শনিবার, জুলাই ২৬, ২০২৫
Led04রাজনীতি

৫৪ শহীদের নামে গণসংহতি’র বৃক্ষরোপণ, ‘শহীদি চত্বর’ ঘোষণার দাবি

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জের ৫৪ জন শহীদের স্মরণে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে এক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ সিটি পার্কে বিকেল ৩টায় ওই বৃক্ষরোপণ করা হয়। আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন এবং এই চত্বর দুটিকে ‘শহীদি চত্বর’ হিসেবে নামকরণের জন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

শহীদ মাবরুর হোসেন রাব্বির পিতা আব্দুল হাই বলেন, “আজ বড় দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি। আমার সন্তান আর পৃথিবীতে নেই। শত চেষ্টা করেও তাকে ফেরাতে পারিনি। কিন্তু আমি গর্বিত একজন শহীদের পিতা হিসেবে। আমাদের সন্তানদের যারা হত্যা করেছে, সেই ফ্যাসিবাদী হাসিনার বিচার দাবি করছি।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সন্তানদের নামে এই চত্বরে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। এই চত্বর দুটিকে শহীদি চত্বর হিসেবে নামকরণ করার জন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।”

কর্মসূচিতে উপস্থিত অন্যান্য শহীদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন শহীদ সজলের পিতা হাসান মাহমুদ, শহীদ আদিলের পিতা মোঃ আবুল কালাম, শহীদ ইমরানের মাতা কোহিনুর আক্তার, শহীদ আরমান মোল্লার স্ত্রী সালমা আক্তার, শহীদ মহসীনের কন্যা রুনা আক্তার, শহীদ তুহীনের স্ত্রী আলেয়া আক্তার মীম, শহীদ শফিকুলের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার, শহীদ সাইফুল হাসান দুলালের বোন মৌসুমি নাসরিন, শহীদ আহসান কবিরের পিতা মোঃ হুমায়ূন কবির, শহীদ স্বজনের ভাই অনিক, শহীদ মোঃ জনির পিতা মোঃ ইয়াসিন এবং শহীদ হযরত বিল্লালের পিতা মোঃ সজল।

গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, “আমরা সকলেই জুলাই-আগস্টের পুরো সময় জানবাজি রেখে লড়াই করেছি। অনেকেই রাজপথে হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করে পরিবারের কাছে ফিরতে পেরেছি, অনেক ভাই ও বোনেরা পরিবারের কাছে ফিরতে পারেনি। দেশের মানুষের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য শহীদ হয়েছে।” তিনি জানান, ফ্যাসিবাদ বিরোধী এই ঐতিহাসিক লড়াইয়ে নারায়ণগঞ্জের স্বজন, আমানত, রিয়া গোপ সহ ৫৪ জন শহীদ হয়েছেন। তাদের স্মরণে গণসংহতি আন্দোলনের মাসব্যাপী কর্মসূচি চলছে, যার অংশ হিসেবে এই বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস বলেন, “আমরা শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনতার এ লড়াই সকল বৈষম্যের অবসানের মধ্য দিয়েই সমাপ্ত হতে পারে। এই শহীদরা সেই চলার পথে আমাদের পথপ্রদর্শক। গণসংহতি আন্দোলন সেই লক্ষ্যে অবিচল।”

মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী বিপ্লব খান বলেন, “ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বিলোপ ও জনগণের অধিকারের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই চলমান রয়েছে। রোপণকৃত গাছগুলো প্রাণ-প্রকৃতিকে রক্ষায় ঢাল হিসেবে কাজ করবে, যেমন করে আমাদের শহীদেরা জীবন দিয়ে বাংলাদেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছেন এবং ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।”

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রাণী সরকার, জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, প্রচার সম্পাদক শুভ দেব, দপ্তর সম্পাদক রাকিবুল হাসান দ্বিপু, কার্যকরী সদস্য আওলাদ হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, প্রতিবেশ আন্দোলন জেলার আহ্বায়ক রাইসুল রাব্বি, যুব ফেডারেশনের জেলার আহ্বায়ক সাকিব হোসেন হৃদয়, সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম ইফতি সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

RSS
Follow by Email