যেই ক্ষমতা যায়, তাকে ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসে: গিয়াসউদ্দিন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘এই সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষ জানে ওই গডফাদারের শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যারা কোনদিন রাজনীতি করেনি তারা কতটা দাপট চালিয়েছে। সমাজকল্যাণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তারা দখল করে নিয়ে গেছিলো। শিক্ষা নেই, যোগ্যতা নেই, নির্লজ্জ বেহায়ার মত ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তারা এগুলো দখল করেছে। সাইলো গেটের ভাঙচুরা তারা করেছিলো। লজ্জায় আমাদের মাথা হেট হয়ে গেছে। জীবনে কখনো রাজনীতি করেনি, কিন্তু সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করেছে। আর আমাদের নেতা কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।’
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সিদ্ধিরগঞ্জে রেবতি মোহন পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে এক জনসভার আয়োজন করে ৫নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন। সন্ত্রাস,মাদক, চাঁদাবাজ, লুটপাট, নৈরাজ্য ও অপকর্মের প্রতিবাদে এই জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গিয়াসউদ্দিন। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম এবং সঞ্চলনায় ছিলেন ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জিল্লুর রহমান।
এসময় তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা যে যুদ্ধের মধ্যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেখানে আমরা এক স্বৈরাচারী সরকারকে হটিয়ে চূড়ান্ত বিজয় লাভ করেছি। একইভাবে ২০২৪ সালে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আমরা চূড়ান্ত বিজয় লাভ করেছি। এই নতুন স্বাধীন দেশে জনগণের নতুন কিছু প্রত্যাশা রয়েছে। বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার সরকার জনগণের কাছ থেকে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ভোট বিহীন নির্বাচনে নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করে তারা ক্ষমতা দখল করেছিল। ৫ই আগস্ট এর মাধ্যমে যে নতুন দেশ তৈরি হয়েছে সেখানে জনগণ চায় তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে। স্বৈরাচারকে বিদায় করে আমরা একটা আংশিক সফলতা অর্জন করেছি। এই সফলতার মধ্য দিয়েই আজ বহুদিন পর সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় আমরা একটি জনসভা করতে পারছি। তবে সেই দিনে চূড়ান্ত বিজয় হবে যেইদিন আমরা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবো। এই কারণে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে, কোন ষড়যন্ত্র যাতে এই গণতন্ত্রের ধারাকে অব্যাহত করতে না পারে।
তিনি বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করে দিয়ে যাতে বিজয়ীদের স্বপ্ন ব্যর্থ করতে না পারে সে চেষ্টা করতে হবে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের কোন লোককে কোন কিছু লোভ দেখিয়ে যেন গণতন্ত্র বাস্তবায়নের পথকে যেন সুদ্রিয় করতে না পারে সেই দিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। লক্ষ বাস্তবায়ন পর্যন্ত আন্দোলনে সক্রিয় থাকতে হবে। দেশনায়ক তারেক রহমান সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। স্বৈরাচার সরকার দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। ৫ তারিখের পর তিনি জাতির উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়ে এই ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশকে কিভাবে গড়ে তোলা যায় সেই দিকনির্দেশনাই দিয়েছেন। তিনি বলেছেন মানুষ ও দেশের কল্যাণে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আর যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে বিএনপি সংখ্যা পুরস্কার আসনে বিজয় লাভ করে সরকার গঠন করবে ইনশা আল্লাহ। এই সত্য জানার পরও তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, একজন ব্যক্তি দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেনা। তিনি চাইলে আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকার চেষ্টা করতে পারতেন কিন্তু তুমি আগেই ঘোষণা দিয়েছেন এটা। তারেক রহমান বলেছেন আমরা জাতীয় সরকারের গঠন করতে চাই। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে যে ছোট বা বড় দল আন্দোলন সংগ্রাম করেছে তাদের নিয়েই জাতীয় সরকার গঠন করবো। এমন মহৎ কথা বলার নেতা খুব কমই আছে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, যেই ক্ষমতা যায় তাকে ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসে। এখন তো তারেক রহমানের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ অনেকটা ত্বরান্বিত হয়েছে। কিন্তু সরকারের ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই সে যাতে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে না রাখে, স্বৈরাচার সরকার না হয় এবং জনগণকে সর্বাধিক প্রাধান্য দিতে পারে সেই জন্যই ঘোষণা দিয়েছে। জাতীয় ঐক্য একমাত্র তৈরি হতে পারে একমাত্র একাত্তরের মতো জুতা এবং ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে যারা অঙ্গীকারবদ্ধ তারা। কেউ যদি বিএনপির সাথে জাতীয় ঐক্য গঠন করতে চায়, তাহলে অবশ্যই বিএনপি থাকে স্বাগত জানাবে, আমাদের নেতা অনেক উদার। কিন্তু এর বাড়ি যদি কারো মতলব থাকে, তাহলে মনে রাখতে হবে বিএনপির সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল । এদেশের জনগণ বিএনপিকে সর্বাধিক পছন্দ করে। ভিন্ন কোন মতলবের ষড়যন্ত্রে কাজ করে কোন লাভ হবে না।
জনসভায় বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মোঃ মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম জুয়েল, সহ-সভাপতি আব্দুল আল মামুন, সহ সভাপতি জি.এম. সাদরিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আকবর হোসেন, নারায়ানগঞ্জ জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব মুহাম্মদ কায়সার রিফাত, নারায়াণগঞ্জ জেলা তরুণ দল টি এইচ তোফা।
আরও উপস্থিত ছিলেন, ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ রওশন আলী চেয়ারম্যান, ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভপতি মোঃ তৈয়ব হোসেন, ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন, ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মোঃ মোস্তফা, ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মো. দিদার আলম, ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি জি.এইচ. বাবুল, ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি এ্যড. মাসুদুজামান মন্টু, ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ আনিস শিকদার।