বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪
Led01ফতুল্লাবন্দরসদরসিদ্ধিরগঞ্জ

মেয়রের অপসারণের পরেও পুরোদমে কাজ করছে এনসিসি কাউন্সিলররা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনেকটাই থমকে যায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম। পরবর্তীতে দুস্কৃতিকারীদের দ্বারা নগর ভবনে আগুন দেওয়া মরার ‘উপর খড়ার ঘা’ হয়ে দাড়ায়। এতে করে আরও বিপাকে পরে সিটির বাসিন্দারা। পরবর্তীতে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম। তবে, এরই মাঝে ঘোষণা আসে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের অপসারনের। মেয়রের স্থানে নিয়োগ দেওয়া হয় প্রশাসক।

জানা গেছে, গত ১৯ আগস্ট সিটি কর্পোরেমনের মেয়র অপসারণের ঘোষণার পরের দিন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম কামরুজ্জামান।

তবে, মেয়র অপসারণ করা হলেও সিদ্ধান্ত হয়নি কাউন্সিলরদের ব্যপারে। তাই তারা তাদের আগের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, আগের চেয়ে বেশি চাপ নিতে হচ্ছে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের।

এমনটাই জানালেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিরা।

এক্ষেত্রে সব ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। আওয়ামী লীগ সমর্থীত হওয়ায় অনেকেই রয়েছেন আড়ালে আবার অনেকে চলেগেছেন আত্মগোপনে। তবে, কাজ চলছে পুরোদমে। যেসকল ওয়ার্ডে কাউন্সিলররা প্রতিদিন আসছেন না, সেই সকল ওয়ার্ডের সচিবরা সেবা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এই বিষয়ে লাইভ নারায়ণগঞ্জের এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সচিবদের সথে।

২নং ওয়ার্ড সচিব তানভীর হাসান তুহিন বলেন, আমাদের ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সব রকমের সেবাই পাচ্ছে। আমাদের কাউন্সিলর সাহেবও প্রতিদিনই তার কার্যালয়ে বসেন।

৩নং ওয়ার্ড সচিব মোহাম্মদ ইমামুল হোসেন বলেন, ওয়ার্ড বাসিন্দারা আাগের মতোই সেবা পাচ্ছে। কোন বাধা নেই। কাউন্সিলর সাহেবও প্রতিদিন কার্যালয়ে আসে। আজকেও এসেছিলেন, লাঞ্চের জন্য বাড়ি চলে গেছেন।

৫নং ওয়ার্ড সচিব মোঃ নাজমুল হোসাইন বলেন, আমাদের কাউন্সিলর সাহেব প্রতিদিন কর্যালয়ে আসে। বাসিন্দারাও তাদের সেবা কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে নিয়মিত পাচ্ছে।

৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইস্রাফিল প্রধান বলেন, আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সব সেবাই পাচ্ছে। আমিও প্রতিনিয়ত কার্যালয়ে আসি। এখনও আমি কার্যালয়েই আছি।

১০নং ওয়ার্ড সচিব মোঃ আমির হোসেন বলেন, কাউন্সিলর সাহেব মাঝে মাঝে আসেন। এছাড়া ওয়ার্ডবাসীর যাবতীয় সেবা তার অনুপস্থিতিতে আমিই দিচ্ছি। সেবা প্রদানে আমাদের কার্যালয় সব সময় খোলা।

১৪নং ওয়ার্ড সচিব মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের ওয়ার্ডবাসীরা প্রতিদিন তাদের নাগরিক সেবা পাচ্ছে। আমাদের কাউন্সিলর সাহেবও প্রতিদিন কার্যালয়ে আসেন।

১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রিয়াদ হাসান বলেন, আমাদের কার্যালয়ের কার্যক্রম ৩দিন বন্ধ ছিলো, এর পর থেকে প্রতিদিনই খোলা। আমিও প্রতিদিন কার্যালয়ে যাই। আগের তুলনায় এখন মানুষ তাদের সেবানিতে আরও বেশি কার্যালয়ে আসছেন। তাদের সেবা প্রদানেও কোন সমস্যা হচ্ছে না।

