শনিবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
সদর

শ্রমিক ছাটাই-নির্যাতন বন্ধসহ ১৮দফা দাবিতে নগরীতে মানববন্ধন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নিত্য পণ্যের দাম কমাও, সিন্ডিকেট ভাংগো, রেশনিং ব্যবস্থা চালু করো, শ্রমিক ছাটাই-নির্যাতন বন্ধসহ ১৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলা গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির আহ্বায়ক শ্রমিক নেতা আব্দুল আল মামুন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মেহেদী হাসান উজ্জলের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার কার্যকরী সদস্য জননেতা আলমগীর হোসেন আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ-সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা ইউশা ইসলাম, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রচার সম্পাদক শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন ফতুল্লা থানা কমিটির আহবায়ক জননেতা জাহিদ সূজন বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলন সোনারগাঁও থানার প্রধান সংগঠক মোবাশ্বির হোসেন।

এসময় গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির কার্যকরী সদস্য আলমগীর হোসেন আলম তার বক্তব্য বলেন, “৫ আগষ্টের গণঅভ্যূত্থানের আগে আমরা যে জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছিলাম আজ অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে ঠিক সেই জায়গায় সেই আগের দাবি নিয়ে আবারো প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের ৬ মাস পরেও আমরা এই রাষ্ট্রের শিক্ষা চিকিৎসা কিংবা বাজার ব্যবস্থা কোন জায়গায় পরিবর্তন দেখতে পারছি না। যে পরিবর্তন ঘটেছে তা হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমান এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার ছবির পরিবর্তে এখন অন্য নেতাদের ছবি ঝুলছে। ২০০০ ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময় ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পরে মানুষের যেই মুক্তির আকাঙ্ক্ষা যেই বেচে থাকার আকাঙ্ক্ষা তা বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পারি ধীরে ধীরে যত দিন যাচ্ছে ততই মানুষজন হতাশ হচ্ছে। আজকে নতুন চাল এসেছে নতুল ফসল উৎপাদন হয়েছে তাও জনগণের ক্র‍য় ক্ষমতার কারণ সেই সিন্ডিকেট এখনো বহাল আছে। মাফিয়া সিন্ডিকেটের যে সংস্কৃতি বাংলাদেশে চালু হয়েছে তার কোন পরিবর্তন হয়নি।
তিনি আরো বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালিন সরকারকে বলতে চাই অনতিবিলম্বে সিন্ডিকেট নির্মূল করার ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এবং দেশের মানুষের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন দেশের মানুষকে বুঝার চেষ্টা করুন। যেই ব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে হাজার হাজার মানুষ জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিল এই ব্যবস্থা পরিবর্তন করুন। আমরা আরো দেখতে পাচ্ছি উপদেষ্টারা উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিচ্ছেন তার নিন্দা জানাই। গার্মেন্টসে যে সকল শ্রমিকের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে তা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। যে সকল শ্রমিকদের রক্তে ঘামে এই দেশের অর্থনীতি টিকে আছে তাদেরকে তাদের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে এবং শ্রমিকদের প্রাণের ১৮দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।”

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি’র আহবায়ক আব্দুল আল মামুন বলেন, “আমরা যেই ১৮দফা দাবি তুলেছি তা অত্যন্ত যৌক্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত। আমরা বলছি নিত্যপণ্যের দাম কমাও,সিন্ডিকেট ভাঙ্গো এবং রেশনিং ব্যবস্থা চালু কর। আজকে আমরা দেখতে পারছি যেভাবে সরকারি চাকরিজীবীরা পূর্ববর্তী সময়ে ঘুষ খেয়েছেন এখন তা গার্মেন্টসগুলোতেও শুরু হয়েছে। আমরা দেখতে পারছি গার্মেন্টস গুলোর পিএম জিএম’রা ২০০০-৩০০০ হাজার টাকা করে শ্রমিক দের থেকে নিয়ে তাদের নিয়োগ দিচ্ছে এবং টার্গেটের নামে তারা শ্রমিকদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে আমরা এই সমাবেশ থেকে এই সকল বিষয়ের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এছাড়াও আমরা দেখতে পারছি গার্মেন্টস এলাকায় চাঁদাবাজি,সন্ত্রাসী এবং ছিনতাইকারীর উৎপাত বেড়ে গিয়েছে তাও প্রশাসনের কোন ধরনের কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। আমরা এই সমাবেশ থেকে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আরো দেখতে পারি যেই সকল শ্রমিকরা নিহত হয়েছেন আহত হয়েছেন তাদের পূর্ণ ক্ষতিপূরণ এবং চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আহবান জানাই এই বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে। এবং আমরা পূর্ববর্তী সময়ে যে দাবি উত্থাপন করেছিলাম মজুরি বৃদ্ধিসহ যে অন্যান্য দাবি ছিল তা প্রত্যেকটি গার্মেন্টসে বাস্তবায়ন করতে হবে। নারায়ণগঞ্জ সহ সারা বাংলাদেশে শ্রমিকদের উপর যেই সংগঠিত নির্যাতন চলছে তা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার আহবান জানাচ্ছি আমরা।”

RSS
Follow by Email