হিংসা তারাই করে যাদের সামর্থ নেই, যোগ্যতা নেই: চন্দনশীল
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হাইস্কুলের সভাপতি চন্দনশীল বলেছেন, আমরা একটি ইচ্ছে ছিলো যে, স্কুলটাকে আমি এমপিও ভুক্ত করে দিয়ে যাবো। আমি গর্বিত কারণ আমি এই স্কুলের একজন প্রাক্তন ছাত্র। তবে, এই স্কুলটা যখন সরকারি হয়ে যাবে তখন অনেকেই এখানে আর থাকবেন না। আমরা সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। আজ এই স্কুলটা অনেক ভালো স্থানে আছে। অনেকের এই অবস্থানটা সহ্য হয় না।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেল ৫টায় স্কুলের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সভায় সবাপতির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজ এর নতুন গভর্নিং বডির সভাপতি ও নির্বাচিত সদস্যদের শুভেচ্ছা জ্ঞপন এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলীর সাথে মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
চন্দনশীল বলেন, আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। রাজপথেই বেশি থাকি। একদিন সেলিম ভাইয়ের সাথে বসে ছিলাম। এমন সময় হাইস্কুলের সাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার কাছে গেলেন কোন একটি কাগজে সই করতে। সেই কাগজে সভাপতির নাম দেখে সেলিম ভাই রেগে গেলেন। আমরা সবাই মিলে তাকে শান্ত করলাম। তখন তিনি হটাৎ করে বলে উঠলেন, সভাপতির স্থানে চন্দনের নাম লিখো। আমি তাকে বললাম, আমি তো এই কাজের জন্য একদমই প্রস্তুত না। তখন তিনি বললেন, কেন সাহস নাই? তখন এই জায়গায় একটি চ্যালেঞ্জ মনে হলো। সাহসের কথা যখন বলেছেন, তখন এই দায়িত্ব তো নিতেই হয়। ওইদিন তিনি একটা কথাই বলেছিলেন, চন্দন স্কুলটাকে বাঁচাও। আমি তখন মনে করলাম, স্কুল বাঁচানোর আবার কি আছে।
স্কুল কমিটির এই বিদায়ী সভাপতি বলেন, আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছি, তখন আমরা মাসে টিউশন ফি পেতাম ১৩লাখ টাকা। বেতন ভাতা দিতাম সারে ১৭লাখ টাকা। ফান্ড আমাকে দেওয়া হয়েচিলো ৬০ লাখ টাকা। তখন বলাবলি হচ্ছিলো এই টাকা খাওয়ার জন্যই চন্দনশীল আসছে। তখনই আমি চিন্তা করেছিলাম, যখন এখান থেকে যাবো, এই ৬০লাখ টাকার আগে পরে আরও কয়েকটি সংখ্যা লাগিয়ে দিয়ে যাবো। বর্তমানে আমাদের স্কুলের ফান্ড রয়েছে ৪কোটি টাকার উপরে। টাকার অভাবে বার্ষিক ক্রীড়া হতো না, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো না।
তিনি বলেন, এই স্কুল থেকে বহু সচিবসহ বড় বড় কর্মকর্তারা পড়েছেন। এই স্কুলে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন, তখন ওনাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিলো। এমন একটি ঐতিহাসিক স্কুলকে ভালো একটি অবস্থানে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। ওইযে সাহসের কথা বলেছিলো, সাহস দেখিয়েছি। যার নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্য শেখ হাসিনা, যার অভিভাবক সেলিম ওসমান, যার বন্ধু শামীম ওসমান; তার সাহস কিরকম হতে পারে আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, একটা কথা আছে, ‘পাছে লোকে কিছু বলে’। হিংসা তারাই করে যাদের সামর্থ নেই, যোগ্যতা নেই। যাদের সামর্থ আছে, যোগ্যতা আছে; তারা সাহয্য করে। অপপ্রচার তারাই করবে যাদের পারিবারিক কোন শিক্ষা নাই। একদম নিম্ন শ্রেনি থেকে উঠে এসেছে এমন মানুষ। তারাই জাত নিয়ে কথা বলে।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. মাহমুদুল হাসান ভুইয়া।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- নবগঠিত কমিটির সাধারণ শিক্ষক সদস্য মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, মো. আব্দুল ওহাব, অভিভাবক সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম মিঠু, মো. পরাগ দেওয়ান, মোহাম্মদ কাওসার হোসেন, সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সৈয়দা ফাহমিদা আহমেদ ও দাতা সদস্য সোহেল আক্তার সোহান, সহকারি প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান, প্রভাতি সাথি রানি সাহা, সিনিয়র শিক্ষক গৌতম কুমার সাহা, জহিরুল হক মোল্লা, ফজলুল হক, শিকান্ত চন্দ্রসহ স্কুলের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।