শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫
Led03ফতুল্লা

৪র্থ বিয়ের জন্য তৃতীয় স্ত্রীকে মৃত সাজালেন স্বামী, ‘মৃত্যু সনদ’ হাতে থানায় স্ত্রী

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: চতুর্থ বিয়ের জন্য তৃতীয় স্ত্রীকে ‘মৃত’ দেখিয়ে ভুয়া সনদ নেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান (৫০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, সেই ভুয়া সনদ ব্যবহার করে তিনি ভোটার তালিকাতেও তার তৃতীয় স্ত্রী সীমা আক্তার (৩৫)-কে মৃত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করিয়েছেন। এই ভয়াবহ জালিয়াতির অভিযোগে শাহজাহান, সনদ প্রদানকারী ইউপি সদস্য এবং তথ্য সংগ্রহকারীসহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে, ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সীমা আক্তার নিজেই।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সীমা আক্তার বাদী হয়ে এই অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনার আদ্যোপান্ত:
অভিযোগে সীমা আক্তার উল্লেখ করেছেন, নয় বছর আগে ফতুল্লার শিহাচর এলাকার মৃত ইউনুস ঢালীর ছেলে শাহজাহানের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিনটি পুত্র সন্তান রয়েছে। সীমা জানান, তাকে বিয়ের আগেও শাহজাহান আরও দুটি বিয়ে করেছিলেন, যা তিনি সীমার কাছে গোপন রেখেছিলেন। পর্যায়ক্রমে নানা কৌশলে শাহজাহান তার পূর্ববর্তী দুই স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান। তবে সম্প্রতি শাহজাহানের জালিয়াতির বিষয়টি ফাঁস হয়। সীমা আক্তারের অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি তাকে মৃত দেখিয়ে চতুর্থ বিয়ে করার উদ্দেশ্যে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সংগ্রহকারী শারমিন আকতারের মাধ্যমে ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হান্নানুর রফিক রঞ্জুর কাছ থেকে একটি ‘মৃত সনদ’ গ্রহণ করেন। এরপর সেই সনদ উপজেলা নির্বাচন অফিসে দাখিল করে ভোটার তালিকায় সীমাকে মৃত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করান।

প্রতারণা ফাঁস ও আইনি পদক্ষেপ:
স্বামীর এই জালিয়াতির বিষয়টি সীমা আক্তার জানতে পেরেই তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে মৃত্যু সনদ সংগ্রহ করে তিনি ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ইউপি সদস্যের বক্তব্য:
এ বিষয়ে কুতুবপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হান্নানুর রফিক রঞ্জু তার সরলতার সুযোগ নেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি জানান, “ভোটার হালনাগাদের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী শারমিন প্রতিদিনই শত শত লোকের আবেদনে সই স্বাক্ষর নিতেন। প্রতিটি আবেদনপত্র তিনি নিজেই যাচাই বাছাই করে আমার কাছে নিয়ে আসতেন। তাকে বিশ্বাস করে আমি আবেদনে সই স্বাক্ষর করে দিতাম। আমার সরলতা ও বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে শাহজাহানের আবেদনে সীমাকে মৃত দেখিয়ে শারমিন স্বাক্ষর নিয়েছে। বিষয়টি নির্বাচন অফিসে আলোচনা করে সমাধান করব।”

পুলিশের পদক্ষেপ:
ফতুল্লা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, সীমা আক্তারের একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য এসআই শুভঙ্করকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে মামলাসহ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।

RSS
Follow by Email