রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
Led04রাজনীতি

সরকার গ‌দি টিকি‌য়ে রাখ‌তে বাংলা‌দেশ নি‌য়ে বা‌জি ধর‌ছেন: জোনায়েদ সাকি

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বাংলাদেশে এখন যে শাসন ব্যবস্থা চলছে, এটা একটা ফ্যাসিস্ট বন্দোবস্ত। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বলেছেন আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। আমি বাংলার মানুষের অধিকার চাই। কিন্তু ১৯৭২ সালের সংবিধানে এসে দেখা গেলো, মানুষের অধিকারের কথা এক ভাবে বলা হয়েছে, আর মানুষের ক্ষমতার কাঠামো আরেকভাবে তৈরী করা হয়েছে।যেখানে যে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সে সব ক্ষমতাকে কেড়ে নিতে পারবেন। বাংলাদেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট তৈরী করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাচ্ছে। এটা হলো মানুষের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেয়া। এখন একটু বিদেশী চাপ রয়েছে। উনারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের যেমন বোকা ভাবেন তেমন বিদেশীদেরও বোকা ভাবেন। সাইবার সিকিউরিটি এক্ট দিলে যেনো বদলে গেলো।গতকাল এই আইন পাশ করিয়ে ফেলছে। আসলে তেমন কিছুই বদলায় নাই। একটা ধারায় জামিন অযোগ্য ছিলো সেই ধারায় জামিন দিয়েছেন। এছাড়া মানহানির মামলায় কারাদন্ড বদলে অর্থদন্ড করা হয়েছে, অর্থ না দিতে পারলে আবার কারাদন্ড আছে। এই পরিবর্তন হলো একটা লোক দেখানো পরিবর্তন। মানে আমরা কিছু একটা বদলেছি।

শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নগরীর আলী আহম্মদ চুনকা পাঠাগারে আয়োজিত গণসংহতি আন্দোলনের ২১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলে, নারায়ণগঞ্জের একজন সংসদ সদস্য (শামীম ওসমান) প্রায় ‘খেলা হবে’ বলেন। এটা এখন আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগানে পরিনত হয়ে গেছে। ওনাদের খেলা হবে তো দেখেছি, নারায়ণগঞ্জকে কিভাবে গুম-খুনের শহর বানিয়েছে। কিভাবে ত্বকীর মত মেধাবী কিশোররা এদেশে লাশ হয়ে পড়ে থাকে। ওনাদের খেলাটাই আসলে এরকম। স্টেডিয়ামের মধ্যে ওনারা একা একা খেলেন, গোল দিতেই থাকেন। আর বিরোধীরা স্টেডিয়ামের বাইরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আছেন। উনাদের পিছনে পুলিশ-গুন্ডা বাহীনি না থাকলে উনাদের কাপড় ভিজে যায়। আমাদের দেশে সবাইকে নিয়ে একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা খুবই জরুরি। সেইখানে এই সরকার এমন এক রাষ্ট্র কায়েম করেছে যেখানে নিজের ক্ষমতা রক্ষা করতে গিয়ে দেশের সংখ্যা গরিষ্ট মানুষদেরকে, সমস্ত রাজনৈতিক বিরোধীদের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। ওনাদের পেছনে পুলিশ, গুন্ডা বাহীনি। এগুলো না থাকলে, ওনাদের কাপর ভিজে যায়। এইতো খেলা ওনাদের। এই খেলা দিয়ে বেশিদিন যাওয়া যাবে না। ওনারা সচেতন ভাবে রাষ্ট্রের মধ্যে বিভাজন তৈরি করছেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ। বিরোধীতা করলেই পাকিস্তান পন্থি। এই ট্যাগিং দিয়ে তাদের এই ফ্যাসিবাদটাকে জায়েজ করেছে।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে কেনো ভোট ডাকাতি হলো, বিএনপি ৩-৪জন প্রার্থী দিয়েছেন। এমন ফেসিস্ট ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখে বাংলাদেশ আর এগিয়ে যেতে পারবে না। রাষ্ট্রের বিভিন্ন যে প্রতিষ্ঠান পুলিশ প্রশাসনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, আদালত পর্যন্ত। তারা (আওয়ামী লীগ) তাদের নিজেদের স্বার্থে ও বিরোধী দলকে দমানো জন্য ব্যবহার করছে সেটা আমরা দেখেছি। এদেরকে সরকার অবাধে দুর্নীতি, লুটপাট করার সুযোগ দিয়েছে। মানে লুট পাটের একটা ভাগিদার করে ফেলেছে। ভাগ বাটওয়ারা দিয়ে রাষ্ট্রকে একটা সিন্ডিকেটে পরিনত করেছে, আমরা লুটেপুটে খাবো এবং একে অপরের রক্ষা করবো। ঠিক তারা এখন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতেই হবে।

তিনি বলেন, তারা বলে তারা দেশপ্রেমিক শক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, বলে আমেরিকায় যাওয়ার দরকার কি। এক সেলফিতেই কত বড় বিজয় অর্জন করে ফেলেছেন। সবাইকে আটলান্টিক পাড়ি দিতে নিষেধ করে এখন‌ নি‌জেই যা‌চ্ছেন আমে‌রিকায়। এখন বার বার বিদেশ সফর কতটা উনার গদি টিকিয়ে রাখতে চায় সেটা মানুষ বুঝে গেছে। সরকার গ‌দি টিকি‌য়ে রাখ‌তে বাংলা‌দেশ নি‌য়ে বা‌জি ধর‌ছেন। তাদের কোন পররাষ্ট্রনীতি নাই। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে আওয়ামী লীগের গদি টিকিয়ে রাখা। জনগণ‌কে য‌দি উজ্জ্বিবত শ‌ক্তি‌তে জাগা‌নো যায়, তাহ‌লে গণতন্ত্র রাষ্ট্র উপহার দেয়া যা‌বে

গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা সম্বয়ক তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে ও মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লবের সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, সমগীতের সমন্বয়ক শিল্পী অমল আকাশ, সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল প্রমুখ।

RSS
Follow by Email