৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার আমরা ৬মাসে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি: হাতেম
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, শ্রম অসন্তোষ নিয়ে বর্তমানে যা চলছে, এটা আসলে মালিকদের বা বিকেএমইএ-বিজিএমইএ’র কন্টোলে নাই। এখন সরকারকে শক্ত হস্তে দমন করতে হবে। একটা জায়গায় আমরা শ্রমিকদের সাথে একমত, শ্রমিকদের নেয্য পাওনা যেটা আছে সেটা তাদের দিতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই, আমরা শ্রমিকদের পক্ষে আছি। কিন্তু তার মানে এই না যে, বেতন পাচ্ছে না বলে তারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে। রাস্তায় নেমে অন্যের ফ্যাক্টরিতে ভাঙ্গচুর করবে অগ্নিসংযোগ করবে, এটা কোন ভাবেই এক্সেপ্ট করা যাবে না। এটার জন্য সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো এই সেক্টরটা টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। শ্রমিকদের যে কোন ন্যায্য দাবি বিকেএমইএ-বিজিএমইএ শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে সমাধান করবে।
চাপের মধ্যে রপ্তানি খাত, মজুরি, শক্তি, এবং সুদের ক্রমবর্ধমান খরচ নিয়ে আলোচনা কালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এর মধ্যে কোন ব্যক্তয় ঘটবে না। কিন্তু সেটা রাজপথে নয়, ফ্যাক্টরির ভেতরে হবে। আমরা তাদের যে ন্যায্য দাবি সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলবো এবং সমাধান করবো। কিছু দাবি অন্যায্য কিন্তু মেনে নেয়ার মতো হলে আমরা মেনে নিবো। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে, রাজপথে নয়। এখন যেটা হচ্ছে এটা রিতিমত অন্যায় হচ্ছে। এই সেক্টরটা বন্ধ করার জন্য বিদেশী ও দেশীয় চক্র মিলে ধ্বংস করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। অনেকগুলো দাবি নিয়ে প্রায় দেখা যায় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বায়াররা কাজ নিয়ে অনেক আতংকিত আছে। তাতে আমাদের অর্ডার আর হয় নাই। বিগত কয়েক মাসে জুলাই আন্দোলন, কারফিউ, বন্যাসহ বেশ কয়েকটা ধকলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। হিসেব করে দেখেছি প্রতিমাসে অন্তত প্রতি মাসে আমাদের ১ বিলিয়ন রপ্তানি আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শীতকাল ও গরমকালের ৪-৫ বিলিয়ন অর্ডার আমাদের হাতছাড়া হয়েছে। ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার আমরা ৬মাসে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এমনিতেই আমরা টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত, অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, অনেকে বেতন দিতে পারছে না। কেনো পারছে না সেটা শ্রমিকদের বুঝা দরকার। শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে এর কোন বিকল্প নাই। যারা গার্মেন্টস এক্সপোর্ট করছে, সেই ব্যাংক গুলা টাকা দিতে পারছে না। একাউন্টে টাকা আছে চ্যাক দিচ্ছি, কিন্তু ব্যাংক টাকা দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতি শ্রমিকদের বুঝতে হবে। দেখা যাচ্ছে ম্যাক্সিমাম ব্যাংক অসযোগীতা করছে। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি দায়ি। গত সরকারের যে ভুল পলিসিগুলো দিয়ে গেছে, সেই পলিসি যদি অতিদ্রুত সমাধান করা না হয়, তাহলে আমাদের সামনের দিন গুলোতে রপ্তানিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ঋণ খেলাপির যে সার্কুলার দিয়েছে এটা তো ভয়ংকর। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেছে এটা উনাদের বেস্ট প্র্যাক্টিস, এটা আমাদের করতে হবে আমরা একমত। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যখন বলে বাংলাদেশসহ ৭টা দেশ দেওলিয়া হতে যাচ্ছে। সেই সময় কি আমাদের বেস্ট প্র্যাক্টিস করার সময় আমাদের? সময় যখন হবে আমরা ওয়ার্ল্ডের বেস্ট প্র্যাক্টিস করবো। তাই অতিদ্রুত এলডিসি লক্ষ্যমাত্রা এটা বন্ধ করা উচিৎ, নয়তো আমাদের পক্ষে টিকে থাকা খুব কষ্টকর হবে।