেবা প্রদান করে। নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে জংশনটি ছিল ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের বিখ্যাত ও প্রাচীনতম রেলস্টেশন যা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানীতে যাওয়া অন্যতম প্রধান দুটি সড়ক ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন পঞ্চবটী সড়ক। দুটি সড়কের যানবাহন মিলিত হয় নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে। যার ফলে নারায়ণগঞ্জে সব থেকে ব্যস্ততম সড়ক ধরা হয় এই সড়ককে। রাজধানীগামী এই দুই সড়কের মধ্যে রয়েছে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ রেল সংযোগের ক্রোসিং লাইন। এসব ক্রোসিং লাইন বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। দুটি ক্রোসিং লাইনে পর্যাপ্ত গেটম্যান নাই, একই সাথে গেট গুলোতে নেই রেল বেরিয়ার। কোন কোন স্থানে রেল গেইটও নাই। শহরের মধ্যে ২নং রেলগেট ও চাষাঢ়া রেলগেট এলাকায় ৮টি রেলগেট বেরিয়ার আছে। এর মধ্যে ৬টি বেরিয়ার ভাঙ্গা। বিকল্প হিসেবে রশি বা দঁড়ি দিয়ে রাস্তা আটকানো হয়।
এছাড়া শহরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে চাষাঢ়া স্টেশন পর্যন্ত ৬টি সড়ক অতিক্রম করতে হয়। এই ৬টি সড়কের মধ্যে স্টেশন থেকে বের হওয়ার পরই ১নং রেলগেইটে বেরিয়ার ফালানো হয়না একপাশে। সামনে এগোলে উকিলপাড়া এলাকার সড়কে কোন রেলগেইট নাই। গলাচিপা এলাকায় থাকলেও চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় স্থানীরা নিজ উদ্যোগে রেলের বেরিয়ার তৈরী করে গেইটম্যান নিয়োগ দিয়েছেন।
জানতে চাইলে স্থানীয় সাধারণ মানুষ জানায়, গেইটের জায়গায় রশি ব্যবহার করা হয়। এতে যে কোন সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের চোখের সামনে আমরা দেখেছি এই রশি মানছে না। এখানে ওভার ব্রিজ নয়তো একটা সমাধার করা উচিৎ। উকিলপাড়া এলাকায় একটা গেট দরকার। সব সময় যানজট লেগে থাকে, ট্রেন আসলে দাঁড়ায় থাকে। অনেক কুকুরের বাচ্চা মারা গেছে। তাই উকিলপাড়ায় একটা রেলগেইট দরকার।
গেইটম্যানরা জানায়, ২নং রেলগেইট ৪টার মধ্যে ৩টা গেট ভাঙ্গা। রাস্তাঘাটে প্রচুর জ্যাম। রসি দিয়ে আমরা পাবলিক থামাতে পারিনা। মিস্ত্রি এনে ঠিক করা হয়, কিন্তু আবার নষ্ট হয়ে যায়। অটো রিক্সা, কাভার্ড ভ্যান আমাদের বেশী ক্ষতি করে। ৩-৪ মাস যাবত নষ্ট। গেইট গুলোর পাশে অবৈধ অটো স্ট্যান্ড আছে সেগুলো আমাদের কথা মানে না। আমাদের সাথে রাফ ব্যবহার করে। চাষাঢ়া বালুর মাঠ ক্রসিং এলাকায় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা রিস্ক নিয়ে যাতায়ত করে। তাই এলাকার মানুষ নিজ উদ্যোগে গেট করে দুইজন নিয়োগ দেয়। আমরা চাই সরকারিভাবে এখানে গেইটের ব্যবস্থা করা হোক। চাষাঢ়া স্টেশনের চারটা গেটের ৩টাই নষ্ট, আমরা কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে তারা ব্যবস্থা নেয়নাই। আমরা চাই দ্রুত এটার সমাধান করা হোক।
নারায়ণগঞ্জ স্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম খান বলেন, রেল গেইটের বেরিয়ার গুলো অকেজ ছিলো। এগুলো ঠিক করার জন্য মিস্ত্রিকে বলা হয়েছে। দ্রুত সমাধান করা হবে।