কর্মব্যস্ত নগরী: গতি ফিরছে জনজীবনে
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি পেরিয়ে নগরীতে স্বস্তি ফিরে আসছে জনেমনে। বিভিন্ন শ্রেণীপেশা মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ছে। সরকারি, বেসরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংক ও বাণিজ্যপাড়ায় পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। যার দরুণ কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে নগরবাসী।
গত ৫ জুলাই শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশে সংস্কারের দাবিতে কর্মবিরতিতে যান পুলিশ সদস্যরা। সারা দেশ সহ নারায়ণগঞ্জে মাঠ পর্যায় থেকে সরে আসেন পুলিশ সদস্যরা। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সব সরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬ জুলাই থেকে খোলার নির্দেশ দেয়। এর প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খোলা হয়। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে পুলিশ সদস্যরা না থাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল কম দেখা যায়। এসময় জনগনের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। সেই সাথে সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন, এলাকায় এলাকায় পাহারার কাজে এগিয়ে আসে ছাত্র জনতা। পরবর্তীতে ১১ জুলাই জেলার বিভিন্ন থানায় কার্যক্রম ধীরে ধীরে শুরু হয়। ১৩ জুলাই থেকে সীমিত পরিসরে সকল থানায় পুলিশি কার্যক্রম শুরু হয়। সেই সাথে ট্রাফিকের দায়িত্বে নামের পুলিশ কর্মকর্তারা। এরই সাথে চালু করা হয় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে কমিউটার ট্রেন চলাচল। ফলে কাজের উদ্দেশ্যে বেরুতে শুরু করে সাধারণ মানুষ। অলিগোলিতে দোকানপাট খোলা, সড়কের পাশে পণ্য নিয়ে বসতে শুরু করেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ধীরে ধীরে নগরীতে জন জীবনে কর্মব্যস্ততা ফিরে আসতে শুরু করে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) নগরীর চাষাড়া, ২নং রেল গেট এলাকায় দেখা যায়, ট্রাফিকের দায়িত্বে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সড়কে রিকশা, মিশুক, প্রাইভেট কার, ছোট ট্রাকসহ বিভিন্ন যানের ভিড় জমেছে। আশেপাশের মার্কেটগুলোতে ব্যবসায়ীরা দোকান খুলেছেন, ফুটপাথে ক্ষুদ্রব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বসেছেন। এগুলোতে ভিড় জমছে ক্রেতাদের।
পরিস্থিতি আগের চাইতে স্বাভাবিক হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম জানান, ৬ আগস্ট থেকেই নারায়ণগঞ্জে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলেছে। এদিন থেকে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হয়। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে সেসময় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কম ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি আগের চাইতে স্বাভাবিক হয়েছে। অভিভাবকরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ধীরে ধীরে বাড়ছে।
ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের চাপ বাড়ছে। ঢাকা ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার কামাল উদ্দিন সরদার জানান, বর্তমানে পুরোদমে ব্যাংকগুলোতে কর্মকর্তারা কাজ করছেন। সকাল ১০টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত লেনদেন করছেন গ্রাহকরা। আগের তুলনায় গ্রাহকদের চাপ বেড়েছে। সব কিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে।