শুক্রবার, নভেম্বর ২৯, ২০২৪
Led03আদালত

সাব্বির হত্যা মামলা: রায় ঘোষণা ৭ জানুয়ারি

# জাকির খানের উত্থানে ঈর্ষান্বিত হয়ে তৈমুর ফাঁসিয়েছেন : আইনজীবী রবিউল হোসেন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আলোচিত সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় আদালতে যুক্তিতর্ক পর্ব শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মমিনুল ইসলামের আদালতে তৃতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এ দিন বাদী পক্ষ ও আসামি পক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। তবে নিরাপত্তা জনিত কারণে আসামি জাকির খানকে আদালতে আনা হয়নি।

কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান লাইভ নারায়ণগঞ্জকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলার যুক্তিতর্ক পর্ব শেষ হয়েছে। আগামী ৭ জানুয়ারি এই মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

এইদিকে, জাকির খাঁনের মুক্তির দাবিতে শহরে মিছিল করেছেন তার সমর্থক ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. রবিউল হোসেন বলেন, সাব্বির হত্যা মামলায় দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়েছে। এই সাব্বির হত্যা মামলায় বাদী (তৈমুর আলম খন্দকার) যেমন একজন হেভিওয়েট খেলোয়াড়, ঠিক তেমনি আসামিও (জাকির খান) একজন হেভিওয়েট ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। জাকির খান জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি একবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই ছাত্রনেতার উত্থানে ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে তৈমুর আলম খন্দকার তার ভাইয়ের হত্যার মামলা ও বিচারকে পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে বিরাট এক ইতিহাস লিখে আদালতে জমা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সে ইতিহাসের পরদে পরদে ছিল মিথ্যা, ভুল ও বিভ্রান্তি ছিল। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আততায়ীদের হাতে তার ভাই নিহত হয়েছে। সেখানে সন্দিহান হিসেবে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন, তার শ্যালক, জাকির খান ও তার গ্রুপ সহ সকল বিএনপির লোকজনদের তঠস্থ রাখার জন্য আসামি করেছেন।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর আগের এই মামলায় তিনি ১২ বছর কিছ্ইু করেনি। মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়ার পর তিনি নারাজি দিয়ে একটা শুনানি করেন। ৩৪ বার শুনানি না করার কারণে সেটা বাতিল হয়ে গেছে। তারপর একটা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট হয়েছে। ২০১২ সালে এই মামলার বিচার কার্যক্রম সাক্ষী পর্যায়ে শুরু হয়েছে। তবে মামলার আসামি জাকির খান চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি বিদেশে ছিলেন। এ কারণে এই মামলায় তিনি আসতে পারেনি। এর মধ্যে অন্য মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়, তবে গ্রেফতারও তারা করিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার । এ হত্যাকান্ডের পর তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব এবং নিহতের বড় ভাই তৈমুর আলম খন্দকার বাদী হয়ে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নামে ফতল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মোট ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তিতে সিআইডির এএসপি মসিহউদ্দিন দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ প্রায় ৩৪ মাস তদন্ত শেষে তিনি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারী আদালতে ৮ জনকে আসামি করে চার্জশীট দাখিল করেন। এতে মামলা থেকে সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, তার শ্যালক জুয়েল, শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ মোট ৮ জনকে আসামি উল্লেখ করা হয়।

এ চার্জশিটে মামলার প্রধান আসামি গিয়াস উদ্দিনকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ায় মামলার বাদী তৈমুর আলম খন্দকার চার্জশিটের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। নারাজি পিটিশনে তৈমূর আলম বলেছিলেন, ‘গিয়াসউদ্দিনই সাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক। গিয়াসউদ্দিন ও তার সহযোগীদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা একটি গোঁজামিলের চার্জশিট দাখিল করেছেন।’এরপর থেকে ৫ বছরের অধিক সময় ধরে নারায়ণগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট) মামলার শুনানি চলে আসছিল। গত ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে তৈমুর আলম খন্দকার আদালতে দাখিলকৃত না রাজি পিটিশনটি আবেদন করে প্রত্যাহার করে নেন। নারাজি পিটিশন প্রত্যাহারের কারণে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন এখন আর মামলায় অভিযুক্ত নেই। ফলে সিআইডি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে যে ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন তার উপর ভিত্তি করেই মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে।

RSS
Follow by Email