শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চায় বিএনপি, যা বললেন নেতারা
#আমরা কোন রাস্তা আটকে সমাবেশ করছি না: গিয়াসউদ্দিন
#আ.লীগ হামলা চালিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের রোল তুলে ধরে: মামুন মাহমুদ
#সরকারি দল ও জনপ্রতিনিধিরা হুমকি ধমকি দিয়েছিন: এড. সাখাওয়াত
#আ.লীগকে দাত ভাঙ্গা জবাব দিতে প্রস্তুত: টিপু
#বাধা দিতে আসলে রাজপথে জবাব দিবো: রাজিব
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: অবশেষে সরকার হটানোর ‘এক দফা’ দাবিতে ১৫ দিনের বিএনপির কেন্দ্রীয় গুচ্ছ কর্মসূচি নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই ধাপে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করতে চায় বিএনপি। কর্মসূচিগুলোতে ব্যাপক জনসমাবেশ ঘটিয়ে সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে চূড়ান্ত ‘বার্তা’ দেওয়া হবে।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। লাখো নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে রেকর্ড করার পরিকল্পনা করছে দলটি। তাদের দাবি ‘নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে বিগত কর্মসূচি গুলোর থেকে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ নিয়ে সমাবেশ করবেন। তবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের বাঁধা আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছে নেতৃবৃন্দ। সরকারের সব পরিকল্পনা মাথায় রেখেই বড় সমাবেশ করতে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কোন বাঁধা আসলে তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে বলে জানান নেতাকর্মীরা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করবো এটা বহু আগেই ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের সার্বিক সহযোগীতা করার জন্য ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছি। তাছাড়া আমরা যেখানে সমাবেশ করবো সেটা একটা পরিত্যক্ত জায়গা। আমরা কোন রাস্তা আটকে সমাবেশ করছি না। আমাদের কাজ চলমান আছে, এখনো কোন বাঁধার সমুক্ষিণ হইনি। আমাদের এখন পর্যন্ত যতগুলো কর্মসূচি পালন করেছি, সব গুলোই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। আমাদের প্রোগ্রাম গুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড তো দূরের কথা কোন বিশৃঙ্খলা হওয়ার কোন সুযোগ নাই।
আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) যদি ষড়যন্ত্র করে কোন বিশৃঙ্খলা তৈরী করে, তাহলে করতে পারে। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা কোন বিশৃঙ্খলা করবে না। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে সহযোগীতা চেয়েছি। কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জের মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করেছেন। সেখানে পুলিশ তাদের সহযোগীতা করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, জনগণের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার অধিকার খর্ব করবে না আশা করি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমরা বিগত ১৫ বছর যাবত শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করছি। সেভাবেই আমরা আগামীকাল সমাবেশ করবো। স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার পরেও আমরা ধৈর্যের সাথে আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আমরা সভা-সমাবেশের নামে অরজকতা করি, কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেই তাদের লোকজন দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের রোল তুলে ধরে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা শান্তি সমাবেশ করেই আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছাবো।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, সব সময় আমরা নিয়ম মেনে শান্তিপূর্ণ সভা সমাবেশ করে থাকি। কিন্তু আমাদের কর্মসূচি গুলোতে বাধা যদি আসে তাহলে সব সময় সেগুলো সরকারের দলের নেতাকর্মী ও পুলিশের মাধ্যমে আসে। আমাদের এই কর্মসূচিও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে করার চেষ্টা করবো। ইতিপূবে নারায়ণগঞ্জে সরকারি দলের পক্ষ থেকে ও তাদের জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়েছিন। তাবে আমরা তাদের এসব কর্মকান্ডে মোটেও ভীত না, কারণ আমাদের সাথে জনগণ সম্পৃক্ত। আমরা আশা করি সরকার দলের লোক ও পুলিশ প্রশাসন আমাদের কোন বাধা দিবে না। সমাবেশের মাধ্যমে আমাদের জনগণের সাথে সম্পৃক্ততা প্রকাশ পাবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, এই সমাবেশকে সফল করতে যা যা করা লাগে তাই করবো আমরা। এই সমাবেশের মাধ্যমেই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা চ্যুত করা হবে। আওয়ামী লীগ হলো একটা সন্ত্রাসী দল ও ষড়যন্ত্রকারী দল। আওয়ামী লীগ নিজেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে বিএনপির উপর দায় চাপায়।
তিনি আরও বলেন, যদি বিএনপির সমাবেশে আওয়ামী লীগ বিনা উষ্কানিতে বিএনপির কোন নেতাকর্মীদের গায়ে হাত দেয়, তাহলে আমরা তার দাত ভাঙ্গা জবার দিতে প্রস্তুত। এখন থেকে আওয়ামী লীগকে বিনা বাধায় ছেড়ে দেওয়া হবে না। সরকার দলের একটা শক্তি, সেটা হলো পুলিশ। আমরা পুলিশ বাহিনী নিয়ে বেশ সঙ্কায় আছি। আওয়ামী লীগ মিথ্যা কথা বলে উস্কানি দিয়ে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চায়। তাই প্রশাসনকে বলবো আপনারা নিরপেক্ষ থাকেন। তবেই দেখবো আওয়ামী লীগ মাথে থাকে কি থাকেনা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, আমরা আমাদের কর্মসূচি শান্তি প্রিয়ভাবে করবো। আমাদের সমাবেশের মাধ্যমে আমরা দেশবাসীর কাছে গণতন্ত্র রক্ষার বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। কেউ যদি আমাদের বাধা দিতে আসে তাহলে তাদের সাথে রাজপথে দেখা হবে। সেখানেই জবাব দিবো।