না.গঞ্জে বাপা’র মানববন্ধনে বক্তারা ‘শীতলক্ষ্যা নদী আমরা নিজ হাতে ধ্বংস করছি’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিশ্ব নদী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে মানববন্ধন করেছে সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সারে ১০টায় শহরের বন্দর ১নং খেয়া ঘাটে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জেলা বাপার সভাপতি এডভোকেট এবি সিদ্দিক। বাপার নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, বাপার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন আহমেদ, নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দিপু, বাপা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, আমারা নারায়নগঞ্জবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন মন্টু, নারায়ণগঞ্জ সিপিবি’র সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা কমিটির আহবায়ক মুস্তফা করিম, সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের শরিফুল ইসলাম, পরিবেশ কর্মী তারেক বাবু, শফিকুল ইসলাম।
মানববন্ধনে এবি সিদ্দিক বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকার বর্জ্য কম নয়। এত মানুষের বর্জ্য এই ড্রেনে করে এই শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলা হয়। সাবেক মেয়র (আইভী) বলেছিলেন তিনি ড্রেন গুলো একত্রিত করে তিনটি ইটিপি বসাবেন। কিন্তু তিনি সেই সুযোগটা হয়তো পান নাই। বর্তমানে আমাদের যে প্রশাসক আছে, আমরা আশা করি তার কাছ থেকে আমরা সাহায্য পাবো। আমাদের প্রতিবেশি ভারত শত শত বাধ তৈরি করে আমাদের দেশের নদীগুলোকে আবদ্ধ করে রেখেছে। এই শীতলক্ষ্যার জন্য আমাদের নিজ উদ্যোগে কাজ করতে হবে। এই কাজে আমাদের সবাইকে এগিতে আসতে হবে।
রফিউর রাব্বি বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের মাছাপিছু আয়ের পরিমান অনেক জেলার তুলনায় বেশি। বিশ্বের মধ্যে বায়ু দুষনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ অনেকবার এক নাম্বার হয়েছে। দেশ বিক্রি করে, পরিবেশ বিক্রি করে, ধ্বংস করে আমরা আয় করছি। এই শীতলক্ষ্যা নদীর পাশে চার’শত ডাইং ফ্যাক্টরি রয়েছে। আবার আমাদের সিটি এলাকার যে আবাসিক বর্জ্যগুলো রয়েছে, সেটিও অপরিশোধিত ভাবে এই শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলা হয়। আমরা নিজ হাতে এই নদীটিকে ধ্বংস করেছি। আমরা যার উপর নির্ভর করে একটি জাতিগোষ্ঠী তৈরি করেছি সেই নদীটিকে আমরা কিভাবে ধ্বংস করছি। হাই কোর্ট থেকে নির্দেশনা এসেছে যে, নদীর পাড় দখল করা যাবে না। এটি এখনো কার্যকর হচ্ছে না। কারণ নদী দখল যারা করতে পারে, এদের সাথে প্রশাসনের হাত থাকে। এখন আমরা আশা করছি বর্তমান সরকার ভালো কিছু একটি করবে।
মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, নদী বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশে মোট ১২৬টি নদীর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে। এরমধ্যে আন্তঃদেশীয় ৫৭টির মধ্যে ৫৪টি ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আমাদের প্রতিবেশি দেশ এসব নদীতে বাধ দিয়ে প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করেছে। দখল এবং দূষণের কারণে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নৌপথ ধংস হয়ে যাচ্ছে।