শামীম ওসমানের কথায় জেলা প্রশাসক বন্দুকের লাইসেন্স দিয়েছে: তরিকুল সুজন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, ৫ তারিখের আগে জনগণ কথা বলার নিরাপদে পথ চলার স্বাধীন মুক্তভাবে নিজের জীবন পরিচালনা করতে চাইতেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ বিএনপিসহ সকল বিরোধী দলের নামে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করেছে। আয়না ঘরের ঘটনা আমরা সবাই জানি। সেখানে মানুষকে বছরের পর বছর সেখানে গুম করে রাখা হতো। তারা এই ব্যবস্থা তৈরি করেছে প্রশাসনের সাহায্যে। প্রশাসনকে তারা সন্ত্রাসী বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছে। প্রশাসনের নিরীহ ছাত্রদের ওপর গুলি, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়েছে। জনগণের টেক্সের টাকায় গুলি কিনে সেই গুলি তারা জণগনের বুকের দিকেই তাক করা হয়েছে। তারা বাংলাদেশের জালিম সরকার। যখন তাদের বিরুদ্ধে জনগণ ফুসে উঠে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে তখনই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে একা পলিয়েছে। তারাই নারায়ণগঞ্জ এর পাসপোর্ট অফিস রাইফেল ক্লাব নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে হামলা চালিয়ে ছাত্রছাত্রী নাম দিয়েছে। হাসিনা আওয়ামী লীগকে নয় সারা দেশকে বিপদে ফেলে সে নিজে পালিয়েছে। আওয়ামীলীগ থাকাকালীন অবস্থায় যে দেশের যে ব্যবস্থা ছিল সেটার উৎখাত হয়েছে। এখন এই স্বাধীন বাংলাদেশে মানুষ নতুন স্বপ্ন দেখে। এই দেশে কেউ আর ৩য় শ্রেনীর মানুষ হয়ে থাকবে না। এ দেশের জণগন সকল অধিকারে সবাই সমান হবে। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ভেদাভেদ তুলে নিয়ে মানুষ হিসেবে সকলের প্রতিষ্ঠা হবে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকাল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্র জনতার হত্যার বিচার ও শহীদদের ক্ষতিপূরণসহ নানা দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে গণসংহতি আন্দোলন। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য এ কথা বলেন তরিকুল সুজন।
এসময় তিনি আরও বলেন, বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে চাল, ডাল, তেল ও নুনের দামে আগুন লেগেছে সেটা কমাতে হবে। আওয়ামীলীগের নেতারা সাধারণ জণগনের উপর বন্দুক চালিয়েছ। এই গুলি ও বন্দুক তারা কোথায় পেল। ডিসি ছাড়া তো কেউ বন্দুকের লাইসেন্স দিতে পারে না। জেলা প্রশাসক শামীম ওসমানের কথায় বন্ধুকের লাইসেন্স দিয়েছে। আর সেই বন্দুক দিয়েই ছাত্র জনতার উপর গুলি চালানো হয়েছে। আমরা বলেছিলাম সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। যারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজীসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের সকলের লাইসেন্স দেওয়া যাবে না। আমাদের দাবি ছিল নারায়ণগঞ্জে বন্ধন, উৎসব, মৌমিতা বাসগুলো জনগণের পকেট কাটছে। তারা জনগণকে জিম্মি করে টাকা আদায় করছে। এই নারায়গঞ্জে চাঁদাবাজির ঠাঁই নাই। এই ঢাকা নাগঞ্জের ভাড়া ৫৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৪৫ টাকা করতে হবে। নারায়ণগঞ্জবাসী কেউকে চাঁদা দেন না, কারো থেকে চাঁদা নেন না। এখানে ডিসির দায়িত্ব পালন করতে হবে। শহীদের তালিকা দিলেন না। তারা তথ্য গোপন করলেন। এই জেলায় কতজন নিহত, কতজন আহত সেই প্রকৃত সংখ্যা আজ আমরা জানি না। অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের দাবি ছিল, আন্দোলনের আহত নিহতদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নিহতদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে হবে। জেলা প্রশাসক এই বিষয় দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করেন নি। ৭১ রের শহীদের জন্য স্মৃতি স্তম্ভ, শহীদ মিনার আছে। কিন্তু এই নতুন বাংলাদেশের যাত্রায় যারা প্রাণ দিয়েছে তাদের তালিকা আমাদের লাগবে। আমাদের ছাত্র নেতারা দেশের কাছে গিয়েছিলেন এবং তারা বলেছেন এই রবিবারের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তরিকুল সুজন বলেন, ছাত্ররা এখনো ঘুমায় নি। যে সন্ত্রাস গুন্ডারা ছাত্রদের ওপর বলে চলেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা গণসংহতি আন্দোলন ছাত্রদের সাথে লড়াই করেছি। আমাদের নেতাকর্মীরা সংগ্রামী জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে লড়াই করেছে। নারায়ণগঞ্জের কোনো লোক বলতে পারবে না আমাদের নেতারা কারো কাছে থেকে ৪ পয়সা খেয়েছে। আমরা জনগণের সাথে আছি। শত্রুমিত্র চিনতে শিখুন।
গার্মেন্টম শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অঞ্জন দাসের সঞ্চালনায় সমাবেশে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, মহানগর গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশিদ বিপ্লব, নির্বাহী সমন্বয়ক পপি রাণী সরকার, জেলা কমিটির অন্যতম নেতা আলমগীর হোসেন আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলা কমিটির সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সম্পাদক জিয়াউর রহমান, সোনারগাঁ থানা কমিটির আহ্বায়ক ইব্রাহীম খলিল, ১৮ নং ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক জুয়েল সরকার, ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান, কুমুদিনী কলোনীর নেত্রী লায়লা প্রমুখ। এছাড়াও সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সদস্য আওলাদ হোসেন, এস এম রাব্বি, রাকিবুল হাসান দিপু, শুভ দেব, নাজমা বেগম, আব্দুল আল মামুন, ছাত্র ফেডারেশনের জেলার সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা প্রমুখ।