৩০০ শয্যা হাসপাতাল ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের বিদায় সংবর্ধনা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী সমিতির সাংগঠনিক কার্যালয় উদ্বোধন এবং কর্মচারীদের বিদায় সংবর্ধনা। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে খানপুরে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রাঙ্গনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী সমিতির সভাপতি নূরে আলম রনির সভাপতিত্ব আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রধান অতিথি চিকিসা তত্ত্বাবধয়ক (উপ-পরিচালক স্বাস্থ্য) ডা. মো. আবুল বাসার, বিশেষ অতিথি ৩০০শয্যা হাসপাতালের ডক্টরস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েনের সভাপতি অলক কুমার সাহা।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য আবুল বাসার বলেন, আমি কর্মরত থাকা অবস্থায় কেউকে অবসর নেয়ার জন্য সমস্যা পোহাতে হয় নি। আমার টেবিলে অবসরের ফাইল আসছে আমি জরুরী কাজ শেষে ফাইল ছেড়ে দিয়েছি। আজ যাদের বিদায় হচ্ছে তাদের জন্য জন্য আমাদের হাসপাতাল আজীবন খোলা থাকবে, আমরা তাদের বিদায় দিচ্ছি না। আমরা সবাই সরকারী কর্মচারী। ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী সমিতির কার্যালযের অফিস দেখে খুব খারাপ লেগেছিল, আজ সেটা দেখে খুব ভালো লাগছে। কার্যালযের উদ্বোধন করতে গিয়ে রুম দেখে আমি অবাক ছিলাম। এই কার্যালয় শুধু ১৭-২০ গ্রেড সরকারি কর্মচারীদের না, ওই কার্যালয় আমাদেরও। হাসপাতালের ভবনের পিছনে যে ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছি। এই সপ্তাহ থেকেই সেখানেই কাজ শুরু হবে। তাছাড়া আশা করছি আগামী ৩০ জুন এই ৩০০ শয্যা হাসপাতাল আমাদের কাছে ৫০০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে হ্যান্ডওভার করা হবে। এই কাজ আগেই করার কথা ছিলো কিন্তু এক সমস্যার জন্য এই কাজ সম্পূর্ন হয়নি। কাজটিকে ২ বছর পিছানো হয়েছে। তা ছাড়া এই ৩০০ শয্যা হাসপাতালে তো আগে থেকেই একটি মেডিকেল কলেজ হিসেবে দিয়েছেন। আমার কাছে বছরের ২ বার চিঠি আসলে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে চিঠি আসে। এখানে আমরা সবাই সরকারি কর্মচারী, কেউ বড় অফিসার বা ছোট কর্মচারী না। তবে আমরা কর্মচারীরা বিভক্ত না হয়ে একসাথে সংঘবদ্ধ থাকলে আমাদের দাবি আমরা সহজে পাবো। আমার কর্মজীবনে আমি দেখিনি যে বতন নিয়ে উদ্ধতন কর্মকর্তারা আন্দোলন করতে। সবসময় কর্মচারী যারা আছেন তাদের থেকেই আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু কষ্টের বিষয় হচ্ছে এই আন্দোলনের সুফল আমরা কর্মকর্তারা বেশি পাই। কারণ বেতন স্কেলে কর্মচারীদের বেতন ১ হাজার টাকা বাড়লে আমাদের বেতন বাড়ে ৮ হাজার টাকা। আমাদের সবাইকে এক থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠানে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সমান ভাবে একে অপরকে সম্মান-স্নেহ দিয়ে কাজ করলে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো। আউটসোর্সিং কাজটা আমার নিজের পছন্দ না। কারণ বাজেট থাকলে বেত থাকে নাহলে বেতন থাকে না। তাও আমি চেষ্টা করছি। এই আউটসোর্সিং কাজে যারা আছেন তাদের অন্য কোন বিভাগে নেওয়া যায় কিনা।