শীঘ্রই ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির কর্মসূচি’, না.গঞ্জ বিএনপির চ্যালেঞ্জ ‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে ধারবাহিক আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে, বর্তমানে অনেকটাই নিরব অবস্থানে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ গত ২৩ মে দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়ার আয়োজন করেছে জেলা ও মহানগর বিএনপির পাশাপাশি অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। যাতে জেলার বহু নেতাকর্মী মামলা মাথায় নিয়েই উপস্থিত হয়েছেন। তবে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জটি এখনো বাকি।
জানা গেছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শীঘ্রই কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। বুধবার এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে। তবে কী ধরণের কর্মসূচি দেওয়া হবে তা এখনও জানানো হয়নি। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই লক্ষে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তথ্য মতে, বিগত দিনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি সব কয়টি অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। যাতে বহু মামলার আসামী হতে হয়েছে এই অঞ্চলের শীর্ষ থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। তবে, এসকল কর্মসূচি পালনকালেই লক্ষ্য করা গেছে বেশ কয়েকজন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের মধ্যকার বিভেদ। মাঝে মাঝে সেই বিভেদ রূপ নিয়েছে সংঘর্ষেও। এছাড়া শীর্ষ নেতাদের মতপার্থক্যের কারণে একই কর্মসূচি আলাদা ভাবে পালন করতেও দেখা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কয়টি আন্দোলন-সংগ্রাম সফলতার মুখ দেখেছে, সব কয়টির পেছনে ছিলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। কেননা একটি দাবি আদায়ের জন্য, পৃথক আন্দোলনের কোন ফল নেই। এক্ষেত্রে কর্মসূচি পালন হবে, কিন্তু দাবি আদায় হবে না।
তাই প্রশ্ন উঠছে, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি কতটা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলতে পারবে?
এদিকে, বিএনপিতে বহিরাগত এবং অসৎ লোকও আছে উল্লেখ করে এক অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে তারেক রহমানের সাথে কথা বলছিলাম। আমি তাকে বলেছি, আপনি যখন আগামীতে এই দেশের দায়িত্বে আসবেন, তখন এই দেশে পরিচালনা করবেন কাদেরকে নিয়ে, চোর-চোট্টা, বাটপারদের নিয়ে? তাদেরকে নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে, জনগনের জন্য কিচ্ছু করতে পারবেন না। তাই আমি আপনাদের সবাইকে আহ্বান করবো, আসেন আমরা ভালো নেতৃত্ব তৈরি করি। চোরেরা যাতে তারেক রহমানের কাছে যেতে না পারে। আমরা ওই চোরদেরকে তারেক রহমানের কাছ থেকে দুরে রাখবো।’
অভিজ্ঞ এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের এই বক্তব্যে অনেকটাই পরিস্কার যে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে দুটি অংশ রয়েছে। তবে, বিভক্ত এই দুই অংশের প্রভাব কী আন্দোলন-সংগ্রামের উপর পরবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান লাইভ নারায়ণগঞ্জের এই প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমান সরকার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মেরে ফেলার চক্রান্ত করছে। এরই ধারাবাহীকতায় সরকার তাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে দিচ্ছে না। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের জন্য বিএনপিও প্রস্তুত, জনগনও প্রস্তুত।
তিনি বলেন, মানুষে মানুষে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তবে, দলীয় স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। ব্যক্তি স্বার্থ থেকে, দলীয় স্বার্থটাই আমাদের আগে দেখা উচিত। আশা করি আমাদের নেতাকর্মীরাও এই বষয়টা ধারণ করে।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ কান টিপু লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘আমরা যে কোন সময়, যদি আজকে থেকে আন্দোলন শুরু হয় তাহলে আজকে থেকেই আমরা প্রস্তুত। আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক তারেক রহমানের ডাকে সব আন্দোলনের জন্যই মহানগর বিএনপি প্রস্তুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মাঝে ঐক্যের কোন ঘাটতি নেই, নেতায়-নেতায় মতপার্থক্য থাকতে পারে; তবে, আমরা ঐক্যবদ্ধ।’