রবিবার, জুলাই ২৭, ২০২৫
Led02বিনোদন

‘সেরা রাঁধুনী সিজন ৮’ এর মুকুট না.গঞ্জের নিশাত আনজুমের মাথায়

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দীর্ঘ কয়েক মাসের তীব্র প্রতিযোগিতা, নাটকীয়তা আর রান্নার বৈচিত্র্যময় চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে অবশেষে শেষ হলো দেশের জনপ্রিয় কুকিং রিয়্যালিটি শো ‘সেরা রাঁধুনী সিজন ৮’। আর এই জমকালো আসরে চূড়ান্ত বিজয়ীর মুকুট ছিনিয়ে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের নিশাত আনজুম শুধু নিজেরই নয়, গোটা জেলার নাম উজ্জ্বল করেছেন। তার অসাধারণ রন্ধনশৈলী আর সৃজনশীলতা জয় করেছে বিচারকদের মন, এনে দিয়েছে কাঙ্ক্ষিত বিজয়।

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘রাঁধুনী’-এর সৌজন্যে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার ৮ম আসর শুরু হয়েছিল গত বছরের ৫ নভেম্বর, এক বর্ণাঢ্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে। ‘সেরা রাঁধুনী সিজন ৮’ আগের যেকোনো আসরের চেয়ে আরও বড় পরিসরে সাজানো হয়েছিল, যেখানে প্রতিযোগীদের মুখোমুখি হতে হয়েছে সর্বাধিক সংখ্যক থিম-ভিত্তিক চ্যালেঞ্জের। ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’, ‘সি-ফুড চ্যালেঞ্জ’, ‘রেস্টুরেন্ট চ্যালেঞ্জ’ এবং ‘মেগা কিচেন চ্যালেঞ্জ’-এর মতো কঠিন সব পরীক্ষায় তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর বিচারকদের স্কোরে সবার সেরা হয়ে উঠে এসেছেন নিশাত আনজুম।

তার সাথে চূড়ান্ত পর্বে লড়েছিলেন বগুড়ার তামান্না ইয়াসমিন, যিনি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন, এবং নওগাঁর জুয়াইরিয়া কামাল, যিনি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন।

এবারের সিজনে ‘এই তো বাংলার স্বাদ’, ‘স্বাদের বিশ্বভ্রমণ’, ‘মিষ্টিমুখ’, ‘চোখ বুজে-স্বাদের খোঁজে’, ‘জাস্ট বেক ইট’-এর মতো পরিচিত চ্যালেঞ্জগুলোর পাশাপাশি ছিল নতুন সংযোজন ‘মিডনাইট ক্রেভিং’, ‘ফিশ ফিউশন’, ‘মসলার মাস্টার’ কিংবা ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ চ্যালেঞ্জ। এই সব চ্যালেঞ্জে প্রতিযোগীদের দক্ষতা যাচাই করেছেন শেফ নাঈম আশরাফ, রন্ধনবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা রীতা, এবং অভিনেত্রী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব দিলারা হানিফ পূর্ণিমা।

জমকালো গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে স্কয়ার গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা, তিন বিচারক, ৫ মেন্টর এবং বিগত মৌসুমগুলোর শীর্ষ রাঁধুনীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সেক্টরের তারকারা। পুরো আয়োজনকে আরও জমকালো করে তুলতে মঞ্চ মাতান জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হৃদয় খান, ইমরান মাহমুদুল ও কনা। হৃদয় খানের পরিবেশনার সময় সেরা ২০ প্রতিযোগীকে দর্শকদের সঙ্গে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করেন সাদিয়া ইসলাম মৌ ও তার দল। অনুষ্ঠানের শেষভাগে দারুণভাবে মঞ্চ মাতিয়ে তোলেন অভিনয়শিল্পী তাসনিয়া ফারিন। গ্র্যান্ড ফিনালের আরেকটি বড় চমক হিসেবে সিজনের নিয়মিত উপস্থাপক মৌসুমী মৌয়ের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, যিনি স্বভাবসুলভ রসবোধ এবং অফুরন্ত প্রাণশক্তি দিয়ে পুরোটা সময় মাতিয়ে রেখেছিলেন সবাইকে।

অনুষ্ঠানের শুরুটা হয় স্কয়ার-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রবাদপ্রতিম স্যামসন এইচ চৌধুরীর জন্মশতবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার মো. পারভেজ সাইফুল ইসলাম, যিনি এই প্ল্যাটফর্মটিকে রাঁধুনীদের স্বপ্নযাত্রার একটি গন্তব্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

এবারের সিজনের বিজয়ী রাঁধুনী নিশাত আনজুম পেয়েছেন ১৫ লাখ টাকা ও সম্মাননা স্মারক। দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা, আর তৃতীয় স্থান অধিকারী পেয়েছেন ৫ লাখ টাকা ও সম্মাননা স্মারক। বিজয়ীদের হাতে ডামি চেক এবং সম্মাননা স্মারক তুলে দেন স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড-এর চিফ অপারেটিং অফিসার মো. পারভেজ সাইফুল ইসলাম, চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার আব্দুল্লাহ আল জাবেদ, হেড অফ মার্কেটিং ইমতিয়াজ ফিরোজ এবং তিন বিচারক। সেরা ২০-এর বাকি প্রতিযোগীদের হাতেও সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও, ৫ মেন্টর, তিন বিচারক এবং কনসালট্যান্ট শেফ শুভব্রত মৈত্র কৃতজ্ঞতা স্মারক পেয়েছেন।

নিশাত আনজুমের এই বিজয় নারায়ণগঞ্জের রন্ধনশিল্পের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, এবং তার সাফল্যে শহরবাসী গর্বিত।

RSS
Follow by Email