শনিবার, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫
Led01স্বাস্থ্য

সংকট কাটিয়ে না.গঞ্জে এসেছে ইপিআই টিকা

# যথাসময়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম, টিকা নেই বলে ফিরিয়ে দিয়েছে: ভুক্তভোগী
# কেন্দ্রীয়ভাবে ক্রয় জটিলতা ছিলো, না.গঞ্জে এই মুহুর্তে কোন সংকট নাই: ডা. মশিউর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শিশুদের সংক্রামক রোগগুলির বিরুদ্ধে টিকাদানের মাধ্যমে শিশু মৃত্যুহার কমানোর জন্য সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির পালন করা হয়। শিশু মৃত্যুর হার কমাতে ইপিআই টিকার সংকট ছিলো। ইপিআই টিকার সংকট বেশ কয়েক মাস ধরেই। হাসপাতাল বা টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে টিকা না পেয়ে ফিরে এসেছেন অনেকেই। কেন্দ্রে থেকেই মূলত টিকাদান কার্ডের সরবরাহ ছিলোনা। অথচ শিশুদের জন্য এই কার্ড অতিজরুরি একটি বিষয়। জন্মনিবন্ধন করাসহ জীবনের বৃত্তান্ত সংরক্ষণের দলিল হিসেবে কাজ করে এই কার্ড।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, শিশুদের টিকাগুলো সরকারি এবং বিদেশিদের দেওয়া অর্থে কেনা হয়। এখন টিকার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে টিকা ক্রয় সংক্রান্ত জটিলতা কেটেছে। সংকট কাটিয়ে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে যাচ্ছে ইপিআই টিকা।

নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জনের তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জে বর্তমানে কোন সংকট নেই। কেন্দ্রীয়ভাকে কিছুটা জটিলতা থাকলেও বর্তমানে তারা সেটা কাটিয়ে উঠেছেন।

১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের প্রতিটি শিশুর জন্য টিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইপিআইয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল এবং ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে বাংলাদেশে ইপিআই কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। পরে ১৯৮৫ সালে ইপিআই কার্যক্রম সারা দেশে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং জাতিসংঘের কাছে ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর জন্য টিকা নিশ্চিতকরণে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়। ঢাকা শহরে ইপিআই কার্যক্রম ১৯৮৯ সালে প্রাথমিকভাবে যাত্রা করে এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিভাগীয় শহরে বিস্তৃত কর হয়। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় গত ৪৫ বছরে বাংলাদেশ টিকাদান কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে এবং ভ্যাকসিন-প্রতিরোধযোগ্য রোগ (ভিপিডি) নির্মূল বা নিয়ন্ত্রণেও যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করতে সামর্থ্য হয়।

নগরীর গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা ও নবজাতকের বাবা জোনায়েদ আহমদ বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। যে টিকাদানে আমাদের সাফল্য বিশ্বস্বীকৃত, এখন সে টিকার যথাযথ সরবরাহ নেই। অবিলম্বে এ সমস্যার সমাধান হওয়া জরুরি। আমরা যথাসময়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তবে টিকা নেই বলে ফিরিয়ে দিয়েছে। শুধু আমাকে নয়, আমার সঙ্গে আরও কয়েকজনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরের সপ্তাহে গিয়ে টিকা দিতে পেরেছি।

ইপিআই কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন সময় (প্রাপ্যতা অনুযায়ী) যক্ষ্মা, ডিফথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, হুপিংকাশি, পোলিও, হেপাটাইটিস বি, হিমো-ইনফ্লুয়েঞ্জা বি, হাম ও রুবেলা এই ১০টি রোগের প্রতিষেধক টিকা প্রয়োগ করা হয়। টিকা প্রদানের পর নতুনদের পরবর্তী টিকাদানের তারিখ উল্লেখ করে টিকাদান কার্ড দেওয়া হয়। এছাড়া পুরাতনদের কার্ডে পরবর্তী টিকাদানের তারিখ উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি ১৫ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের ৫ ডোজ টিটি টিকা প্রদান করা হয়ে থাকে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মশিউর রহমান লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, এই টিকাটা মূলত ১০ রোগের প্রতিষেধক টিকা- যক্ষ্মা, ডিফথেরিয়া, ধনুষ্টংকার, হুপিংকাশি, পোলিও, হেপাটাইটিস বি, হিমো-ইনফ্লুয়েঞ্জা বি, হাম, রুবেলা ও হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি ভাইরাসের টিকা। যেটা মূলত ১০ বছরের বাচ্চাদের দিয়ে থাকি।

তিনি জানান, আলহামদুলিল্লাহ বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে আমাদের কোন সংকট নাই। আমাদের কিছু সর্টেজ ছিলো কিন্তু আমরা সেটা কাভার করে ফেলছি। কেন্দ্রীয়ভাবে একটা ক্রয় জটিলতা ছিলো, কিন্তু সেটা এখন আর নেই। আমাদের নারায়ণগঞ্জে এই মুহুর্তে কোন সংকট নাই। সংকট ছিলো পেন্টা ও পিসিভি টিকার, তবে সেটাও এখন আছে আমাদের কাছে।

RSS
Follow by Email