শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
Led01অর্থনীতিজেলাজুড়েরাজনীতিসদর

৩ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে, আমাদের দায়ী করা যাবেনা: সেলিম ওসমান

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, আমরা বহুবার গ্যাসের সমস্যা চেষ্টা করে দূর করতে পারছি না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি গুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ৩ লাখ শ্রমিক বিপদগ্রস্থ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি ডিসেম্বর মাসের বেতন গুলো তাদের দিয়ে দেয়ার জন্য। আমরা এক্সপোর্ট করতে পারি নাই। আমরা আমাদের মাল গুলো নিদ্রিষ্ট সময়ে তৈরী করতে পারি নাই তার উপর নির্বাচন ছিলো, এখন আবার জানুয়ারি মাসের বেতন দেয়ার সময় চলে আসছে। ডিসেম্বরের বেতন আমরা দিয়ে দিবো কিন্তু নভেম্বরের বেতন আমরা করতে পারি নাই। এছাড়া সময় মতো আমরা বেতনটা বাড়াতেও পারি নাই। কারণ ফ্যাক্টরি গুলো একেবারে অচল হয়ে গেছে। আমাদের উপর প্রেশার আসছে বেতনটা বৃদ্ধি করে বেতন দেয়ার জন্য। এই বেতনটা আমরা কোথা থেকে দিবো, আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বেতনটা দিয়ে দেয়া আমরা এগ্রি করেছি আমরা বেতনটা দিবো। আমরা এগ্রি করেছিলাম গ্যাসের দাম বেড়ে যাবে, বাড়লে কোন আপত্তি থাকবে না যদি নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস পাই। আমরা বিদ্যুৎ টা যদিও একটু ঠিক পাচ্ছি কিন্তু গ্যাসের ব্যাপারে আমরা একেবারে হতাশ হয়ে গেছি। আমরা বার বার যোগাযোগ করার পর নির্বাচনের আগে ১০-১২দিন গ্যাস থাকলেও নির্বাচনের পর আবার গ্যাস নেই হয়ে গেলো। এটা আমাদের জন্য যে কত বড় ক্ষতি হয়ে গেলো এটা যারা এই ব্যবসার সাথে জরিত তারাই বুঝতে পারছে। সব গুলো ফ্যাক্টরীতে সেই ব্যবস্থা নাই যে সিলিন্ডার গ্যাস এনে চালাবো, হয়তো কয়েকজনের পক্ষে সম্ভব।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) পরিচালনা পর্ষদ (২০২৩-২০২৫) এর ৪র্থ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় টানা ৩য় বারের মতো নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সংসদ্য নির্বাচিত হওয়ায় বিকেএমইএ’র বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়।

এমপি সেলিম ওসমান বলেন,আমরা নিট ব্যবসা করি যারা আমাদের ৩টা জিনিস খুব প্রয়োজন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি। সব চেয়ে বেশী যেটা লাগে সেটা হলো শ্রমিক যাদের জন্য আমরা টিকে আছি। শ্রমিকের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক থাকলেও একটা শ্রমিকের পক্ষে সম্ভব না বেতন ছাড়া কাজ করা। যেখানে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে, এখাবে আমরা আর কদিন চলবো।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সম্মিলিতভাবে সরকারের কাছে আবেদন থাকবে, আমাদের এই সমস্যা থেকে উদ্ধার করার জন্য। আজকে শৈতপ্রবাহের কারণে দুই দিন যাবত চিটাগংয়ে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের নারায়ণগঞ্জে গ্যাস কেনো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা নির্বাচনের র্পূবে যখন আলাপ করলাম তখন গ্যাস পেলাম কিভাবে। শীত এবার প্রথম আসে নাই আগেও তো শীত ছিলো। যে কোন ভাবে আমাদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের সমস্যা। নিট শিল্প উন্নতি করার জন্য নিট শিল্প ধরে রাখার জন্য এটাই পারফেক্ট টাইম। নয়তো আমাদের করোনার সময় যে অবস্থা হয়েছিলো, তার থেকে ২ হাজার গুণ বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। আমরা কোন রকমের হৈচৈয়ে যাবো না। আমরা শন্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করতে চাই, শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করবো। কিন্তু সরকারের কাছে আমরা একটা আবেদন দিবো, আর এই আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা অতিসত্তর যেনো গ্যাসটা পাই তার জন্য আমরা সর্বোচ্চ মহলে আবেদন করবো। তার পরিপ্রক্ষিতে আমরা গ্যাস যেনো পাই, অন্যথায় ফ্যাক্টরি গুলো বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আমাদের কোন উপায় থাকবে না। সেই ক্ষেত্রে কিন্তু আমরা দায়ী হবো না।

সেলিম ওসমান বলেন, এইযে ৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান থেকে বের হতে হবে, সেটার জন্য আমাদেরকে দায়ী করা যাবেনা। একটাই কারণ, সব কিছুর দাম বেড়েছে। দাম বাড়লেও আমরা কিন্তু আজ কিনে খেতে পারছি, বাংলাদেশের পরিস্থিতি আজ এতো ভালো। কিন্তু গ্যাসই যদি আমরা না পাই তাহলে কিভাবে আমরা আমাদের শ্রমিকের বেতন বহন করবো। আমরা কিন্তু করোনার পরিস্থিতি কাটিয়ে চায়নাকে পেছনে ফেলে নিটওয়্যারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি। শুধু আমাদের সমস্যা একটাই আগে বিদ্যুৎ ছিলো না, এখন সমস্যা হলো আমাদের গ্যাস সরবরাহ নেই। আমরা বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে নিটওয়্যার রপ্তানি করছি আড়াই হাজার কোটি টাকা। এটা যদি হিসেব করতে যাই তাহলে বাংলাদেশের সব থেকে বেশী আয় করে নিটওয়্যার, আর এর মাধ্যমেই আমরা ফরেন কারেন্সি আনতে পারছি। আর এই জন্যই আজ ৩ থেকে সাড়ে ৩লাখ মানুষ কর্মসংস্থানের সাথে জরিত। প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে যদি চিন্তা করি তাহলে প্রায় ১৫লাখ মানুষের কর্মসংস্থান এই নিটওয়্যারে।

RSS
Follow by Email