সোনারগাঁয়ে গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সোনারগাঁও উপজেলায় গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের তিন শিশুসহ পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কাঁচপুর এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দগ্ধদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান।
দগ্ধরা হলেন মানব চৌধুরী (৪০), তার স্ত্রী বাচা চৌধুরী (৩৮) এবং তাদের তিন মেয়ে— মুন্নী (১৪), তিন্নি (১২) ও মৌরী (৬)।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান, মানব চৌধুরীর শরীরের ৪৫ শতাংশ, তার স্ত্রীর ৭০ শতাংশ, মৌরীর ৩৬ শতাংশ, মুন্নীর ২৮ শতাংশ এবং তিন্নির ২২ শতাংশ পুড়ে গেছে।
প্রতিবেশী সবিনয় দাস, যিনি আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন, তিনি জানান, ওই পরিবারটি কাঁচপুর বিসিক এলাকার একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলায় থাকত। ভোরবেলা আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং অন্যদের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সবিনয় দাস বলেন, “ওদের গ্রামের বাড়ি আর আমাদের গ্রামের বাড়ি একই এলাকায়। মানব একটি ওষুধ কোম্পানিতে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কাজ করে। তাদের একটাই ঘর, সেটার ভেতরেই রান্নাঘর ও বাথরুম। আগুনের খবর পেয়ে সেখানে যাই। তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসি। আগুন কীভাবে লেগেছে জানি না, তবে শুনেছি গ্যাসের লিক থেকে আগুন ধরেছিল।”
তিনি আরও জানান, আহতদের কারও অবস্থাই ভালো না এবং চিকিৎসকরা রক্তের জন্য বলেছেন।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কাঁচপুর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, ঘরের ভেতরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের লাইন থেকে গ্যাস লিক হয়ে ঘরে জমা হয়েছিল। ঘরটির দরজা-জানালা রাতে বন্ধ থাকায় গ্যাস বের হতে পারেনি এবং একটি চেম্বারের মতো তৈরি হয়। ভোরে কোনোভাবে আগুনের সংস্পর্শে আসতেই এই বিস্ফোরণ ঘটে।
তিনি আরও বলেন, “নিচতলার ঘর হওয়ায় চুরির ভয়ে হয়তো রাতে দরজা-জানালা বন্ধ ছিল। সিলিন্ডারের লাইনের লিকেজ থেকে ঘরে গ্যাস জমে যায় এবং ভোরে আগুনের কোনো উৎস পেয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।”