বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
Led01স্বাস্থ্য

না.গঞ্জে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা: ৬মাসে শনাক্ত ৫০জন, শুধু জুলাই মাসে আড়াইশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: প্রতিদিনই জ্বর-শরীর ব্যাথা নিয়ে হাসপাতাল ভীর জমাচ্ছে নগরবাসী। আসছে অন্যান্য উপজেলা থেকেও। আশংকা ডেঙ্গুর, ডাক্তারের পরামর্শে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে অধিকাংশ-েই শনাক্ত হচ্ছে। ঢাকার ভয়াবহতা এ জেলায়ও কম না। গত ৬মাসে মাত্র ৫০জন যেখানে শনাক্ত হয়েছিল,সেখানে জেলার সরকারী দুটি হাসপাতে শুধু মাত্র জুলাই মাসেই শনাক্ত হয়েছে ২৫০জনেরও বেশি।

নারায়ণগঞ্জে সরকারী দুই হাসপাতালে পর্যাপ্ত রোগী সেবা দেয়ার ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ যাচ্ছেন রাজধানীতে। এরই মধ্যে আবার সংকট দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিটের। বাঁধ্য হয়ে নগরীর বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ছুঁটছে রোগীরা। তবে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, কিট সমস্যার আপতত সমাধান হয়েছে। সেই সাথে চলতি সপ্তাহে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমতে শুরু করেছে।

যেন বদলে যাচ্ছে হাসপাতালের দৃশ্যপট, এক মাস আগেও হাসপাতাল জুড়ে ছিল সারি সারি খালি বিছানা। বর্তমানে সেই বিছানা ভরে গেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীতে। আছে নারী-শিশু ও পুরুষের পৃথক ওয়ার্ড। রোগীর সাথে পরিবারের লোকজন থাকলেও বার বার সেবক-সেবিকারা সতর্ক করছেন ডেঙ্গু থেকে বাচাঁর জন্য। রোগীর অতিরিক্ত চাপে জরুরী প্রয়োজনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। এমন দৃশ্য নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে সরেজমিন দেখা যায়।

পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে মাত্র ৫০ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও গেলো জুলাই মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ২৫০ জনের বেশি। চলতি সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে ১৬ এবং ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ৩২জন চিকিৎসাধীন আছে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে বসবাসরত এক সাংবাদিক পুত্র ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের শিশু কণ্যা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ঢাকায় চিকিৎসধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হলেও, বর্তমানে ডেঙ্গু আতঙ্কটা এ জেলা জুড়েই বেড়েছে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট সংঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে ব্যহত হচ্ছে সরকারী হাসপাতালের ল্যাব সেবার কার্যক্রম। রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, বাঁধ্য হয়ে সরকারি হাসপাতালের ৫০ টাকা ব্যয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা বেসরকারিতে গিয়ে করতে হচ্ছে ৭০০ টাকায়।

তবে, কিট সঙ্কট ছিল জানিয়ে আপাতত সমাধান হয়েছে বলে দাবি করছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা তত্তধায়ক ডা. মো. আবুল বাসার বলেন, আমাদের খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ডেঙ্গু চিকিৎসা সেবা চলমান আছে। পরীক্ষা থেকে শুরু করে যাবতীয় সমস্ত ব্যবস্থা আছে। চলতি বছরের ১৩ জুন থেকে আমরা ভর্তি শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত ১৭৪জন ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে। আর ক্রিটিকাল অবস্থায় কিছু রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ৩২জন রোগী ডেঙ্গু চিকিৎসা নিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, টেস্টের ক্ষেত্রে আমাদের সিবিসি ও প্লাটিলেট পরীক্ষা প্রতিদিন হচ্ছে। মাঝখানে ডেঙ্গুর কিট সংকট ছিলো কিন্তু এখন আর সেই সমস্যা নেই। এছাড়া অন্যান্য সময়ে যেমন পরিস্কার পরিছন্ন থাকে, তার চেয়ে অধিক পরিচ্ছন্ন রাখা হয় আমাদের হসপিটাল। সকলের উদ্দেশ্যে আমার ম্যাসেজ থাকবে, আপনারা আপনাদের বাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। সবার আগে আপনাদের সচেতন হতে হবে। নয়তো আমরা হসপিটালে জায়গা দিতে পারবো না।

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শেখ ফরহাদ জানান, গত মাসেরর তুলনায় এই মাসে রোগীর সংখ্যা কম। গত মাসে রোগী ছিলো ৬০জন। এ মাসের এখন পর্যন্ত ১৯জন রোগী ভর্তি হয়েছিলো। বর্তমানে সেবা নিচ্ছে ১৬জন। আমার মনে হয় বিগত মাস থেকে মানুষ কিছুটা সচেতন হয়েছে , তাই এই মাসে ডেঙ্গু রোগী অনেকটা কমেছে। আমাদের হসপিটালে কোন ডেঙ্গুর কিট সংকট নেই। আমরা সব সময় প্রস্তুত আছি সেবা দেয়ার জন্য।

RSS
Follow by Email