‘সরকারী ও বোর্ডের এমন কোন আদেশ মানবো না যেটায় শিক্ষার্থীদের কষ্ট হয়’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা একেএম সেলিম ওসমান বলেন, এই কলেজের মূল ভবনটা ৮ তালা করা হবে। যদিও এই সিদ্ধান্ত দেওয়ার আমি কেউ না। তবে যদি বোর্ড বলে এবং আমার শিক্ষার্থীরা একমত হয় তাহলেই ৮ তালা ভবন করা হবে। সরকারি বা বোর্ডের এমন কোন আদেশ আমরা মানবো না যেটায় ছাত্র-ছাত্রীর কষ্ট হবে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমরা সিদ্ধান্ত ছাড়াও অনেক কাজ করেছি। সিদ্ধান্ত ছাড়াই এই কলেজে একটি সাত তালা ভবন করা হয়েছে সেটার জন্য কোন ফান্ড আনা হয়নি। শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে যে বেতন দিয়েছেন সেখান থেকেই জমিয়ে এই ভবনটা করা হয়েছে। শুনেছি এখনো ১১ কোটি টাকা হাতে আছে। তবে এই সুন্দর বিল্ডিং করার উদ্দেশ্য একটাই, আমরা যেন একটি সুন্দর মানুষ তৈরি করতে পারি।
মঙ্গলবার (১১ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কলেজ প্রঙ্গণে জেলা পরিষদের অর্থায়নে নবনির্মিত শহীদ মিনার, শেখ কামাল ভবনের অষ্টম তলার নির্মাণ কাজ, কলেজ শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ণে স্থাপিত ই-লাইব্রেরি কার্যক্রম ও জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কালচারাল ক্লাব ও স্পোর্টস ক্লাবকে সরঞ্জাম হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
বক্তব্য তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ কলেজে একটি শহীদ মিনার করা হয়েছে, এটা করার পরিকল্পনা ছিল ও চন্দন শীল সেটা করে দেখিয়েছেন। এখানে হাতেম সাহেবের যতটুকু সময় দেয়ার কথা ছিল কিন্তু সে ততটুকু সময় দিতে পারে না, কারণ করোনার পর থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ চলছে আর সেখানে হাতেম সাহেব সময় দেন। নারায়ণগঞ্জ কলেজ খেলাধুলায়, পরা লেখায় ভালো করেছে। এমন কিছু নেই যেখানে আমার নাতি-নাতনিরা ভালো করে নাই, তাদের জন্য উপহারের ব্যবস্থা করতে হবে। ওরা এখনো বাচ্চা, ওরা যেন আনন্দ করে পারে। আর ওদের এই আনন্দের জন্য নিয়ে কলেজে কালচার ক্লাব স্থাপন করা হয়েছে।
সেলিম ওসমান আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ কলেজ প্রতিটা বিষয়ের এগিয়ে আছে। হয়তো শতভাগ এগোতে পারেনি কিন্তু ৯৫ শতাংশই তারা এগিয়ে আছে বলে আমি মনে করি। চোখকে পরিষ্কারভাবে ব্যবহার করতে হবে ও কান দিয়ে ভালোভাবে শুনতে হবে, এরপর মগজ দিয়ে আমরা কিছু বের করবো এবং সেটাই হবে আসল শিক্ষা। আমি প্রিন্সিপালের কাছে অনুরোধ রাখতে চাই, এখানে যেন বিজ্ঞানমেলা করা হয়। আপনারা বিজ্ঞানমেলার আয়োজন করেন। বিজ্ঞানমেলায় এসেও অনেক কিছুই জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
সংসদ সদস্য বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী রাহাত বক্তব্য দিয়ে গেছে। রাহাতের বিষয়ে আগেও আমি এই কলেজের অধ্যক্ষের কাছে অনুরোধ করে গিয়েছিলাম, ওর কাছ থেকে কলেজের বিষয় যেন কোন টাকা দেওয়া না হয়। রাহাতের পরিবার চলতেও কষ্ট হয় তাই আমি আজ ঘোষণা দিয়ে গেলাম, যদি রাহাত আমার সাথে আগামীকাল দেখা করে, তাহলে আগামীকাল থেকেই সে চাকরিতে জয়েন করতে পারবে। আমার একটি পা ভেঙেছে এতেই আমার এত কষ্ট, কিন্তু আল্লাহ রাহাতকে কত কষ্ট দিয়েছেন তারপরও সে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে। রাহাত শারীরিক প্রতিবন্ধকতার স্বীকার হয়েও একটা কথা বলেছে, আমি চাকরি করতে চাই কিন্তু কারো কাছে হাত পাতবো না। রাহাতের জন্য এমন ব্যবস্থা করা হবে যাতে সে তার পরবিারের খরচ নিজে অর্জন করতে পারে এতে ওর কারো কাছে হাত পাততে না হয়। আমার এই কলেজে একটি চাহিদা ছিল ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সের। এই কলেজে চায়না, আরবি, ইংলিশ ভাষার ওপর ল্যাংগুয়েজ কোর্স চালু করা উচিত। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারে সম্পূর্ণ দক্ষ করতে হবে। বিল্ডিং বানিয়ে কি হবে যদি মানুষ না বানাতে পড়ি। আমি অনুরোধ করবো যে ফান্ড আছে সেটা দিয়েই কোর্সগুলো চালু করার জন্য। এরপর যদি আমাদের কাছে অর্থ থাকে তাহলে আমরা বিল্ডিং বানানোর কাজে চলে যাবো। প্রতিটা বাচ্চাকে একটা মুরগি, একটা গরু, একটা ছাগল এক জোড়া কবুতর পালনা কিভাবে করে সেটা জানতে হবে।
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ কলেজের গর্ভনিং বডির সভাপতি ও বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের সভাপতিত্বে ও নারায়ণগঞ্জ কলেজের শিক্ষক আরিফ মিহির’র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধক্ষ্য ড. রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ কলেজের সাবেক অধক্ষ্য (ভারপ্রাপ্ত) হরমুজ আলী, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোদাচ্ছেরুল হক দুলাল, নারায়ণগঞ্জ কলেজ গভনিং বডির প্রাক্তন সদস্য ফারুক বিন ইউসুফ পাপ্পু, সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না প্রমুখ।