সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির জনসভা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সন্ত্রাস, লুটপাট, নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে জনসভা করেছে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মাসদাইর বেকারির মোড় এলাকায় এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এস এম মাহামুদুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি।
জনসভায় সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, যারা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম করবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মানুষ যাকে ভালেবাসবে সেই বিএনপি নেতা হবে। এখানে শামীম ওসমান রাজনীতি করেছেন, অনেকের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন। আমি কারো হাতে একটি লাঠিও তুলে দিবো না। কোনো সন্ত্রাসীর ঠাঁই বিএনপিতে হবে না। প্রশাসন অস্ত্র খুঁজে পায় না। তাদের বলবো দৈনিক পত্রিকাগুলে দেখুন। সেখানে দেখেন কারা অস্ত্র ব্যবহার করেছিল। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কারা গুলি করেছিলো। সেসব অস্ত্র উদ্ধার করুন। নয়তো মানুষের কাছে আপনাদের ইমেজ পুনরুদ্ধার হবে না। আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। হত্যা নির্যাতন মিথ্যা মামলা দেয়ে স্বৈরশাসক তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। গত ষোল বছর পুলিশ দিয়ে গুলি চালিয়ে আন্দোলন দমন করতে চেয়েও পারেনি। ছাত্র জনতার বুকে নির্মম গুলি চালিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। ৫ আগস্ট বোনকে নিয়ে স্বৈরশাসক হসিনা পালিয়ে গেছে। নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েও আমরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাইনি। আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। এখানে একজন গডফাদার ছিলো। ৫ আগস্ট সেও পালিয়েছে। তিনি কিন্তু তার কোনো কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে করে নেননি। এবার আপনারা ভেবে দেখুন আপনারা এতদিন কার সঙ্গে ছিলেন। আমরা কখনও দেশ ছেড়ে যাইনি। কখনও যাবো না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিতে নতুন করে কাউকে আমদানি করতে হবে না। কারো অত্মীয় স্বজন যদি আওয়ামী লীগ করে তাকে যদি সাপোর্ট করতে চান তাহলে আপনাকেও ছাড় দেয়া হবে না। আমি যতদিন এই দায়িত্বে থাকবো ততদিন পর্যন্ত এমন কোনো অনৈতিক কাজে কেউ জড়িত থাকলে তাকে ছাড় দিবো না। বিগত সময় স্বৈরশাসকের কারণে পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছে। আমরদ পুলিশকে সাহায্য করতে চাই। সেকারণে আপনাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আবারও যদি আপনারা ঘুষ বাণিজ্যে লিপ্ত থাকেন, মানুষের সেবা না করেন তাহলে মানুষ আপনাদের আবারও দূরে সরিয়ে দিবে। সর্বোচ্চ টেক্স দেয়া হয় এই ফতুল্লা থেকে। ফতুল্লা একটি শিল্প অধ্যুষিত এলাকা। কিন্তু সেভাবে এই এলাকার উন্নয়ন হয়নি। আমারা চাই এই এলাকাকে সিটির অন্তর্ভুক্ত করে এই এলাকার উন্নয়ন করতে হবে।
কোনো ভাইয়ের রাজনীতি না করার আহ্বান জানিয়ে গিয়াসউদ্দিন বলেন, স্লোগান হবে একমাত্র জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া আর তারেক রহমানের। রাজনীতি করতে হবে তাদের। আমার ছবি দিয়ে কেনে ব্যানার ফেস্টুন করবেন না। এসব দেখলে মানুষ ভয় পায়। আপনাকে যদি মানুষ ভয় পায় তাহলে আপনি যত বড় নেতা হোন তাকে সঙ্গে নেয়া হবে না। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।
মশিউর রহমান রনি বলেন, আমি নিজেও গুমের শিকার হয়েছিলাম। প্রশাসন দিয়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাদের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন সাহেবও নিজেও নির্যাতনের শিকার। তার সন্তানেরাও নির্যাতিত। তারপরও আমরা আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে যাইনি। গিয়াসউদ্দিন সাহেব একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি হার না মানা মানুষ। তারেক জিয়ার পরিক্ষীত সৈনিক। সে হিসেবে তাকে জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি যখন যে অবস্থাতে আমাদের ডাক দিয়েছেন তার নেতৃত্বে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছি। জীবন বাজী রেখে গিয়াসউদ্দিনের নেতৃত্বে আমরা রাজপথে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছি।
গিয়াসউদ্দিনকে সাংগঠনিক অভিভাক হিসেবে উল্লেখ করে রনি আরও বলেন, গডফাদার শামীম ওসমান নিজেই নিজেকে ভোট দিয়ে এমপি হয়েছিলেন। তিনি বিগত সময়গুলোতে নারায়ণগঞ্জের মানুষকে শান্তি দেন নাই। এখানে হাজার হাজর মানুষ এসেছে। কাউকে ধমক দিয়ে, টাকা দিয়ে আনা হয়নি। বিগত সময়ে ধমক দিয়ে, টাকা দিয়ে মানুষকে জোর করে সমাবেশগুলোতে নিয়ে যাওয়া হতো। সেদিন আর নেই। কোন জোর জুলুম আর চলবে না। এই মাসদাইরের মাটিতে আর কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলবে না।
ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. বারী ভুইয়া, সিনিয়র সহ সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম, ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ সভাপতি নাজির আহাম্মেদ, আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্লাল হোসেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাসান আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তার খন্দকার, কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মঈনুল ইসলাম রতন, ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশ, ফতুল্লা থানা যুবদলের আহবায়ক মাসুদুর রহমান মাসুদ।