শেষ হয়নি ভূর্গভস্থ বৈদ্যুতিক লাইনের কাজ, যাতায়াতে নগরবাসীর ভোগান্তি
# ‘সড়ক ভালো করে মেরামত না করলে খানাখন্দ সৃষ্টি হবে’
# ৩ দিনের মধ্যে দুই সাব-স্টেশনে সংযুক্তকরণের কাজ শেষ হবে: ডিপিডিসি উপ-প্রকৌশলী
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নগরীর সলিমুল্লাহ সড়কে মাটি কেটে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার সংযোগের কাজ এখনও শেষ হয়নি। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সড়কটিতে কিছু জায়গায় বৈদ্যুতিক তার টানার কাজ চলমান রয়েছে। এর জন্য সড়কের কিছু অংশে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। যার ফলে চলাচলের পথ সংকুচিত হয়েছে। বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, অটোরিক্সা, মোটরসাইকেলসহ সব ধরণের যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়ছে নগরবাসী।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সলিমুল্লাহ সড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগে জান্নাত মসজিদের সামনে মাটি কেটে গর্ত করা হয়েছে। গর্তের ভিতর থেকে বৈদ্যুতিক তার সড়কের উপর পড়ে আছে, পাশেই মাটির স্তূপ জমে আছে। এর চারপাশে বেষ্টনী দেয়ায় সড়কের একটি অংশ যান চলাচলের জন্য অনুপযুক্ত হয়ে আছে। মিশনপাড়া, ডান চেম্বার হয়ে খানপুর পর্যন্ত দেখা য়ায়, সড়কের পূর্বের কাটা অংশ ভরাট করা হয়েছে। তবে সেই অংশে মাটি সড়কের চেয়ে কিছুটা নিচে। পথচারীদের মধ্যে কেউ কেউ চলার সময়ে হোচট খাচ্ছেন।
সাইফ নামে এক তরুণ লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ যেতে প্রতিদিন চাষাড়া থেকে অটোতে উঠি। বাগে জান্নাত মসজিদের সামনে রাস্তাটা ছোট হয়ে আছে। গত মাস থেকেই এমনটা দেখছি। বড় কয়েকটা বাস, প্রাইভেট কার আসলেই এইখানটাতে জ্যাম বাঁধে। অনেক জায়গায় মাটি-বালি দিয়ে গর্ত ভরাট করে দেয়া হয়েছে। এটা করলেই তো হলো না। রাস্তা ভালো করে মেরামত করতে হবে। নইলে ভারী যানের কারণে খানাখন্দ সৃষ্টি হবে। প্রশাসনের উচিত রাস্তা মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মিজান নামে এক চাকুরীজীবী লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, অক্টোবর থেকে দেখছি সলিমুল্লাহ সড়কে মাটি কেটে কাজ হচ্ছে। শুনেছি বৈদ্যুতিক লাইনের কাজ হচ্ছে। কিন্তু এর কারণে সড়কে যান চলাচলে বেশ ব্যাঘাত হয়েছে। গাড়ির চাপ বাড়লেই চাষাড়ার দিকে থেকে আসার সময়ে যানজট হয়। দুই লেনে গাড়ী যাওয়ার পথ এক লেন হওয়ায় যান চলাচলে ধীর গতি আসে। মাঝে মধ্যে, কয়েকটা গাড়ী সড়কের পাশে পার্ক করা হয়। মাটি কাটার কারণে গাড়ীগুলো গর্তের পাশে অর্থাৎ, সড়কের মাঝেই গাড়ী পার্ক করে। এ্রর কারণে ক্ষণিকের জন্য যানজট বাঁধে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সড়ক মেরামতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তবেই এই পথে যাতায়াতে আমাদের দুর্ভোগ দূর হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিপিডিসির ‘জিটুজি’ প্রকল্পের আওতায় চানমারির সাব স্টেশন থেকে ভূগর্ভস্থ তার এনে খানপুরের অপর এক সাব স্টেশনের সাথে যুক্ত করা হবে। সেপ্টেম্বর থেকে চানমারী থেকে লিঙ্ক রোডের পাশে মাটি কেটে ভূগর্ভস্থ তার সংযোগের ব্যবস্থার কাজ শুরু করা হয়। নভেম্বর মাসে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সলিমুল্লাহ সড়কে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ প্রসঙ্গে লাইভ নারায়ণগঞ্জের সাথে কথা হয় ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ দক্ষিণ বিভাগের উপ-প্রকৌশলী (এসএই) মাহফুজুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, চানমারি ও খানপুরে দুটি সাবস্টেশনে ভূগর্ভস্থ বৈদুত্যিক লাইন এর কাজ অনেকটাই সম্পন্ন হয়েছে। খানপুরে হাসপাতাল রোডের পাশে বিআরটিসি‘র বাস ডিপো থাকায়, দিনের বেলাতে কাজ করা যাচ্ছে না। এই অংশে ক্যাবল লেয়িং বা বিছানোর কাজ একটু ধীর গতিতে হচ্ছে। আজ রাতের দিকে এই অংশ লাইন লেয়িং শেষ হবে।
তিনি জানান, চাষাড়ায় সড়কের পাশে ক্যাবলগুলোর জয়েন্ট করার জন্য একটি অংশ খোলা রাখা হয়েছে। মূলত, দুই সাব স্টেশনের দিকে লাইন লেয়িং এর কাজ শেষ হলে সেখানে লাইনের জয়েন্ট দেওয়া হবে। পরে সেখানে গর্তগুলো ভরাট করে দেওয়া হবে। আমরা আশা রাখছি, ৩ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। আমরা বৈদ্যুতিক লাইনের কাজ শেষ করে মাটি, বালু দিয়ে ভরাট করছি। সড়কের দায়িত্বে যে অথোরিটি আছেন, তারা সড়ক মেরামতের কাজ সম্পন্ন করবেন।
এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. রেজাউল ইসলাম রাজু লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, সলিমুল্লাহ সড়কে জনদুর্ভোগ না হয়, প্রাথমিকভাবে সড়কের গর্তগুলো ভালো করে বালু দিয়ে ভরাট করে দেয়া হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য প্রকল্পের সাথে টেন্ডার দেয়া হলে সড়ক মেরামতের কাজ শুরু হবে। ঠিক কবে এই কাজ শুরু হবে তা আপাতত বলা যাচ্ছে না।