শামীম ওসমান পথভ্রষ্ট মাসুমকে পিটানোর প্রতিবাদ করায় গুলিবর্ষণ হয়েছিল: চন্দন শীল
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল বলেছেন, তোলারাম কলেজের বেশ কিছু স্মৃতি আজও হৃদয়ে নাড়া দেয়। ১৯৮১ সালের দিকের কথা। সেই সময়ে তোলারাম কলেজে ছাত্রলীগের ঘাটি ছিল। আমরা শিক্ষার্থীরা চাচ্ছিলাম শামীম ওসমানকে ভিপি করা হোক। আবু হাসনাত শহীদ বাদল, খোকন সাহা সহ অনেকেই ছিলাম তখন। আমরাও ইলেকশন করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা বলেছি শামীম ওসমানকেই ভিপি হিসেবে দেখতে চাই। এরপর নানা ষঢ়যন্ত্র হলো, বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে নির্বাচন হলো। শামীম ওসমান ভিপি হলেন। এর কিছু দিনপর রাজাকার শাহাবুদ্দিন কলেজে আসার কথা। আমরা শামীম ওসমানের নেতৃত্বে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তোলারাম কলেজে কোন রাজাকারের পদচিহ্ন পড়বে না। আমরা পোস্তগলায় প্রতিরোধ গড়ে তুলি। আমাদের স্লোগান ছিল জিয়ার কাধে আজব চিজ, রাজাকার শাহাবুদ্দিন ফিরে যাও। উনি ফিরে গিয়েছিলেন। তারই প্রতিশোধ হিসেবে ঐবছর ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার সময় ১৪৪ ধারা জারি করে পরীক্ষার্থীদের উপর লাঠি চার্জ, কাদুনে গ্যাস, গুলি ছুড়েছিল। কলেজেরর এই ২য় তলায় আব্দুল আউয়াল নামে ছেলেকে গুলি করা হয়েছিল। সেদিন মূল টার্গেট ছিল শামীম ওসমান।
মঙ্গলবার (৪ জুন) সরকারী তোলারাম কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিমল চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান রিয়াদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও শামীম ওসমানের সহধর্মিনী সালমা ওসমান লিপি।
আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, শামীম ওসমানের পুত্র ইমতিনান ওসমান অয়ন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে চন্দন শীল বলেন, পথভ্রষ্ট রোভার লিডার মাহবুবুর রহমান মাসুমকে পেটানো হয়েছিল। তারই প্রতিবাদ করেছিলেন শামীম ওসমান। যেকারণে নির্বিচারে গুলি ছোড়া হয়েছিল। আমরা সবাই দৌড়ে পালালাম। কোয়ার্টারের সামনে একটি টেলিফোন পোল ছিল। সেখানে হয়ত এখনও গুলির চিহ্ন লেগে আছে। ১৯৮২ সালে এরশাদ সাহেব সামরিক শাসন জারি করেন। সকল রাজনৈতিক কার্যকালাপ নিষিদ্ধ। শামীম ওসমান বললেন, আমাদের কিছু করতেই হবে। শামীম ওসমানের নেতৃত্বে ১৫ই আগস্ট রক্তদান কর্মসূচী পালিত হয়েছিল। কর্মসূচীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান জানানো হয়েছিল। যা প্রচুর আলোড়ণ সৃষ্টি করেছিল। এমন অনেক স্মৃতি আছে এই কলেজকে নিয়ে।
তিনি আরও বলেন, একটি সুন্দর পরিবেশে আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত হয়ে উঠুক আমরা এটাই চাই। কলেজের শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করে দেশজুড়ে সাড়া ফেলে দেয়। সাইন্স থেকে আমাদের এক মেয়ে দেশে প্রথম হয়েছে। ব্যাপারটা শুনলেই খুব ভালো লাগে। ছাত্রদের পড়াশুনার জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করাই ছিল আমাদের সময়ের লক্ষ। আপনারাও সেই লক্ষকে সামনে রেখেই কাজ করবেন।