শোকজের ব্যাখ্যা দিতে এসে শামীম ওসমান ‘ইসি প্রমাণ করেছে, তারা স্বাধীন’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, শুধু নির্বাচনি প্রার্থীদের নয়; যারা নির্বাচনকে বন্ধ করার জন্য সারা দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়। যাতে জনগণ নিজ ইচ্ছায় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে, ভোট দিতে পারে। আমরা এরকমই একটি নির্বাচন কমিশনের আশা করেছিলাম।
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম ওসমানকে শোকজ করেছিলো নির্বাচন কমিশন। নারায়ণগঞ্জ ২য় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ও অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তা কাজী ইয়াসিন হাবীবের কাছে রোববার (৩ ডিসেম্বর) আদালতে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে সেই শোকজের ব্যাখ্যা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
শোকজের বিষয়ে শামীম ওসমান বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাকে একটি নোটিশ দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াত সারা দেশে যে অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্য চালাচ্ছে তার প্রতিবাদে আমার আসনের বিভিন্ন এলাকায় শান্তি মিছিল করা হয়েছে। সেই শান্তির প্রতীক নৌকা। যখন নির্বাচন থাকে না, তখনও কিন্তু মিছিলের মধ্যে নৌকা শব্দটি আসে। সেখানে কোথাও কোথাও নৌকার স্লোগান দেওয়া হয়েছে। আমি নির্বাচনের আইন মানার চেষ্টা করেছি। তাই মনোনয়ন দেওয়ার সময় আমি একা এসেছি, আমার সাথে আমার ছেলে এসেছিলো। নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছেন যে, জাতির পিতার কন্যার অধীনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। অনেকে দেশে-বিদেশে এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। আমি কখনো দেখি নাই যে, একটা পত্রিকার রিপোর্টের কারণে প্রার্থীকে তলব করা হয়, তাও যেখানে প্রার্থী উপস্থিত নাই। সেই হিসেবে আমার এখানে দুঃখ পাওয়ার কথা, তবে আমি দুঃখ না পেয়ে আনন্দিত হয়েছি। নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে যে, তারা এতটা দক্ষ যাতে তারা বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে।
নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের এক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শামীম ওসমান বলেন, ‘নির্বাচনে দেখতে হবে যে, জনগণ অংশ নিচ্ছে কিনা। আমি এই মুহুর্তে আমার মনোনয়ন ছেড়ে দিবো যদি জাতিসংঘ ৩টি কাজ করতে পারে। প্রথমত, ইসরায়েলি ইহুদিরা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে সেটা যদি বন্ধ করতে পারেন এবং ফিলিস্তিনিদের যদি তাদের ভূমি ফিরিয়ে দিতে পারেন তাহলে আমি মনে করবো জাতিসংঘের এ ধরণের কথা বলার অধিকার আছে। দ্বিতীয়ত, ১২ লাখের উপরে রোহিঙ্গা আজ ১০ বছর ধরে বাংলাদেশে আছে। বাংলাদেশকে কোন মানবতা কিনবা আইন শেখানোর আগে জাতিসংঘকে অনুরোধ করবো, প্রথমে এই পদক্ষেপ নেন; যাতে ১২ লাখ লোক তারা নিজের ভূমিতে ফিরে যেতে পারে। আমার শেষ প্রশ্ন থাকবে ওনারা রাজনৈতিক দলের ব্যাখ্যা কাকে বলবেন। যারা ২০১৪-১৫তে এত গুলো মানুষ পুড়িয়ে মারলেন, এতগুলো বাস জ্বালালেন, গাড়ি পোড়ালেন; তাদের কে রাজনৈতিক দল বলবেন, নাকি সন্ত্রাসী দল বলবেন।
তিনি আরও বলেন, এই কাজ গুলো যদি জাতিসংঘ করতে পারে তাহলে তারা আমাদের উপদেশ দিবেন, সেই উপদেশ আমরা মেনে নিবো। নাহলে তাদের বলবো, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছে, দাঁড়িয়ে থাকবে এবং পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের তরুণরা প্রমাণ করবে; যে বাংলাদেশে পৃথিবীর কারো কাছে মাথা নত করার জন্য সৃষ্টি হয় নাই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী এড. খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক এড. মোঃ মহসিন মিয়া প্রমুখ।