সোনারগাঁয়ে ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’র ব্যানারে রোডমার্চ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুড়িংসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশীদের দেয়া ও রাখাইনে কথিত মানবিক করিডোর দেয়ার ষড়যন্ত্র বন্ধ করার দাবিতে রোডমার্চ অনষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ জুন) চিটাগাং রোড ও মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’র ব্যানারে কর্মসূচির প্রথম দিন পালন করা হয়। এসময় সকাল ১১টায় চিটাগাং রোড ও ১২ টায় মোগরাপাড়ায় পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুড়িং কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার প্রক্রিয়া, কথিত মানবিক করিডোরের নামে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে জড়ানোর চক্রান্ত এবং তুরস্ক ও কাতারকে অস্ত্র তৈরির কারখানা স্থাপনের তৎপরতা বন্ধ, স্টার লিংক এর সাথে চুক্তি বাতিল এবং যুক্তরাষ্ট্র—ভারতসহ সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহের সাথে জাতীয় স্বার্থবিরোধী সকল চুক্তি বাতিলের দাবি জানায় নেতৃবৃন্দরা।
বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক কমরেড হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে চিটাগাং রোডে ও বাসদ সোনারগাঁ উপজেলার সমন্বয়ক বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে পথসভাদুটিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির্র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল—বাসদ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ডাঃ মোশতাক হোসেন, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট মণ্টু ঘোষ, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবত্তীর্, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাংলাদেশ জাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সোলেমান দেওয়ান, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ফোরামের সদস্য সেলিম মাহমুদ, সিপিবি নেতা ইকবাল হোসেন, বাবুল, বাসদ নেতা এস এম কাদির, আনোয়ার খান প্রমুখ ।
নেতৃবৃ্ন্দ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুড়িং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানী আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে লিজ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। নিউমুড়িং টার্মিনাল বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল ও সবচেয়ে লাভজনক টার্মিনাল। বন্দরের প্রায় অর্ধেক মালামাল এ টার্মিনাল দিয়ে আসাযাওয়া করে। এটা বিদেশী কোম্পানীকে দেয়া মানে আমাদের অর্থনীতির উপর বিদেশী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হওয়া। এ কোম্পানী সাথে মার্কিন নৌবাহিনীর চুক্তি আছে। ফলে বন্দরে মার্কিন বাহিনী প্রবেশের সুযোগ তৈরি হবে। এটা বিদেশীদের দিলে জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অন্তবতীর্ সরকার মায়ানমারের রাখাইনে তথাকথিত মানবিক করিডোর দেয়ার পাঁয়তারা করছে। আন্তঃদেশীয় মানবিক করিডোর ও বিদেশী কোম্পানীকে বন্দর লিজ দেয়ার মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে কোন রকম আলোচনা ও সম্মতি ছাড়া অনির্বাচিত অন্তর্বতীর্ সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ জাতিকে নিয়ে পাশা খেলার সামিল। কোন শর্তে করিডোর? রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে কী মনোভাব? আরাকান আর্মির সাথে এ বিষয়ে কোন যোগাযোগ হয়েছে কীনা? মায়ানমার সরকার বিষয়টি কীভাবে দেখবে? তাদের সাথে সরকারি পর্যায়ে কোন আলোচনা হয়েছে কীনা? চীন এটাকে কীভাবে নিবে এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা জাতির সামনে পরিষ্কার করা উচিত। বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার যেমন সাম্রাজ্যবাদী ভারতের স্বার্থে
দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছিল। ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বতীর্ সরকারও কি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে রাখাইনে মানবিক করিডোর দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের ক্রীড়নক হিসেবে বাংলাদেশকে গাজা, ইউক্রেন, ইরান
বানাতে চাইছে?
নেতৃবৃন্দ কথিত মানবিক করিডোর প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল, নিউমুড়িং টার্মিনাল বিদেশীদের দেয়া এবং কাতার ও তুরস্কের সামরিক সরঞ্জাম কারখানা আমাদের দেশে স্থাপনের প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য অন্তর্বতীর্ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
