শুধু নিহত নয়, মানুষকে অন্ধ-পঙ্গু করার বিচারও করবো: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নের কথা তুলে ধরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জুলাই মাসের শহীদদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। সোমবার (১৪ জুলাই) নারায়ণগঞ্জে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ছাত্র-জনতা দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছেন, বৈষম্যমুক্ত করেছেন। তাদের ত্যাগের মাধ্যমে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি। এ জুলাইকে স্মরণ করে আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। জুলাইকে আমাদের সবসময় স্মরণ করতে হবে।” তিনি নারায়ণগঞ্জের শহীদদের কথা উল্লেখ করে বলেন, “নারায়ণগঞ্জে ৫৬ জন শহীদ হয়েছেন। বুলেটের সামনে সেদিন তারা বুক পেতে দিয়েছিল। এদের মধ্যে ২১ জন এ মাটির সন্তান। তাদের স্মরণে এবং তাদের পরিবার যে এতো বড় আত্মত্যাগ করেছে তা স্মরণে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। তারা এক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে জীবন দিয়েছিল। আর ওই উদ্দেশ্য হলো বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।”
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর উপায় হিসেবে তিনি বিচার নিশ্চিত করার কথা বলেন। তিনি বলেন, “তাদের শ্রদ্ধা করার একটি উপায় হচ্ছে দোষীদের বিচার কাজ নিশ্চিত করা। আর যেন বাংলাদেশের সরকার, বাংলাদেশের কোনো বাহিনী নিজ দেশের মানুষের ওপর গুলি চালাতে না পারে। আমরা এ বিচার প্রক্রিয়া সামনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা শুধু নিহত করার বিচার নয়, মানুষকে অন্ধ করার, পঙ্গু করার বিচারও করবো। মোটকথা যারা যৌক্তিক আন্দোলনে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ করেছে সে বিচার আমরা সম্পন্ন করবো।” পরিশেষে তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “আন্দোলনকারীদের আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল তা হলো দেশকে বৈষম্যমুক্ত করা। আর এটি করার একমাত্র উপায় হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। এর আগেও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করতে হয়েছিল। জুলাইতে যদি ছাত্র-জনতা বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে না দিতো, নির্ভীক না হতো তাহলে ৫ আগস্ট ঘটতো না।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা ও পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।