সিন্ডিকেটের দখলে বাজার: আয়ের চেয়ে দ্রব্যমূল্য বেশী, নাজেহাল মানুষ
# প্রশাসন বাজারে ঢুকলে ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে পালায়
# ছায়া তদন্ত থাকবে: ডিসি
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় কারণে অকারণে। কোনো একটি অজুহাত পেলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া হয়। কখনও রোজা, কখনও ঈদ বা কখনও জাতীয় বাজেট ঘোষণার কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করা এক নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক এবং আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের খারাপ অবস্থা।
বাজারে চাল, ডাল, তেল, নুন, পেঁয়াজ, শাকসবজি থেকে শুরু করে এমন কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নেই, যার দাম বাড়ছে না। নিম্নআয়ের মানুষ যা আয় করছে, তার পুরোটাই জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদির জন্য ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে থাকছে না। আয় যে হারে বেড়েছে, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য।
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ীদের সাথে সভা করেছেন প্রশাসন। ওই সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হত বলেছিলেন, আমি কিন্তু ছদ্মবেশে যাবো। আমি যে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি কেউ কিন্তু চিনবে না। আমি এবার অনেক জায়গায় ছদ্মবেশে বের হব। তারপরে দেখবেন হঠাৎ স্পেশাল পাওয়ারে মামলা হয়ে গেছে। প্রত্যেকটা দোকানে মূল্য তালিকা টানাতে হবে। মূল্য তালিকা যদি না টানায় তাহলে তার জরিমানা হবে।
তরাই ধারাবাহিকতায় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ পাইকারি ও খুচরা বাজার পরিদর্শন করেছেন। তবে প্রশাসের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে পালিয়ে গিয়েছে। এটি এক ধরণের চোর পুলিশের লুকোচুরি খেলা বলে মন্তব্য করেছে সাধারণ ক্রেতা।
সাধারণ ক্রেতারা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, এতো দাম কিভাবে আমরা খাবো, সব কিছুর দাম বেশী। লেবুর দাম বেশী তাই ইফতারে শরবত খেতে পারি না। প্রশাসনের পরিদর্শনের সময় বাজারের দোকান বন্ধ ছিলো। প্রশাসনের কর্তকর্তারা যে চেক করবে, অনিয়ম করছে কিনা সেটারও সুযোগ হয় নাই। তারা বাজার থেকে যাওয়ার পর আবার আগের মতো বেশী দামে বিক্রি করছে। ব্যবসায়ীরা সেন্ডিকেট করে বাজার চালায়। আমাদের দাবি যাতে গরীব দুঃখিরা কম দামে খেতে পারে।
বাজার করতে আসা সৌদ আমিন নামে এক ক্রেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, প্রশাসনের উদ্যোগকে আামি সাধুবাদ জানাই। কিন্তু এমন অভিযান করে কোন লাভ হয় না সাধারণ মানুষের। কেননা প্রশাসন বাজারে ঢুকার সাথে সাথে বাজারের ব্যবসায়ীরা সতর্ক হয়ে যায়। অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়। এতে করে প্রশাসন ওই দোকানটা বাদ দিয়ে অভিযান চালায়। এতে করে দোকানদার পার পেয়ে যায়, আবার সেই আগের মতো করে অনিয়ম করে বিক্রি শুরু করে।
এ বিষয়ে লাইভ নারায়ণগঞ্জের এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হক বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করেছি, যাতে রমজানে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। কোন ব্যবসায়ী যাতে অসাধু উদ্দেশ্যে মূল্য বৃদ্ধি না করতে পারে সেই বিষয়ে আমাদের মনিটরিং অব্যহত থাকবে। আমরা বাজারে আসলে কিছু দোকানদার পালিয়ে যায়, তাদের হয়তো কোন অনিয়ম থাকতে পারে। আমাদের প্রশাসনের ছায়া তদন্ত থাকবে, এছাড়া পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থারা থাকবে। সবাই তদন্ত করে দেখছে কেউ বাজারে পন্য দাম বৃদ্ধি করে কিনা।