শহীদ রবিউলের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো বিএনপি নেতাদের জন্য ফরজ: সানি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আনিসুল ইসলাম সানি বলেছেন, শহীদ রবিউল দিবসে প্রথমেই আমি স্মরণ করছি রবিউল, নূর হোসেনসহ এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নিহত হয়েছে তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। এছাড়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পতনে যে সকল শিক্ষার্থীরা ও বিএনপির নেতারা শহীদ হয়েছে, তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। শহীদ রবিউল নিহত হয়েছে এটা কখনো বলবো না। শহীদ রবিউল কেবল শহীদ হয়েছেন। ৯০ সালে আমরা যখন ২নং রেলগেট মুসলিম ইন্সিটিটিউটের সামনে এরশাদ বিরোধী মিছিল করছিলাম। তখন শহীদ রবিউলের বুকে গুলি লাগে। আমার সহকর্মী স্বপন চৌধুরী আমার সাথে ছিলো। সেদিন শহীদ রবিউলের মৃতদেহ আমার কাধে ছিলো। সে তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলো আমার বুকে। আমি সেদিন যে পাঞ্জাবী টা পড়েছিলাম সেটা এখনো আমার বাসায় সংরক্ষণ করে রেখেছি।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তন সংলগ্ন বি.বি রোডে, শহীদ রবিউল স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে, নব্বই’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ ২নং রেলগেইটে পহেলা ডিসেম্বর, পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ রবিউলে ৩৪ তম মৃত্যু বাষির্কীতে স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আনিসুল ইসলাম সানি বলেন, ডায়মন্ড হলের চত্বর বা ২নং গেট চত্বর যে যাই বলেন। আজ থেকে এটা শহীদ রবিউল চত্বর হিসেবে পরিচিত হবে। শহীদ রবিউল স্মৃতি সংসদের ভাইদের বলবো, আপনারা সবাই যত দ্রুত সম্ভব হয়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে এই ২নং রেলগেট এলাকাটি শহীদ রবিউল চত্বর করার জন্য আবেদন করবেন। আমরা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে অনুরোধ করবো। পাশাপাশি শহীদ রবিউলের পরিবারকে আমরা জায়গা বরাদ্ধ করে দিয়েছিলাম, কিন্তু এখনো তার পরিবার সেটা পায়নি। আগামীতে যদি তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠন হয়, তাহলে শহীদ রবিউলের পরিবারের জন্য বিএনপি সকল ব্যবস্থা করবে, আজকে আমি এই সভা থেকে কথা দিয়ে গেলাম।
তিনি আরও বলেন, এখনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আছে। এখনো বিএনপি ক্ষমতায় আসেনি। শহীদ রবিউল বিএনপির পক্ষে আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে। আমি মনে করি শহীদ রবিউলের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো বিএনপি নেতাদের জন্য ফরজ। আলী আহমদ চুনকা পাঠাগার থেকে আমরা বিভিন্ন আন্দোলন করেছি। আজকে দেখেন তথাকথিত মেয়র এটাকে গোডাউন করে রেখেছে। তার একঘেয়ামোর কারণে এমন হয়েছে। বাংলাদেশে কোথাও ফুটপাতের মধ্যে এমন করে রাস্তা করা হয়নি। এটা মেয়রের স্বেচ্ছাচারিতায় করা হয়েছে। যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাহলে এই গোডাউন (চুনকা পাঠাগার) ভেঙ্গে আমরা ‘যুগোপযোগী অডিটরিয়াম এখানে গড়বো, কথা দিলাম এই সভা থেকে।
শহীদ জিয়া হলটি ১৫ বছর আগে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে, শামীম ওসমানের বাহিনী পরিত্যক্ত ঘোষণা করে রেখেছে। কারণ কেউ যদি সেখানে প্রোগ্রাম করে তাহলে শহীদ জিয়া হল শব্দটা বলতে হবে। এই লজ্জায় তারা শহীদ জিয়া হলকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেছে। শহীদ জিয়া হল এখনো পরিত্যাক্ত ঘোষণা করার মতো অবস্থা হয়নাই। সেদিন জেলা প্রশাসনকে দুটি আল্টিমেটাম দিয়েছে, শহীদ জিয়া হলটি সংস্কার করতে। যাতে করে ১৬ ডিসেম্বর আমরা সেখানে কর্মসূচি করতে পারি। আজ আমরা বলছি, যদি সংস্কার না করেন, তাহলে শহীদ জিয়ার সৈনিকদের নিয়ে আমরা নিজেদের উদ্যোগে কাজ শুরু করবো। দরকার হলে জিয়ার সৈনিকরা নিজেরা চাঁদা উঠিয়ে, নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে আমরা সেটা সংস্কারের কাজ করবো। আরেকটা আল্টিমেটামে বলেছিলাম সারাদেশে শেখ মুজিবের মূর্তি অপসারণের কথা বলেছিলাম। অনেক জায়গায় অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু ডিসি অফিসে মূর্তি অপসারণ করে নাই, পরে শহীদ জিয়ার সৈনিকরা সেই মূর্তি ভেঙ্গে চূড়ে গুড়িয়ে দিয়েছে। এখনো রাসেল পার্কে কয়েকটি মূর্তি রয়েছে, বাপ্পি চত্বরে কয়েকটি মূর্তি রয়েছে। নারায়ণগঞ্জে কোন শেখ মুজিবের মূর্তি থাকতে দেয়া হবে না। তবে খেয়াল রাখবেন শেখ মুজিবের সাথে আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও দার্শনিকদের মূতি-নাম আছে, সেখানে সম্মান বজায় রাখবেন। শুধু শেখ মুজিব গুষ্টি থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, এখানে (২নং গেট, ডায়মন্ড হলের সাথে) আমাদের জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কার্যলয় ছিলো। সেই অফিসটি আমরা ৭ বার বিএনপি’র নামে টেন্ডার দিয়েছিলাম। কিন্তু হাসিনা ছিলো স্বৈরাচার তার অন্যতম দোসর ছিলো মেয়র আইভী, সে এই অফিসটি দখল করে নিয়েছিলো তার একনায়কতন্ত্র খাটিয়ে। আমি বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বলবো, এই বিল্ডিংয়ে যদি কোন জায়গা খালি থাকে তাহলে আপনারা এখানে জেলা ও মহানগর বিএনপি’র সাইনবোর্ড লাগিয়ে দখল করেন, আমি আপনাদের সাথে থাকবো। যদি না হয়, তাহলে ২নং গেট যে আওয়ামী লীগ অফিস আসে সেটাকে আমরা বিএনপি কার্যলয় বানাবো।