র্যাবের পৃথক অভিযানে শুটার মাসুদ ও শীর্ষ ডাকাত ধরা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আড়াইহাজার ও সোনারগাঁও এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা অভিযুক্ত ‘শুটার মাসুদ’-কে বিদেশি পিস্তল, গুলি ও মাদকসহ আটক করেছে র্যাব-১১। একই দিন পৃথক আরেকটি অভিযানে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় পুলিশ ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলাকারী অভিযুক্ত মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত ‘আক্তার’-কে ডাকাতির সরঞ্জামাদিসহ আটক করা হয়েছে। র্যাবের দাবি, এই দু’জনই নিজ নিজ এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী।
গত ২৭ জুলাই, ২০২৪ তারিখে সোনারগাঁও থানাধীন নোয়াদ্দা বাবুবাজার এলাকায় কাপড় ব্যবসায়ী রাকিবকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। র্যাবের দাবি, সেই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্ত মাসুদ নিজের কোমর থেকে পিস্তল বের করে রাকিবকে পরপর দুটি গুলি করে এবং বীরদর্পে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
র্যাবের ভাষ্যমতে, এই অভিযুক্ত ‘শুটার মাসুদ’ তার দলবল নিয়ে আড়াইহাজার ও সোনারগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্রের শোডাউন দিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতো। তারা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাট, ডাকাতি এবং মাদক ব্যবসা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায়, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সোনারগাঁও থানাধীন পেরাব এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাসুদকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ছয় রাউন্ড গুলি, দুই বোতল হুইস্কি ও ৫৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, র্যাবের দাবি, অভিযুক্ত শুটার মাসুদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় একটি হত্যা, তিনটি হত্যা চেষ্টা, একটি নাশকতা, একটি ডাকাতি এবং একটি মাদক মামলাসহ মোট সাতটি মামলা রয়েছে। একই গ্রুপের আরেক অভিযুক্ত ‘শুটার রিয়াজ’কেও গত ৩ সেপ্টেম্বর সিলেট থেকে আটক করা হয়েছিল।
একই দিনে র্যাব-১১ এর আরেকটি দল মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় পুলিশ ক্যাম্পে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আক্তার সরকার-কে আটক করে। গত ২৫ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানা ও গুয়াগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্পের যৌথ অভিযানে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ও গুলি চালায় নয়ন-পিয়াস ও আক্তার বাহিনী। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়।
র্যাবের দাবি, এই বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে মেঘনা নদীতে অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি এবং ডাকাতি করে আসছিল। তাদের ভয়ে এলাকার শতাধিক পরিবার গ্রামছাড়া হয়েছে এবং গত এক বছরে তাদের হাতে বেশ কয়েকজন খুনও হয়েছে।
সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ একটি দল ৭ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার তিতাস থানা এলাকা থেকে আক্তারকে আটক করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ক্যাম্পে হামলায় ব্যবহৃত বিশেষ নৌকা, পাঁচটি পিতলের তৈরি নৌকার পাখা, দুটি চুম্বক, একটি ছোরাসহ ডাকাতির অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
আক্তারের বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন থানায় চারটি হত্যা, দুটি ডাকাতি, একটি অপহরণ, একটি চাঁদাবাজি এবং ১৪টি হত্যা চেষ্টাসহ মোট ২৭টি মামলা রয়েছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এর আগে, গত ২৮ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর এই ঘটনার সাথে জড়িত আরও চার অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছিল।
আটককৃত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।