শামীম ওসমানকে লেংটা করে বিতারিত করেছি, আপনারা জাঙ্গিয়া পরার সুযোগ পাবেন না: রনি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে একজন টোকাই, যিনি কুমিল্লা থেকে এসে নিজেকে সিংহ ভাবতেন। তার (শামীম ওসমান) নেতাকর্মীরা তাকে বাঘ মনে করতেন, কিন্তু তিনি আদো একজন বিড়ালের থেকেও অধম ছিলেন। আমার মনে হয় তার নাম মুখে আনলে পাপী হয়ে যাবো। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিকে তারা কুলশিত করে গেছেন, আওয়ামী লীগ একটি সংগঠন ছিলো সেটাকে তারা কুলশিত করে গেছেন। তারা সাধারণ মানুষের যান মালের নিরাপত্তা দিতে পারে নাই বরং মানুষের অর্থ সম্পদ লুট করে নিজেরা লাভবান হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে যারা এমপি ছিলেন তাদের পরিবার কেমন ছিলো আপনারা জানেন। কিন্তু তারা এখন জাহাজের মালিক হয়েছে, ব্যাংকের মালিক হয়েছে। তারা এগুলা মানুষের কাছ থেকে লুট করে অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে। তারা কিছু টোকাই শ্রেনির নেতৃত্ব তৈরী করেছেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, তাঁতীলীগ, বাস্তহারালীগ এবং কিশোর গ্যাং টাইপের কিছু সংগঠন তৈরী করেছেন। বিশেষ করে বিএনপিকে প্রতিহত করার জন্য এসব সংগঠন তৈরী করেছিলো। কারণ নারায়ণগঞ্জে যদি বিএনপি নেতারা থাকতো তাহলে তারা লুটপাট, সন্ত্রসীপনা করতে পারতো না, এজন্য তারা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও কিশোর গ্যাং দিয়ে বিভিন্ন হয়রানির শিকার করতো।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকালে দক্ষিণ মাসদাইর পাঁচ তলার মোড়ে ফতুল্লা থানা শিল্পাঞ্চলিক শ্রমিকদলের আয়োজনে, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৭৯তম জন্মদিনে তাঁর রোগমুক্তি কামনায়, এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম উল্লেখ করে রনি বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জ একটি শিল্পাঞ্চল এলাকা। এখানে শ্রমিকরা কাজ করে বাসায় যাওয়ার সময় তাদের ফোন রেখে দিতো, তাদের বেতনের টাকা রেখে দিতো। এগুলো সব করেছে সাবেক সংসদ সদস্য টোকাই নেতা বোরখা শামীমের নেতৃত্বে। সে বলেছে সে ডাক দিলে লাখ লাখ মানুষ সমাগত করতে পারতো। আরে বেটা তুই মানুষ পাবি কই, তোর বাড়ি কই। তোর বাড়ি কুমিল্লা,তুই এখানে এসে আমাদের মাথার উপর কাঁঠাল রেখে কোষ খেয়েছিস। তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন দিয়ে বিসিক শিল্প এলাকা ও বিভিন্ন মানুষের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান দখল করে নিতো। কিন্তু আজ তাদের প্রতিহত করেছে জনগণ এবং তাদের নেতৃত্ব দিয়েছে আমাদের ছাত্র সমাজ।
রনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর অন্ধ ছিলাম, আমাদের বোধশক্তি হারিয়ে গেছিলো। কারণ আমাদের সন্তানদের মাদক ধরিয়ে পাগল করে ঘুম পারিয়ে রেখেছিলো। আর তারা কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকার লোক এনে শিল্প এলাকা থেকে লুটপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার করে দিতো। আমাদের এখানে যারা আছে তাদের এখন সময় হয়েছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করা।
অন্তবর্তীকালীন সরকার নিলে যুবদল নেতা রনি বলেন, আজকে দেশের নেতৃত্ব দিছে ২৫ বছর বয়সের সন্তানরা। কিন্তু আমাদের বয়স ৩০-৩৫ হয়ে গেছে। আমরা কিন্তু বুঝতে পারিনি। কিন্তু ১৫ থেকে ২৫ বছরের সন্তানরা বুঝতে পারছে যে, বাংলাদেশকে তারা ধ্বংস করে দিচ্ছে, বাংলাদেশকে ভারতের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। তাই সাধারণ ছাত্ররা তাদের নেতৃত্ব হাতে নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যেমন দেশ স্বাধীন হয়েছিলো ঠিক তেমনি সাধারণ ছাত্ররা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আবার দেশকে স্বাধীন করেছে। দেশ নায়ক তারেক রহমান কিন্তু ১৫ বছর আমাদেরকে ধরে রেখেছিলো। আমরা ছাত্রদেরকে সহযোগীতা করেছি। সারাদেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি। যারা বিনা ভোটে চেয়ারম্যান, মেম্বার, এমপি হয়েছে, তারা তাদের মতো করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে এই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। এই তলা বিহীন ঝুড়ি থেকে দেশকে উঠাতে হলে আমাদের দরকার দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা ড. ইউনুসের নেতৃত্বে আছি, উনাকে আমরা সহযোগীতা করবো। যে কোন সময় উনার নেতৃত্বে আমাদের কাজ করবো। উনি যে দিক নির্দেশনা দিবে সে দিক নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো। আমরা ১৬ বছর কষ্ট করেছি, প্রয়োজনে আরও ১০ বছর কষ্ট করবো। তারপরও এই বাংলাদেশ থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, কৃষকলীগকে ধ্বংস করতে হবে। যতদিন এরা থাকবে ততদিন বাংলাদেশে শান্তি থাকবে না। বাংলাদেশ অসুস্থ, তাই দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ, তারেক রহমান অসুস্থ। যেদিন দেশ সুস্থ হবে, সেদিন দেশ সুস্থ হবে সেদিন দেখবেন খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে গেছে, তারেক রহমানও দেশে আসবে। দেশ নায়ক তারেক রহমানকে দেশে আনার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ড. ইউনুসকে সহযোগীতা করবো। পুলিশ সেনাবাহীনি আমাদের কাছে সহযোগীতা চাইলে আমরা তাদের সহযোগীতা করবো।
মশিউর রহমান রনি বলেন, আমাদের দেশ নায়ক তারেক রহমান বলেছেন কেউ চাঁদাবাজি লুটপাট করবেন না। যারা তাঁর নির্দেশ অমান্য করবে তারা আমাদের দলের কেউ হতে পারে না, তারা শহীদ রাষ্ট্রপতির আদর্শের কেউ হতে পারে না। যারা তারেক রহমানের নেতৃত্বকে বিশ্বাস করে যারা তার আদর্শ মানেন, তারা এসব কর্মকান্ড থেকে দূরে থাকবেন। বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে পতন করার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে রাজপথে ছিলাম, তেমনি বিএনপিকে রক্ষা করার জন্য তারেক রহমান যে কোন কর্মসূচিতে আামরা রাজপথে থাকবো। আজকে যারা এই দলকে বদনাম করতে চাচ্ছেন, আমি বলবো তারা এই দল করেন না। দলকে ব্যবহার করে আপনারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হতে চেয়েছেন। আপনারা শামীম ওসমানের দিক নির্দেশনা পালন করার জন্য বিএনপিতে বিশৃঙ্খলা করতে চাচ্ছেন। শামীম ওসমানবে লেংটা করে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিতারিত করেছি, আপনারা জাঙ্গিয়া পরার সুযোগ পাবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে ধ্বংস করা না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিকদল ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকবে।