বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
জেলাজুড়েরাজনীতিসদর

সরকার প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখ্যানে করে জেলা বাসদের মানববন্ধন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: অর্থবছর ২০২৪-২৫ সালের সরকার প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছে জেলা সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। বুধবার (১২ জুন) বিকাল ৫ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে জেলা বাসদের আহ্বায়ক নিখিল দাসের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, বাসদ ফতুল্লা থানার সদস্যসচিব এস এম কাদির।

এসময় বক্তব্য নিখিল দাস বলেন, ২০২৪—২৫ অর্থবছরের বাজেট সংকটের চক্রে ঘূর্ণায়মান দিশাহীন বাজেট। অতীতের অর্থনৈতিক সংকটের কারণ চিহ্নিত করে দূর করার কোন দিক নির্দেশনা এ বাজেটে না থাকায় অর্থনীতি সংকটের চক্রেই ঘুরপাক খেতে থাকবে। সরকারের দুর্নীতি, অপচয় ও লুণ্ঠনমূলক নীতির দায় জনগণের উপর চাপিয়ে কর ও ভ্যাট বৃদ্ধির বাজেট জনজীবনে দুর্ভোগ আরও বহুগুণ বাড়াবে।

নিখিল দাস আরও বলেন, ২ লক্ষ ৫৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি বাজেটে দেশি বিদেশি ঋণের উপর নির্ভর করা হয়েছে। তাই বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের জন্যই ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অর্থাৎ মোট বাজেটের ৭ ভাগের একভাগ বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী তিন মাসেই ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। গত মার্চের শেষে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৯ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ বাস্তবে সাড়ে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। একদিকে ঋণ খেলাপি বাড়ছে অন্যদিকে সরকার বাজেটে দেশের ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্থ হবে। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, টাকার অবমূল্যায়, মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি বিবেচনায় নিলে বাজেটে শিক্ষা—স্বাস্থ্য—কৃষি এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতেও বরাদ্দ বাস্তবে বাড়েনি বরং কমেছে। টাকার অংকে সামাজিক সুরক্ষা খাতে ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও বাস্তবে তা পেনশনভোগী, উপবৃত্তি ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতায় চলে যাবে। উপরন্তু কৃষি খাতে ভতুর্কীতে ২৩—২৪ অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। মুঠো ফোনে ১০০ টাকার টক টাইম পেতে এখন গ্রাহককে দিতে হবে ১৩৯ টাকা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বাজেটে শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিশ্চয়তার জন্য রেশনিং এর জন্য কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি। বাজেটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্নীতি রোধে কোন কার্যকর দিক নির্দেশনা নাই। যেখানে আজিজ, বেনজির, আনার কাণ্ডে সরকারের দুর্নীতির ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে সেখানে এবারেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে দুর্নীতিকে আরো উৎসাহিত করার ব্যবস্থা হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ এবারের বাজেটকে গতানুগতিক ও ঋণনির্ভর ঘাটতি বাজেট প্রত্যাখ্যান করে গরীব মেহনতি মানুষের পক্ষে গণমুখী বাজেট প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ ঈদের আগে শ্রমিকদের চলতি বেতন, পূর্ণ বোনাস ও সকল বকেয়া
পরিশোধের দাবি জানান।

RSS
Follow by Email