৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে মহানগর আ. লীগের বর্ণাঢ্য আয়োজন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে নানা পুষ্পস্তবক অর্পন ও আনন্দ র্যালির আয়োজন করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ। বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে যোগ দেয় আওয়ামী লীগের ২৭টি ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটির নেতাকর্মীরা ও অঙ্গ সংগঠনগুলো।
রবিবার (২৩ জুন) বিকেলে নগরীর ২নং রেল গেট এলাকার আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করার পর থেকেই শুরু হয় আয়োজন। একে একে করে নানা স্লোগানে এই আয়োজনে যোগদিয়েছে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের মিছিল।
মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এ সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসন। আনন্দ র্যালির উদ্বোধন করে তিনি বলেন, ‘আজকের এই জণসমাবেশ প্রমান করে নারায়ণগঞ্জের মাটি, আওয়ামীলীগের ঘাটি। আজ যারা আমাদের এই আনন্দ র্যালীতে অংশগ্রহন করেছেন তাদের মহানগর আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আজকের এই শেখ হাসিনার বাংলাদেশ প্রমাণ করে যে, এই দেশ শুধুমাত্র তাই নেতৃত্বে উন্নয়ন করা সম্বভ। দলকে শক্তশালী করতে হবে, আর এই দলকে শক্তিশালী করতে হলে দলের তৃণমূলকে এক হয়ে থাকতে হবে। সেই তৃণমূলকে নিয়েই আমরা আজ রাজপথে নেমেছি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন, কিন্তু খুনিরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দেয় নাই। ঐ সময়ে আওয়ামী লীগ ছিলো ভগ্ন। ১৯৯৬ সালে নেত্রী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের হাল ধরেন
আইনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার ও ফাঁসির রায়ের ব্যবস্থা করেন। ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বি এন পি – জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানালেন। তারপরে ১১/১ সরকার ক্ষমতায় এসে আমাদের নেত্রীসহ আওয়ামী লীগের সকল নেতাদের কারারুদ্ধ করলেন। পুনরায় নেত্রী ২০০৮ সালে বিএনপি-জামাত জোটকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করে বিপুলভোটে জয়লাভ করে ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নের কাজর হাত দিলেন।
দলটির সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ে সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলন নেতৃত্ব দিয়ে ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু’র ডাকেই ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাঙালি জাতী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক চক্রান্তে দেশী ও পাকিস্তানি শত্রুদের ষড়যন্ত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইতিহাসের জগন্যতম হত্যার শিকার হন। ১৯৮১ সালে ১৭ মে বাংলাদেশ দেশে এসে দলের হাল ধরেন আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগ এখন অনেক সুসংগঠিত ও শক্তিশালী বাংলাদেশের যতো উন্নয়ন সবই হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার হাত ধরেই। সবার সাথে বন্ধুত্ব কারোর সাথেই বৈরিতা নয় এই নীতিতেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। এক সময় তলাবিহীন ঝুঁড়ি বলে যে বাংলাদেশকে অপবাদ দিয়েছিল পশ্চিমারা তারাই এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরন বলে বিশ্ব মিডিয়ায় প্রসংশা করে বেড়াচ্ছে। আজ বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে নিয়ে যেতে আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে গিয়েছেন এবং দেশের মানুষের দু:খ দুর্দশার কথা শুনেছেন। জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র হাত ধরেই বাংলাদেশে সামরিক শাসন ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। যতোকিছু উন্নয়নের অবদান দৃশ্যমান তার সবকিছুই আমদের নেত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র অবদান। ২১ বার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে আমাদের নেত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতীকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছেন এবং আত্মমর্যাদাশীল জাতী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন ।
বক্তব্য এড. খোকন সাহা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, আগামীকাল ২৪ জুন থেকে ২৪ জুলাই এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নির্দেশনা মোতাবেক এ কর্মসূচি প্রতিটি ওর্য়াডে বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ রাখলাম। যদি দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট ওর্য়াড নেতাদের উপর আসবে।
এরপর নগরীর ২নং রেল গেট থেকে চাষাঢ়া শহিদ মিনার পর্যন্ত একটি আনন্দ র্যালি বের হয়। র্যালিতে প্রথম সাড়িতে কর্মীসমর্থকদের মটোরসাইকেল বহর এবং পিছনে নানা ব্যানারে উপস্থিত হয় নেতাকর্মীরা। ‘শেখ মুজিব তোমাকে ভুলি নাই, রাজ পথ ছাড়ি নাই’, ‘শেখ হাসিনার সরকার, বার বার দরকার’ এমনই নানা স্লোগানে র্যালিতে যোগ হয় ৪০টি আনন্দ মিছিল।
সমাবেশ চলাকালীন সময়ে আনন্দর্যালিতে ৪০টি আনন্দ মিছিল যোগদান করার ফলে শহরে বিশাল যান-জটের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে খোকন সাহা নাগরিকদের বলেন এই জনদূর্ভোগ এর জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করি। বাধ্য হয়ে আমাদের এই কর্মসূচি পালন করতে হয়েছে, কারন নারয়ণগঞ্জ মহানগরে
মিছিল ও মিটিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসস্থার জনপ্রতিনিধিরা এর জন্য দায়ী ।
নগরীর জানযট বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় দায়িত্ব প্রাপ্ত জণপ্রতিনিধিরা অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন করেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জন দুর্ভোগ এড়ানোর এর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করেছেন। যেমন ঢাকার দুইটি সিটি কর্পোরেশন। রাজনৈতিক দলগুলো যাতে যত্র তত্র কর্মসূচি পালন করতে না পারে, তার জন্য সুনির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আজ আর এর বেশি কিছু বলতে চাই না ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল, এড.হান্নান আহমেদ দুলাল, মাসুদুর রহমান খসরু ও হাজী নূরুল ইসলাম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব ও জি. এম আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহমুদা বেগম মালা, দপ্তর সম্পাদক এড. বিদ্যুত কুমার সাহা, প্রচার সম্পাদক এড. হাবীব আল মুজাহিদ পলু, অর্থ সম্পাদক কামাল দেওয়ান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রশীদ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক কবীর হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক প্রেফেসর ডা. আতিকুজ্জামান সোহেল, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির মৃধা, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কাজী আতাউর রহমান, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সহ – দপ্তর সম্পাদক ছানোয়ার তালুকদার, কার্যকরী কমিটির সদস্য এস. এম পারভেজ শিপন সরকার শিখন, শাখাওয়াত হোসেন সুমন, আবেদ হোসেন, সিদ্দিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া, সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির , শামীম খান , উত্তম কুমার সাহা , ২নং ওর্য়াডের সাবেক কাউন্সিলর ওমর ফারুক , মহানগর যুবলীগ নেতা খাঁন মাসুদ , মহানগর তাঁতীলীগের আহবায়ক চৌধুরী এইচ এম এফ শাহেদ ফারুক , যুগ্ম আহবায়ক মাসুদুর রহমান , এড. জাহাঙ্গীর আলম ডালিম , মুকুল হোসেন রাসেল , মহানগর মৎস্যজীবি সভাপতি নূর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জনী খান ও বাংলাদেশ ট্যাংক লরী শ্রমিক ইউনিয়নের নারায়ণগঞ্জ শাখার সভাপতি আশরাফ উদ্দিন আশরাফ সহ ১৭টি মহানগরের ওর্য়াডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও সিদ্দিরগঞ্জ থানাধীন এর ১০টি ওর্য়াডের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ।