বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
Led02অর্থনীতি

না.গঞ্জের ডিম বিক্রি হচ্ছে না সরকারের নির্ধারিত দামে, হতাশ ক্রেতারা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের বাজারে আজ ডিম সরকারের নির্ধারিত দামে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। এর আগে ডিম উৎপাদক এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। বৈঠক শেষে জানানো হয় বুধবার (আজ) থেকে উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা। খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সায় ডিম বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে হিসেবে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ডজন কিনতে খরচ হবে ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। তবে নগরীর বাজাগুলোতে সরেজমিনে মেলেনি এমন কোন তথ্য। তবে আগামী ১-২ দিনে মধ্যে কমতে পারে বলে জানায় ডিম বিক্রেতারা।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) নগরীর দিগুবাবুর বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতি পিস মুরগির লাল গিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সায়। সে হিসেবে এক হালি লাল ডিম কিনতে জনসাধারণকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ টাকা। ১১ টাকা ৮৭ পয়সার ডিম কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সায়, শুধু তাই নয় এলাকা ভিত্তিক দোকানে প্রতিপিস ডিম কিনতে হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ ক্রেতারা। এছাড়াও বাজারে দেশি মুরগীর ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা হালি, মুরগীর সাদা ডিম ৫৪ টাকা হালি, সোনালী মুরগীর ডিম হালিতে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, হাসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা হালি এবং কোয়েলের ডিম ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরকারের নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে না পারার কারণ হিসেবে দিগুবাবুর বাজারের ডিম ব্যবসায়ি আক্তার বলেন ‘কম দামে কিনতে পারলে বিক্রিও কমদামে হবে। এখন আমরা যদি কিনি ধরেন ১২ টাকায় তাহলে সেটার লেবার খরচ, আনা নেওয়ার ভাড়া সব নিয়ে ১৪ টাকা বিক্রি করতে হয়। সেটা বুঝাবো কাকে? এই লাল মুরগীর গিম আমরা ১০০ পিস কিনি ১৩৫০ টাকায়। সেই হিসেবে প্রতি পিস ডিমের ডাম পড়ে ১৩.৫০ টাকা। এই ডিম আমি কিভাবে ১১.৮৭ টয়সায় বিক্রি করি।

আরেক ব্যবসায়ী আকবর আলী বলেন, গতকালও ভোক্ত অধিদপ্তরের লোকজন এসে তদারকি করে গেছে। ডিমের মূল্য তালিকা ঝুলানো হয়নি বলে কয়েজনকে জরিমানা করতেসে। আমরা মূল্য তালিকা লাগিয়ে রাখসি। এখন ডিমের দাম কমানো জন্য আমাদের এসে ধরলে তো হবে না, ধরতে হবে ২য় পার্টিকে। ব্যাপারীর থেকে যখন এক পার্টি ডিম কিনে তারা তো মানি রিসিট পায় না। এখন মানি রিসিট নাই বলে ২য় পার্টি সহজে ডিম ছাড়েও না। আমরা কিশোরগঞ্জ থেকে ডিম কিনি, যদি অভিযান চালানোর হয়, যদি জরিমানা করারই হয় তাহলে তাদের করুর। আমি যদি ৯ টাকায় ডিম কিনি সেটা ১০ টাকা বিক্রি করতে আমার কোন সমস্যা না।

বাজারে ডিম কিনতে আসা মাহাবুব আলম বলেন, ব্যবসায়িরা লাভ করতে গিয়ে বিভিন্ন জিনিসের মূ্ল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার কিছুদিন পর নাম মাত্র কিছু মূল্য কমায়। আর যে দামটা কমানো হয় সেটা শুধু খবরের কাগজের হেড লাইনেই থাকে, বাস্তবে সেটার দাম কমে না। আগেও তেল, পেয়াজ, লবন নিয়েও এ ঘটনা হয়েছে। খবরের কাগজে দেখেছি ডিম ১২ টাকায় কিনতে পারবো। কিন্তু এলাকার দোকানে প্রতিপিস ডিমের দাম রাখে ১৪-১৫ টাকা আর বাজারে রাখে ১৩.৭৫ টাকা। ডিম মাঝখানে ১৭ টাকা করেও কিনেছি আমাদের এলাকার দোকার থেকে। যেখানে সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিলো সেখঅনে এতো দিনেও কেন সেই দামে বিক্রি হচ্চে না কেন? কে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। আর শুধু ডিম না মুরগি, সবজী, মাছ, মাংশ সব কিছুর দাম বাড়তেসে। কোনটায় ২ টাকা বাড়ে কোনটায় ১০ টাকা, তবে দাম বাড়তেসে। এখনের সরকার চাইলেই সব কিছু নিয়ন্ত্রন করতে পারে। দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর ও তাদের উচিত ছিলো বাজারে এই দামে বিক্রি হচ্ছে কিনা সেটার খবর নেওয়া। মোবাইল কোর্ট দিয়ে যারা বেশি দাম রাখে তাদের জরিমানা করা।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা ইবনুল ইসলাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আসলে একদিনে তো এই দামটা বাস্তবায়ন করা যাবে না। তবে আমরা কাজ করছি, প্রথমে কিন্তু ডিমের হালি ৬০ টাকা ছিলো, সেখানের আজকের বাজারে সেটা ৫৫ টাকায় নেমে এসেছে। এভাবেই খুবই তারাতাড়ি আমরা ডিমরে দামটা সরকারের নির্ধারিত মূল্যে নিয়ে আসতে পারবো। এছাড়াও ঢাকার মতো নারায়ণগঞ্জেও ওপেন মার্কেট সেলের ব্যবস্থা করার চিন্তা করছে আমাদের মহাপরিচালক। ওপেন মাকেট সেল আসলে শুধু ডিম নয় শাক-সবজীও কম মূল্যে বিক্রি করা হবে। আমরা সরাসরি কৃষকদের থেকে কিনে ওপেন মার্কেটে বিক্রি করবো তাতে পন্যের দাম ও অনেক কম পরবে।

RSS
Follow by Email