শহীদ ছাত্রদের মাগফেরাত কামনায় বন্দরে জামায়াতে ইসলামীর দোয়া
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের মাগফেরাত কামনায় ও আহতদের সুস্থ্যতা কামনায় আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বন্দর ত্রিবেনী মিনাবাড়ি এলাকার শামসুজ্জোহা মুছাপুর বন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মুছাপুর ইউনিয়ন শাখার আয়োজনে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী মুছাপুর ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলার কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল মজিদ। প্রধান বক্তা ও দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরের কর্মপরিষদ সদস্য তালিমুল কোরআন ফাউন্ডেশনের প্যানেল উস্তাজ, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক মুগরাপাড়া শাখার ম্যানেজার মাওলানা মো. সাইদ উদ্দিন মনির।
বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী মুছাপুর ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলসহ বিরোধী দল গুলো যে আন্দোলন করেছে, তার সুফল আমরা পাইনি। অধিকার আদায়ে লড়াই করেছি, নির্বাচনের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আমাদের নেতাদের যেভাবে গুম, খুন ও হত্যা চালিয়েছে সেগুলো আপনাদের অজানা নয়। বন্দরের সর্বপ্রথম আমাকে গ্রেপ্তার করেছিলো ২০০৯ সালে। আমাকে ইফতার করার সময় দেয় নাই। আমাকে নিয়ে অচ্যাতার জুলুম করেছে। তখন ১ লাখ টাকা দিয়ে আমি বের হয়ে আসি থানা থেকে। এরপরও কিন্তু আমাদের গ্রেপ্তার করেছে, অসংখ্য মামলা হামলার শিকার হয়েছি। সামসুজোহা স্কুলে আমরা আজ প্রোগ্রাম করতে পারবো এটা কল্পনাও করতে পারতাম না। সাবেক এমপি সেলিম ওসমান যেভাবে এই জায়গা দখল করেছে। মনে হয়না এটা একটা স্কুল ছিলো। এই স্কুল ছিলো আমাদের, এটাকে রাজনৈতিক আখড়া বানিয়ে ফেলছিলো। আমরা ঘরে থাকতে পারতাম না, রাতে ঘুমাতে পারতাম না। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে আমাদের নেতাদের। কিন্তু এই কষ্টকে আমরা পেরিয়ে এসেছি। আর সেটা ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। ছাত্রদের মাধ্যমে কিভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে উৎক্ষাত করা যায় সেটা আল্লাহ আমাদের দেখিয়েছে। অধিকার আদায় করতে গিয়ে এই দেশের ছাত্র জনতা ও জনসাধারণ রাজাকার হয়ে গেছে। রাজাকার আমাদের অহংকার, রাজাকার বলে গালি দিয়ে এটা আমাদের জন্য দোয়া। ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম করা ফরজ, এই ফরজ কাজে আমাদের সকলকে শরীক হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশকে ইসলামিক রাষ্ট্রতে কায়েম করতে চেয়েছিলো আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদী। তার জন্য তাকে জেলে যেতে হয়েছে, আমরা তার স্বপ্ন বৃথা যেতে দিবোনা। এই দেশ যতদিন পর্যন্ত ইসলামিক রাষ্ট্র না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যহত থাকবে। আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদী আমাদের জীবন দিয়ে পথ দেখিয়ে দিয়ে গেছে যে, তোমরা এই দেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েক না করা পর্যন্ত পথ ছাড়বে না। তার মিশন ছিলো এই দেশ ইসলামি রাষ্ট্র হোক। আমরা মরতে রাজি আছি কিন্তু পিছনে হাটতে রাজি না। এই সরকারের কাছে আমাদের দাবি আমাদের সকল আলেমদের মুক্তি দিতে হবে, সকল মামলা থেকে নিষ্পত্তি দিতে হবে। এবং যারা এই কাজ গুলো করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
প্রধান অতিথি মাওলানা আব্দুল মজিদ বলেন, এই বিজয় আমাদের শেষ না। এখনো অনেক পথ বাকি বিজয়ের। আল্লাহ মুমিদের দীর্ঘদিন কষ্টকঠিন্যর মধ্যে রাখে না। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিকা কর্মী নেতা হওয়ার যোগ্যতা রাখে। আগে ঘরে থাকতে পারতাম না, এখন বাহিরে থাকতে পারিনা। আমাদের দেশ বিদেশের ষড়যন্ত্রকারীরা খুঁজছে। গানের একটা কথা আছে, ‘সময় গেলে সাধন হবে না। গাছ যদিও হয় বিজের জোড়ে, কিন্তু ফল ধরে না। এখন সময় যা করার তাই করে ফেলতে হবে, কি করতে হবে সেটা আপনাদের জানা আছে। আজকে আল্লাহ যা দিয়েছে তা কঠিন ত্যাগের বিনিময়ে দিয়েছে। আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ হতে হবে। আজকে বিএনপি আপনার বন্ধু, আওয়ামী লীগ শত্রু। আমাদের এক সমন্বয়ক বলেছিলো সামনে আমাদের আরেকটা বিপ্লব রয়েছে। সামনে আওয়ামী লীগ বিএনপির চেয়ে ভালো বন্ধু হবেনা জামায়াতে ইসলামী মোকাবিলায়। জামায়াতে ইসলামী মোকাবিলা করতে আওয়ামী লীগ বিএনপি চরম শক্তি নিয়ে আঘাত করবে। ওই মোকাবিলার পর আপনার চূড়ান্ত বিজয় অপেক্ষা করছে। এই জন্য সবাইকে হুকুময়াতের শপথ নিতে হবে।
এ সময় মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।