কতিপয় গোষ্ঠী ছাত্র-জনতার অর্জনকে বিসর্জন দেবার চেষ্টা করছে: গণসংহতি আন্দোলন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন ও নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সারাদেশের মত নারায়ণগঞ্জেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা চলছে। কতিপয় গোষ্ঠী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অর্জনকে বিসর্জন দেবার চেষ্টা করছে। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের ঘরবাড়ি, ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে হামলা, অগ্নিসংযোগ কিংবা লুটপাট করছে, নারায়ণগঞ্জে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীকে আহ্বান জানাই, এদের প্রতিহত করুন।
শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তারা।
এসময় নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, দীর্ঘ ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটিয়েছে। গত ৫ জুলাই স্বৈরাচার হাসিনা তার দোসরদের সাথে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। বাংলাদেশ দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেয়ে মুক্ত ও স্বাধীন হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই রক্ত জল করা সংগ্রামকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কিছু স্বার্থান্বেসী চক্র পুরো দেশজুড়ে সক্রিয় হয়েছে। তারা পুরো দেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। উপাসনালয়গুলোতে হামলা করছে, মূর্তি ভাঙ্গচুর করছে, লুটতরাজ চালাচ্ছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জসহ পুরো দেশে একটা ডাকাত আতংক ছড়িয়ে দিয়েছে। মানুষ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষকে সাধুবাদ জানাই। নানান জায়গায় ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। মানুষ শান্তিতে রাতে ঘুমাতে পারছে না। মধ্য রাতে এলাকা এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। এগুলো কোনভাবেই কাম্য নয়। এর জন্য আবু সাঈদ, জুলফিকার শাকিলরা জীবন দেয়নি।
নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে একাজগুলো সংগঠিত করা আরও বেশি সহজ হয়ে পড়েছে। গত ৫ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ অনুপস্থিত। স্বৈরাচার হাসিনা পুলিশকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে তাদের বিপদে ফেলে গেছে৷ তাদের নৈতিকতা নষ্ট করে দিয়েছে। এখন তারা ১১ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। কর্মস্থলে যোগ দেয় নি। অতিদ্রুত তাদের কর্মস্থলে ফিরিয়ে আনার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। প্রশাসনকে মাঠে সক্রিয় করা। আমরা খবর পাচ্ছি, এই অবস্থায় অনেক সাধারণ মানুষ দেশ ত্যাগ করতে চেষ্টা করছে। তারা ভয় পাচ্ছে। এটা কোন স্বাধীন দেশের চিত্র হতে পারেনা। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐক্যতা ধরে রাখার জন্য আহ্বান জানাই। সাথেসাথে ঐসব সুযোগসন্ধানী হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ছাত্রদের লাশের উপর দিয়ে গড়া নতুন বাংলাদেশ এখন আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ এবং সংহত।দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। শিক্ষার্থীরা কিন্তু এখনও রাজপথ ছেড়ে যায়নি। আমাদের নারায়ণগঞ্জ সম্প্রীতির নারায়ণগঞ্জ। ঐক্যতার নারায়ণগঞ্জ। এই নারায়ণগঞ্জে কোনভাবেই অরাজকদের স্থান হবে না। আমরা সকলকে সুসংগঠিত হবার আহ্বান জানাই।