সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫
Led02রাজনীতি

হত্যা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন: রিয়াদ চৌধুরী

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার এবং অপপ্রচারের অভিযোগ করে, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১১ টা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়নগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে শামীম ওসমান পালিয়ে গেলেও তার দোসরদের বিরুদ্ধে বিএনপির নিবেদিত নেতাকর্মীদের লড়াই করতে হচ্ছে। এ চক্রটি বিভিন্ন ভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঘায়েল করার জন্য বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারনা,কাল্পনিক অভিযোগ সামনে এনে বিশৃংঙ্খলা তৈরী করছে। ফ্যাসিবাদের এই দোসরদের চিহ্নিত করে এদের বিরুদ্ধে এখনই নেতাকর্মীর স্বোচ্চার হতে হবে ।

লিখিত অভিযোগে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, সমগ্র দেশব্যাপী আওয়ামী দোসরদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিএনপির সর্বোচ্চ নিতি নির্ধারণী মহল থেকে শুরু করে তৃণমূল নেত্রীবৃন্দ পর্যন্ত উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের স্বীকার হচ্ছে। তদ্রুপ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতেও আওয়ামী দোষরদের একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে আমি সহ আমার দলীয় নেত্রীবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা এই ধরনের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে আমরা দলীয়ভাবে আলোচনা সাপেক্ষে এই ধরণের কু-চক্রী মহলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

তিনি বলেন, আমি ফতুল্লার চৌধুরী বাড়ীর সন্তান। ফতুল্লা মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বহু সরকারী ও বেসরকারী সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ভূমির দাতা আমার পূর্ব পুরুষগণ। আমার বাবা ছিলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও মা ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন বিএনপির নিবেদিত কর্মী। গত ২৬ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রইসউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। মানবন্ধনে আমাকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ভূমিদস্যু, দখলবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যাহার নির্দিষ্ট কোন তথ্য প্রমানাদি উল্লেখ নেই। কথিত রইস উদ্দিনকে দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে।

তিনি আরও বলেন. মানববন্ধনে ফতুল্লা হোসেন ট্রেক্সটাইল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই ঘটনাটি ২০২৪ সালের ১১ ই সেপ্টেম্বর বিকেলে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে ফতুল্লা রেললাইন বটতলা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ও মাদকবিরোধী একটি শান্তি মিছিল আয়োজন করে। বিএনপি ও এলাকাবাসীর সমন্বয়ে আয়োজিত সেই শান্তিমিছিলে ফতুল্লার চিহ্নিত আওয়ামী পরিবার ও গড ফাদার শামীম ওসমানের অন্যতম সহযোগী যুবলীগ ক্যাডার আক্তার, সুমনের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা ও গুলি বর্ষণ করেন। ফতুল্লা থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন, যুবদল নেতা মিঠু, রাহাত চৌধুরীসহ ১৫/২০ জন সাধারণ জনগণ গুরুতর আহত হন। এই ঘটনায় হোসেন টেক্সটাইল নামক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আমি সেই ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে সেই মামলায় অবশ্যই আমাকেও আসামী করা হতো।

১১ই সেপ্টেম্বর হামলার ঘটনার পর থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসী আক্তার, সুমনদের সন্ত্রাসী বাহিনী স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শণ করে এবং ক্ষতিকরার চেষ্টা করে। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৭ই ফেব্রুয়ারী ভোর ৫ টায় ফতুল্লার পূর্ব লালপুর রেললাইন এলাকায় ফতুল্লা থানার স্বেচ্ছা সেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন হোসেনকে আক্তার-সুমনের সন্ত্রাসীরা বাড়ী থেকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করে।

তিনি বলেন, হত্যাকান্ডের একদিন পর নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী ও হোসেন টেক্সটাইলের দখলদার আক্তার ও সুমন সহ এগারজনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সেই মামলার ভিত্তিতে আক্তার, সুমনের বাড়ীর কেয়ারটেকার সহ ৭-৮ জনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী প্রদান করেন। সেই হত্যা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে উদ্ভট, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

লিখিত অভিযোগে রিয়াদ বলেন, সন্ত্রাসী আক্তার, সুমন ও তাহাদের পরিবার বিগতদিনে ৮-১০টি হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। এরমধ্যে বীরমুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন মেম্বার, ডাইং ব্যবসায়ী সোলেমান এবং নজরুল হত্যাকান্ড অন্যতম। এছাড়া যিনি মানববন্ধন করেছেন তিনি ফতুল্লারকেউ না এবং মানববন্ধনে মুষ্টিমেয় লোকের সকলেই বহিরাগত এবং তাহারা কেউ এখানকার ব্যবসায়ী নয়। মানববন্ধনকারীরা সঠিকভাবে আমার নামটিও জানেন না। যাহার কারণে তারা সঠিকভাবে আমার নামটিও উচ্চারণ করতে পারেননি। মূলত আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই এক পক্ষ ভাড়াটে লোকজন দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে একটি মানববন্ধন আয়োজন করে।

রিয়াদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে দেশে কোন দলীয় সরকার নেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগে কোন সত্যতা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে কোন না কোন লিখিত অভিযোগ জমা থাকতো এবং আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে বিগত দিনে এই ধরণের কোন অভিযোগ আইনশৃঙ্খল বাহিনীর কাছে নেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কিঞ্চিত সত্যতা থাকলে যৌথবাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থা অবশ্যই অবগত থাকতেন এবং আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, সহ সভাপতি হানিফ কবির, সুমন আকবর, যুগ্ম সম্পাদক আনিস রহমান,ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকী,সহ-প্রচার সম্পাদক কামাল আহম্মেদ, মিলন টালি,এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির চৌধুরী, সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাকির হোসেন রবিন, ফতুল্লা থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আ: খালেক টিপু, সদস্য সচিব সালাউদ্দিন রানা,নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক জুয়েল আরমান, শ্রমিক দলের আহবায়ক শাহ আলম পাটোয়ারী,সদস্য সচিব আল আমিন,তাতীদলের সভাপতি ইউনুস মাস্টার,সাধারণ সম্পাদক ইমন,নারায়ণগঞ্জ জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আল আমিন, রূপম,নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি আল আমিন প্রমুখ।

RSS
Follow by Email