শনিবার ঢাকায় যাবে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: এক দফা দাবি আদায় ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলটির ঘোষিত মহা সমাবেশে অংশ নিতে আজ (২৭ অক্টোবর) ঢাকায় যাবে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিলো দলটির নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের অনেক শীর্ষ বিএনপি নেতারা রাজধানী ঢাকায় অবস্থান নিয়েছে। সেখান থেকেই নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশে যোগদান করবে তারা।
এদিকে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রায় শতাধীক নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে দলটির নেতারা। আর এটিকে রেগুলার প্রসেস বলে দাবি করছে পুলিশ। সব কিছু মিলিয়ে অনেকটা গ্রেপ্তার আতঙ্কের মধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিএনপির নেতাকার্মীরা। এখন শুধু ঢাকায় যাওয়ার পালা।
জানা গেছে, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত ১২ জুলাই একদফা আন্দোলনের ডাক দেয় দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। পরে অক্টোবরেই আন্দোলন ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন দলটির শীর্ষ নেতারা। পরবর্তীতে ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর দুর্গাপূজার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পূজা শেষে ‘চূড়ান্ত’ আন্দোলনে নামার কথা জানায় বিএনপি ও সমমনারা। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির থেকে অঙ্গসংগঠন এবংবিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাদের সতর্ক থেকে সর্বোচ্চ কর্মীদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছে, যত বাধাই আসুক, সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতি হবে ব্যাপক। ২৮ তারিখের সমাবেশর মধ্য দিয়েই সরকার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হবে। আমরা সব রকমের পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এই সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুত রয়েছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিরি সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফস খান টিপু বলেন, প্রশাসন বিভিন্ন ভাবে আমাদের আটকানো চেষ্টা করছে, তবুও আমরা প্রশাসন ও সরকার দলের বাধা ডিঙ্গিয়ে সমাবেশে হাজির হবো। আমরা প্রশাসনের ও সরকার দলের বাধা মাথায় রেখে, সেভাবেই প্রস্তুতী নিচ্ছি। পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে ভয় দেখিয়ে এই সমাবেশে যাওয়া ঠেকাতে পারবে না। প্রশাসনের এমন আচরণে নেতাকর্মীরা আরও উৎসাহি হচ্ছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক জন্মগতভাবে স্বভাব, তারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না। তারা সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে, ভাইলেন্সে বিশ্বাস করে। তাই আমরা সাধারণ মানুষের গণতন্ত্র মুক্তির জন্য, মানুষের ডাল ভাত খাওয়ার অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য ও মুক্ত গণমাধ্যের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য জননেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা মহাসমাবেশ কর্মসূচি পালন করবো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদ লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমাদের প্রস্তুতি সব সময় ভালো থাকে। আমাদের নেতাকর্মীরা রাজপথে উজ্জিবীত। তাছাড়া আওয়ামী লীগ তো সব সময় আমাদের অনুসরণ করে কর্মসূচি দেয়। বিগত কয়েকদিন যাবত দেখছি প্রশাসন ব্যপক তৎপরতা দেখাচ্ছে। নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে, তাদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে, তল্লাশী করছে। সরকার একটা ভয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আমাদের সমাবেশে লোক সমাগম যাতে কম হয় সেই চেষ্টা করছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, ২৮ তারিখ যে কর্মসূচি হবে, সেটা মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃ উদ্ধার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া, নিরপেক্ষ নির্বাচন, সংসদ ভেঙ্গে দেয়া। সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা এই মহাসমাবেশে যোগদান করবে। আমরাও সেভাবে প্রস্তুতী নিচ্ছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন যাবত নেতাকর্মীদের ডিবি পুলিশ দিয়ে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তারা গায়েবি মামলা দিচ্ছে। প্রশাসনের কাজ হলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। জনগণের যানমাল রক্ষা করা। কিন্তু তারা নিরহ মানুষদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে, এটা কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাজ না। এই সরকার একটা রাষ্ট্রের প্রশাসন যন্ত্রটাই নষ্ট করে দিচ্ছে। যেকানে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মিছিল সমাবেশ করতে প্রশাসন সাহায্য করবে সেখানে তারা বাধা দিচ্ছে, অন্যায় করছে। তবুও আমাদের নেতাকর্মী এগুলো উপেক্ষা করে মহাসমাবেশে অংশগ্রহন করবে।