‘বড় পর্দায় আমার সিনেমা চলার স্বপ্ন সত্যি হলো’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ‘ছোট থেকে এখানে থিয়েটারের কাজ করেছি। সব সময় একটা স্বপ্ন ছিল বড় পর্দায় আমার সিনেমা কখন আসবে। সেই স্বপ্নটাই এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই সিনেমার শুটিংয়ে কাজ করার সময় খুব আনন্দ এবং উদ্দীপনা কাজ করছিল। তাছাড়া যখন প্রচার-প্রচারণা শুরু হয় তখনও খুব আনন্দ কাজ করেছে। আমার শহরে আমার ছবি চলছে এটা আসলে আমার কাছে বড় বিষয়। আমি নারায়ণগঞ্জের মানুষের থেকে ভালোবাসাই পেয়েছি, এই ভালবাসায় আমার কাছ থেকে সবথেকে বড় পাওয়া।’ দীর্ঘ অভিনয় জীবনের কথা বলতে গিয়ে এমনই আবেগপ্রবন হয়েছেন পটু সিনেমার প্রধান চরিত্রের অন্যতম অভিনেতা শোয়েব মনির।
শুক্রবার (১৭ মে) নগরীর ডিআইটি এলাকায় গুলসান সিনেমা হলে জেলায় প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হয়েছে ‘পটু’। ভিন্ন আঙ্গিকের এ সিনেমা প্রদর্শনিতে দর্শকদের সাথে ছিলো সিনেমার নায়ক, নায়িকা, খলনায়ক ও পরিচালক। দর্শকের উপস্থিতি এবং সিনেমার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলে শোয়েব মনির।
তিনি আরও বলেন, সবাইকে আমন্ত্রণ রইল পটু দেখার। এর ভিতরে অনেকগুলো মেসেজ আছে যেগুলো আমরা চাই সমাজ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হোক। বাংলাদেশের যে শিশু পাচার চক্র আছে তারা যেভাবে একটি শিশুর চোখ, কিডনি বের করে নিয়ে বিক্রি করে বা একটি শিশুকে দিয়ে ভিক্ষা করায় সে বিষয়টা আসলে এখানে আছে। পদ্মার পাড়ে শিশু হারিয়ে যায় কেন? একটি কুসংস্কারের মাঝেও যে কিভাবে অপরাধ চলছে সেটাই এই সিনেমাতে এখানে আছে। বাংলাদেশে যে শিশু পাচার হয়, তাদের নিয়ে চোখ- কিডনী নিয়ে বিক্রি করে ফেলা। আবার তাদের দিয়ে ভিক্ষা করানো এই বিষয়গুলো এই সিনেমায় আছে। একজন রিকশাচালক ও একজন ট্রলার চালক আমাকে বলেছে তারা এই সিনেমা দেখতে যাবে। আসলে আমাদের দেশে যে প্রান্তিক যে মানুষরা আছেন তারা যাখন এইা সিনেমা দেখবে, তারা এটাকে তাদের সিনেমা মনে করবে। সাধারন মানুষ বলবে পটু আমাদের সিনেমা। রাজশাহী খুবই পরিছন্ন একটি শহর। কিন্তু পদ্ধার পাড়ে মানুষদের জীবন কেমন চলে সেটা আমরা জানতাম না। সেখানে কিন্তু বিদ্যুত নেই। শিশুরা অন্যথায় গিয়ে পড়ালেখা করে। এখানে চরের মানুষরা আমাকে তাদের আপন করে নিয়েছে। আমি পাড়ের মানুষদের সাথে প্রায় ২২ দিন ছিলাম। এই ২২ দিন আমার আজীবন মনে থাকবে।
অভিনয় জীবন সম্পর্কে শোয়েব মনির জানায়, ৩০ বছরের এই অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৯৩ সাল থেকে। মঞ্চে মান্নান হীরার আদাব নাটক তার প্রথম অভিনয় ক্ষেত্র। তারপর একে একে তাশের দেশ, ১৯৭১, রক্তকরবী, ঠিকানা, অন্তর্যাত্রা, লখাই, কবর, লালসালু, পূণ্যাহ সহ অসংখ্য মঞ্চ নাটকের দাপটের সাথে অভিনয় করেছেন তিনি। শোয়েব মনির টিভি নাটকেও কাজ করেছেন। একজন রুপবানের গল্প, আশ্রয়, ছেলেটা বেয়াদব ২, হাউজ ফুল,পুতুলের সংসার, বুক পকেটের গল্প, দেয়ালের ওপাশে তুমিতে অভিনয় প্রতিভার সাক্ষর রাখেন, আশফাক নিপুনের কষ্টনীড়, ইমরাউল রাফাতের তিথীর অসুখ, মিজানুর রহমান আরিয়ানের পুনর্মিলনে অভিনয় করে ওটিটি প্লাটফর্মেও অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের নজর কারেন তিনি। সর্বমেশে এবার বড় পর্দায় নিজেকে তুলে ধরেন আহমেদ হুমায়ুনের পটু সিনেমার মাধ্যমে। মুলত, রাজশাহীর দুর্গম এলাকার ক্রাইম, থ্রিলার নির্ভর পটু সিনেমা। এখানে মোড়ল চরিত্রে অভিনয় করেছেন শোয়েব মনির।