১৭নং ওয়ার্ড সচিব মোঃ রিয়াদ হোসেন বলেন, কাউন্সিলর সাহেব নিয়মিত কার্যালয়ে না আসলেও প্রয়োজিনিয় কাগজপত্র তিনি সই করে দেন। আগের তুলনায় এখন মানুষ কম আসছে। তবে, আমাদের সেবা প্রদানে কোন ঘাটতি নেই। তবে এই বিষয়ে কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুর সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

১৮নং ওয়ার্ড সচিব রিমা আক্তার বলেন, কাউন্সিলর সাহেব মাঝে মাঝে আসেন, গুরুত্বপূর্ণ যে সব স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়, সেগুলো করে যান। এছাড়া নাগরিক সেবা প্রদানে কোন রকমের সমস্যা হচ্ছে না। তবে এই বিষয়ে কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মোখলেছুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমার ওয়ার্ডের কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। ৫তারিখও আমাদের অফিস খোলা ছিলো। ওয়ার্ডবাসী আগের মতোই সেবা পাচ্ছে।

২২নং ওয়ার্ড সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, আমাদের কাউন্সিলর সাহেব প্রতিদিন কার্যালয়ে আসেন। আমাদের কার্যক্রমও আগের মতোই ভালো ভাবে চলছে, কোন অসুবিধা হচ্ছে না।

২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউছার আশা বলেন, আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবেই চলছে, এখন পর্যন্ত কোন অসুবিধা নেই।

২৪নং ওয়ার্ড সবিচ রিহাদুর রহমান অনিক বলেন, আমরা আগের মতোই নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি এবং কাউন্সিলর সাহেবও প্রতিদিন কার্যালয়ে আসেন।

২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ এনায়েত হোসেন বলেন, আমাদের কার্যক্রম আগের মতোই স্বাভাবিক ভাবে চলছে। কোন অসুবিধা হচ্ছে না।

২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সামসুজ্জোহা বলেন, আগের মতোই সব কার্যক্রম চলছে। নিয়মিত মশার ঔষধ ছিটানো হচ্ছে এবং ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করা হচ্ছে।

২৭নং ওয়ার্ড সচিব ওমর ফারুক বলেন, আমাদের কাউন্সিলর সাহেব প্রতিদিন কার্যালয়ে বসেন। নাগরিক সেবাও আগের মতো ভালো ভাবে দেওয়া হচ্ছে। কোন সমস্যা হচ্ছে না।

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর:-

১,২,৩নং ওয়ার্ড সচিব জনাব মোঃ ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমার এইখানে সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে কাউন্সিলর ম্যাডাম অসুস্থ আচেন। এছাড়া তিনি প্রতিদিন কার্যালয়ে আসেন।

৪,৫,৬নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের কাজে কোন সমস্যা হচ্ছে না। আগের মতোই সবাইকে সেবা দিতে পারছি।

৭,৮,৯নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর মোসাম্মৎ আয়শা আক্তার বলেন, কয়েকজন কাউন্সিলর না থাকায় আমার কাজ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। নাগরিক সেবা দিতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না।

১৬,১৭,১৮নং ওয়ার্ড সচিব মোঃ মাসুদ রানা বলেন, আগের মতোই আমরা নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কাউন্সিলর মেডামও দৈনিক সময় মতো অফিসে আসেন। ১৭ এবং ১৮ নং ওয়ার্ডের কারণে চাপ কিছুটা বেশি।

১৯,২০,২১নং ওয়ার্ড সংরক্ষিত কাউন্সিলর শিউলি নওশাদ বলেন, নাগরিক সেবা দিতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। চাপ আগের তুলনায় কিছুটা বেশি।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন অতিরিক্ত সচিব এএইচএম কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে সব কর্মকর্তাদের সাথে সভা করে করনীয় বিষয়ে আলোচনা করছি। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিবেচনায় নিয়ে কী ভাবে নগরবাসীকে সেবা দেয়া যায়। স্বল্প, মাঝারি, দীর্ঘ পরিকল্পনায় তা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবো, সবার সহযোগীতা চাই।

RSS
Follow by Email