দেশ গড়ায় প্রবাসীর উদ্যোগ: সানরাইজের যাত্রা শুরু যেভাবে
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জীবিকার তাগিদে মাতৃভূমি ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান অনেক বাংলাদেশী। সময়ের প্রয়োজনে বহু বছর প্রবাসেই কাটিয়ে দেন। কিন্তু দূর প্রবাসে থেকেও প্রিয় দেশের জন্য কিছু একটা করার প্রেরণা কারও কারও থাকে। দেশকে ভালোবেসে ভালো কিছু করার উদ্যোগ নিয়ে সমাজ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করেন। ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশপ্রেম ফুটিয়ে তুলেন। আড়াইহাজারের প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার আসাদ মোল্লা তেমনই একজন দেশপ্রেমিক। প্রবাসে থেকেও দেশের মাটিতে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার চিন্তা ছিল তার। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। স্বজনদের সহযোগীতায় আড়াইহাজারের নয়নাবাদ বাজারে গড়ে তুলেছেন সানরাইজ কিন্ডারগার্টেন এন্ড স্কুল।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা নিয়ে কথা হয় প্রবাসী আসাদ মোল্লার সাথে। তার সাথে আলাপচারিতায় জানা যায়, কিভাবে সানরাইজের যাত্রা শুরু হলো। দেশের ভালো ভবিষ্যৎ গড়ার ইচ্ছে থেকেই ইঞ্জিনিয়ার আসাদের মনে ভালো ও মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার আকাঙ্খা জাগে। এর জন্য ফুফাত বোন সুমির সাথে পরামর্শ করেন। বোন সুমি ১৫ থেকে ২০ বছর যাবত বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেনের সাথে জড়িত। সেই সাথে যোগাযোগ করেন নয়নাবাদে এলাকার ছোট ভাই মো. গোলাপ হোসাইনের সাথে। দুজনের সাথে কথা বলে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ইঞ্জিনিয়ার আসাদ সিদ্ধান্ত নেন নয়নাবাদ বাজারে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং এর পরিচালনায় থাকবেন মো. গোলাপ হোসাইন। তখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম ঠিক করা হয়নি। কি নাম রাখা যায় সেই লক্ষে ইঞ্জিনিয়ার আসাদ অনেক বন্ধুদের ফোন দেন। সেই সাথে নেট সারফিং করেও নিজে সুন্দর নাম বের করার চেষ্টা করেন। শেষমেষ লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক মো. সোহাগ হোসেন নাম রাখেন ‘সানরাইজ’। এই নামেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম রাখা হয় ‘সানরাইজ কিন্ডারগার্টেন এন্ড স্কুল’। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জন্য যাবতীয় কাজ শুরু হয়। ঘর ভাড়া, শিক্ষক নিয়োগ, পাঠদানে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহসহ নানান প্রস্তুতি শেষে ২০২২-২০২৩ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। এই সেশনে ৯০ জন শিক্ষার্থী যোগ দেয়। অর্থাৎ, ৯০ জন শিক্ষার্থী দিয়ে সানরাইজ কিন্ডারগার্টেন এন্ড স্কুলটির প্রথম সেশন শুরু হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পিছনে বহু মানুষের সহযোগীতা রয়েছে বলে ইঞ্জিনিয়ার আসাদ বলেন, আমি সুমি আপা ও এলাকার ছোট ভাই গোলাপের কাছেও অনেক কৃতজ্ঞ। তারা আমার পাশে ছিলেন বলেই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আমার এই প্রতিষ্ঠানটি সফল করার ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থায় সহযোগিতা করেছেন সোনারগাঁয়ের ডিজাইনার সজীব ভাই। তিনি পেমেন্ট ছাড়াই স্কুলটির পোস্টার-ব্যানার তেরী করে দিয়েছেন। পাশাপাশি জাঙ্গালিয়া গ্রামের সুমন কাকাও বাকিতে ডায়েরি বই দিয়েছেন। এছাড়াও অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা করেছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে ভবিষ্যতের ভাবনা নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার আসাদ বলেন, বর্তমানে ২০২৩-২০২৪ সেশনে ১২০ জন শিক্ষার্থী আছে। ইনশাল্লাহ, আগামীতে আরও অনেক শিক্ষার্থী আসবে এবং মানসম্মত শিক্ষা লাভ করবে। প্রতিবছর স্কুল থেকে শিক্ষা সফর, বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সমাবেশ করা হচ্ছে। নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য সুন্দর ও মনোরোম পরিবেশ গড়ে তোলা হচ্ছে। আমার বিশ্বাস সবার সহযোগীতায় স্কুলটি দেশের মডেল স্কুল হতে পারবে।