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য অলক কুমার সাহা বলেন, আমাদের কাছে যে দাবিগুলো এসেছে এগুলো এগিয়ে নিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সবাইকে বুকে আলগে রাখেন, তার কাছে কেউ কিছু চেয়ে নিরাশ হন না। কেউ শেখ হাসিনার কাছে কিছু চেয়ে খালি হাতে ফিরে আসেন না। আপনাদের দাবিগুলো নিয়ে যেভাবে সম্বভ আমরা প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌছাবো। আজ যারা বিদায় নিচ্ছে তারা আসলে যাচ্ছেন না, তারা আমাদের মাঝে থেকে যাচ্ছেন। তারা জীবনের বড় একটা অংশ মানুষের সেবায় কাজ করেছেন। প্রাকৃতিক নিয়মেই একজন রোগী বাচঁবেন নয়তো মৃত্যু বরন করবেন। কিন্তু আমাদের কর্মচারীদের সেবা দেওয়ায় কোনো ঘাটতি যেন না থাকে। আমি কখনোই ভুলবো না আপনাদের থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি। আমরা সবাই একসাথে এগিয়ে যাবো। এটা কোনো প্রতিষ্ঠান নয় আমরা চাই এখানে মেডিকেল কলেজ হোক। আমরা চাই আমরা একসাথে কাজ করে এই জেলার সাথে থাকবো। আমাদের কমিটি আপনাদের দাবি এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা ব্যক্ত করছি।
বিশেষ অতিথি মইনুল ইসলাম বলেন, অভিবাবক ভালো না হলে সন্তান ভালো হয় না। এই হাসপাতালের অভিভাবক তাদের সন্তানদের খোঁজখবর রাখেন তাই তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা চাই কাধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে এই জায়গাকে উন্নত করতে। আমরা কর্মকর্তা কর্মচারীদের যে প্রোগ্রামে যাই সেখানেই তাদের বেতন নিয়ে কথা হয়। আমি আহ্বান জানাই আমরা যতবেশি আলাদা থাকবো আমাদের দাবি তাদের কাছে যাবে না। আমাদের দাবি পেতে হলে এক হতে হবে। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী পরিষদ আপনাদের নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। আমরা সরকারি কর্মচারী আমাদের দাবি একটাই আমাদের পে কমিশন কবে হবে। আমাদের পে স্কেল কবে পাবো। নির্বাচনের আগেই আমাদের এ দাবি পেশ করেছি। এবিষয়ে অর্থ সচিবের কাছে সাক্ষাৎ করেছি। আমাদের ধৈর্য ধরে থাকতে বলা হয়েছিলো নির্বাচন পর্যন্ত। এখন যেহেতু নির্বাচন শেষ ইনশা আল্লাহ আমাদের দাবি নিয়ে বসা হবে।
সভায় ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম ভূইয়ার সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী বিভাগীয় কেন্দ্রীয় উপকমিটির আহ্বায়ক সাউদ নুর এ শফিউল কাদের। বিশেষ বক্তা, বাংলাদেশ ১৭-২০ সরকারি কর্মচারী সমিতির (বাচসকস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব শাহ জাহান সিরাজ সম্রাট, জেলার সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান, ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবী জাতির ফোরামের জেলার শাকার সভাপতি তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী সমিতির জেলার সভাপতি মিজার হোসেন, ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবী জাতীয় ফোরামের জেলা সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম রানা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ৩০০শয্যা হাসপাতালের ডক্টরস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েনের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ বাপ্পি, সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মইনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট গাইনী ও বিভাগীয় প্রধান ডা, মো, জাহাঙ্গীর আলম, আবাসিক চিকিসক দেবরাজ মালাকার, আবাসিক সার্জন আব্দুল কাইয়ুম, উপসেবা তত্ত্বাবধায়ক ফাতেমা আকতার, অতিথি বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দিন হাওলাদার সদস্য সচিব নূরে আলম, প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন খান, বাংলাদেশ সচিবালয় ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাপ মিয়া, বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারী সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক নাসির উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক ও মুখপাত্র রফিকুল আলম, জেলা বাংলাদেশ ৩য় শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতির সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, জেলা ১১-২০ গ্রেডের সরকারি ঐক্য জোটের প্রধান সমন্বয়ক আলাউদ্দিন প্রধান।