শামীম ওসমানকে না.গঞ্জে সিন্দাবাদের ভূতের মতো চাপিয়ে রেখেছে প্রধানমন্ত্রী: রফিউর রাব্বি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১২৬ মাস (সাড়ে দশ বছর) উপলক্ষে আলোক প্রজ্বালনের আয়োজন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. এবি সিদ্দিক, খেলাঘর নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব কবি সাংবাদিক হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম, উদীচী জেলা সভাপতি জাহিদুল হক দীপু, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, সিপিবি শহর কমিটির সভাপতি আবদুল হাই শরীফ, বাসদ জেলা সংগঠক জিএম কাদির, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদুর রহমান, সামাজিক সংগঠন সমমনার সভাপতি সালাউহদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
রফিউর রাব্বি বলেন, সরকার দেশে বেছে বেছে বিচার করছে। ভিন্নমত দমনের জন্য দিনে হাজার হাজার নাম উল্লেখ করে শত শত মামলা করছে। মৃত-প্রবাসী কেউই বাদ যাচ্ছে না। এসব মামলা আবার হওয়ার সাথে সাথে পুলিশ তৎপর কিন্তু, সাড়ে দশ বছর হলেও ত্বকী হত্যার তৈরী করে রাখা অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেয়া হয়না। বিচার শুরুই হয় না। বিচার ব্যাবস্থাকে সরকার ক্ষমতায় থাকার হাতিয়ার বানিয়েছে। সরকার গুম-হত্যা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পর এখন সাইবার নিরাপত্তা আইন করে মানুষের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে। যাতে সরকারের মন্ত্রী, এমপি, আমলা ও সরকারি দলের কোন অন্যায়-অপরাধ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ কথা না বলে, সরকারের দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করে। মানুষের ভোট, বাক-স্বাধীনতা, সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে একটি অমানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে এই সরকার।
তিনি বলেন, ত্বকীর ঘাতকদের সরকার বারে বারে পুরস্কৃত করেছে, প্রধানমন্ত্রী শামীম ওসমানকে নারায়ণগঞ্জের মানুষের ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভুতের মতো চাপিয়ে রেখেছে। এই পরিবার ও তাদের তাবেদাররা নারায়ণগঞ্জের মানুষের জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে। তিনি ত্বকী, সাগর-রুনীসহ নারায়ণগঞ্জের আশিক চঞ্চল বুলু, মিঠু হত্যার বিচার দাবি করেন।
মাহবুবুর রহমান মাসুম প্রশাসনের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন বলেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নাম আসার পরেও কেন আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তার করা হলো না। ত্বকী হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমানকে আইনের কাঠগড়ায় দাড় করাতে হবে। ত্বকীর সকল ঘাতকদের ফাঁসি নিশ্চিৎ করতে হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
আওলাদ হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারগুলো প্রধানমন্ত্রী না করলে, এই অপরাধে একদিন আন্তর্জাতিক আদালতে তাকে অবশ্যই দাঁড়াতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর থেকে ত্বকীর হত্যার বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।