বিমান ছিনতাইয়ে গিয়ে সোনারগাঁয়ের পলাশ নিহত, মুখ খুললেন নায়িকা সিমলা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ভালোবেসে প্রেমিক-প্রেমিকার অবাক করার মতো বহু ঘটনা সংবাদের শিরোনাম হলেও প্রেমিকাকে পেতে প্রেমিকের বিমান ছিনতাইচেষ্টা এবং অকালে জীবনের মায়াত্যাগ, এমন ঘটনা এই দেশে আগে কখনো ঘটেনি। যেমনটা ঘটেছিল ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’তে। এদিন ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিজি-১৪৭ উড্ডয়নের পর ‘ম্যাডাম ফুলি’-খ্যাত নায়িকা সিমলার স্বামী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ছেলে পলাশ আহমেদ বোমাসদৃশ বস্তু ও অস্ত্র দেখিয়ে বিমানটি ‘ছিনতাইয়ের’ চেষ্টা করেন। উড়োজাহাজ ছিনতাই করতে গিয়ে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পলাশ।
নিহত পলাশ আহমেদ নারায়নগঞ্জের সোনারগাও উপজেলার দুধঘাটা এলাকার পিয়ার জাহান সরদারের ছেলে। এরপর পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজ ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি ছিনতাই চেষ্টার অবসান হয়। কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ মাহমুদ পলাশ নিহত হন। এর আগে উড়োজাহাজটি থেকে যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় বিমানবন্দর এলাকায় ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। এ ঘটনায় সাতটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাত ১০টার দিকে বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়।
এ ঘটনায় অভিনেত্রী সিমলাকে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যেখানে অভিনেত্রী জানান, বিয়ের পর মনে হয়েছিল পলাশের মানসিক সমস্যা আছে। তাই ডিভোর্স দিই। তবে কেন বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করতে গেছেন, সেটা বলতে পারছি না। বিমান ছিনতাইয়ের সেই ঘটনা টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছিল সে সময়ে। উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাইচেষ্টা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন তদন্ত শেষে আদালতে জমা দেয় পুলিশ। তদন্তে মোট ৭৯ জনের সাক্ষ্য ও বিভিন্ন আলামত পরীক্ষার পর জানা গেছে, সাবেক স্ত্রী চিত্রনায়িকা শামসুন নাহার সিমলা ডিভোর্স দেয়ার পরই হতাশা থেকে বিমান ‘ছিনতাইয়ের’ নাটক করেন পলাশ।
এরপর সময় গড়িয়েছে, সিমলাও তার ব্যক্তিগত জীবনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই ঘটনা নিয়ে আবারও কথা বলতে দেখা গেল ‘ম্যাডাম ফুলি’ খ্যাত এই অভিনেত্রীকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই ঘটনা নিয়ে আবারও কথা বলেছেন সিমলা। অভিনেত্রী বলেন, পৃথিবীতে ভালোবাসার জন্য এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা বলতে পারি না। তবে আমি বিষয়টি নিয়ে গর্ব করছি না। কারণ এটি আমার জন্য কষ্টের। আমি চাই না কখনও আমার জন্য কেউ এসব করুক। বেঁচে থাকতে আর কখনোও এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে চাই না। আমাকে ভালোবাসলে একটা ফুলই যথেষ্ট।
বয়স চল্লিশের গণ্ডি পেরুলেও এখনও সিনেমায় ফিরতে চান সিমলা। জানালেন, যেকোনো চরিত্র পেলেই অভিনয় করবেন। সেটা নায়িকা হোক কিংবা পার্শ্বচরিত্র, আপত্তি নেই।