মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৫
Led01রাজনীতি

ডেভিডের স্মরণ সভায় মাসুদুজ্জামান ‘এমন কী হয়েছিল তাকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করা হয়েছিল’

লাইভ নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ এর উপস্থিতিতে ২৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) হোসিয়ারী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক প্রয়াত মমিন উল্লাহ ডেভিডের ২১তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল। প্রয়াত নেতা মমিন উল্লাহ ডেভিডের ভাগিনা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি সাখাওয়াতুল ইসলাম রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই স্মরণসভায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কর্মী, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ সাধারণ নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি দেখা যায়। মিলনায়তনজুড়ে ছিল শ্রদ্ধা, আবেগ ও স্মৃতিচারণের প্রবল স্রোত।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, “আজ আমি কোনো নির্বাচনী অনুষ্ঠানে আসিনি – এসেছি আমার প্রিয় বন্ধু এবং জাতীয়তাবাদী দলের প্রাণ, মহান নেতা মমিন উল্লাহ ডেভিডের ২১তম শাহাদাৎ বার্ষিকীর স্মরণসভায়। বহু বছর আগে তিনি আমাদের ছেড়ে গেলেও আজও তাঁর স্মৃতি ও আদর্শ আমাদের সবাইকে একত্রিত করে রাখে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক কতটা গভীর হতে পারে, ডেভিড তার জীবনে আমাদের তা শিখিয়ে গেছেন। অনেক সময় ডেভিডসহ আমার অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে কোনো বিষয়ে ভুল–বোঝাবুঝি বা ক্ষণিকের রাগ হলেও তার সেই প্রাণোচ্ছল হাসি আর কাঁধে হাত রেখে আন্তরিকভাবে কথা বলা – এতেই সব অভিমান মুহূর্তে দূর হয়ে যেত। ডেভিডের এই আন্তরিকতা আর মানবিকতা আজও আমাদের হৃদদয়ে অম্লান। গত ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা হারে হারে উপলব্ধি করেছি – নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে মমিন উল্লাহ ডেভিডের মতো একজন দৃঢ়, ত্যাগী ও সংগঠক নেতার কতটা প্রয়োজন ছিল।

মাসুদুজ্জামান বলেন, ডেভিডের মতো সেই ধরনের নেতৃত্ব আজও আমরা অভাব বোধ করি। তিনি এমন নেতা ছিলেন সমস্ত নারায়ণগঞ্জকে যেকোনো সময় ডেকে ঐক্যবদ্ধ করতেন।

তিনি আরও বলেন, এমন কি হয়েছিল, ‘মমিনউল্লাহ ডেভিড’ যাকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করা হয়েছিলো। কোন একটা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিল কিনা সেইটা যদি তদন্ত করে দেখেন, অতিদ্রুত। তাহলে আমরা যারা বিএনপির পরিবার আমরা বুঝতে পারবো, কোন ষড়যন্ত্র হয়েছিল কিনা।

তিনি থাকলে তরুণদের সংগঠিত করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং দলকে সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়ার শক্তি আমরা আরও বেশি পেতাম। আরেকটি কথা না বললেই নয় – আজ এখানে যারা ধানের শীষের পক্ষে কথা বলেছেন, যারা গণতন্ত্র ও দেশের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের আমি আশ্বস্ত করতে চাই: ইনশাআল্লাহ, বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে মমিন উল্লাহ ডেভিডের মতো ত্যাগী নেতাদের মর্যাদা ও সম্মান নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক; অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, আব্দুস সবুর খান সেন্টু, আনোয়ার হোসেন আনু, ফাতেহ মো. রেজা রিপন, নারায়নগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, প্রবীণ বিএনপি নেতা নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক; হাজী নুরুদ্দিন, আলহ্বাজ আতাউর রহমান মুকুল। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য; মনোয়ার হোসেন শোখন, হাজী ফারুক হোসেন, মাহাবুবু উল্লাহ তপন, মো. আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম রিপন, ফারুক আহম্মদ রিপন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু। সাবেক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, বন্দর থানা বিএনপির; সভাপতি শাহেন শাহ্, সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, মহানগর যুবদল সভাপতি মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ, কৃষকদলের সভাপতি এনামুল খন্দকার স্বপন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, মহিলদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।

স্মরণসভায় নেতাকর্মীরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, মমিন উল্লাহ ডেভিড ছিলেন সংগঠনের প্রাণ – একজন কর্মীবান্ধব, দৃঢ়চেতা ও মানবিক নেতা, যিনি খুব অল্প সময়েই নেতাকর্মীদের হৃদয়ের কেন্দ্রে জায়গা করে নিয়েছিলেন। সংকটময় মুহূর্তে তিনি সবসময় কর্মীদের পাশে দাঁড়াতেন এবং রাজনৈতিক হয়রানি ও নানা বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের পক্ষে সাহসিকতার সঙ্গে লড়ে গেছেন। তাঁর কর্মস্পৃহা, মমত্ববোধ, নেতৃত্বগুণ এবং তরুণদের সংগঠিত করার দক্ষতা ছিল অনুপ্রেরণাদায়ক। অনুষ্ঠান শেষে তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশের শান্তি ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দোয়া করা হয়।

RSS
Follow by Email