সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
Led02জেলাজুড়েরাজনীতিরূপগঞ্জ

রূপগঞ্জে ইউপি কার্যালয়ে ভাঙচুর-ককটেল বিস্ফোরণ, চেয়ারম্যানের গাড়িতে আগুন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: রূপগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সরকারি ভবনে ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলাবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।

প্রতক্ষ্যদর্শী ও স্থানীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে কম্বল বিতরণের আয়োজন করেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার। একই সময় দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের গেইটের সামনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নির্বাচনী পরবর্তী আলোচনা সভার আয়োজন করেন গোলাম দস্তগীর গাজীর সমর্থিত স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। একই জায়গায় পাশাপাশি দুটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজন জমায়েত হতে থাকে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর দেড়টার দিকে দুই পক্ষের লোকজন লাঠি সোটা ও ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে একটি পক্ষের হামলাকারীরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় ৪ টি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই সাথে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের গাড়িতে (হ্যারিয়ের) আগুন দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ভিতরে নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ তার লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে আরেকটি পক্ষের হামলাকারীরা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে থাকা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ছোড়ার ঘটনাও ঘটে।

এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যান। খবর পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং অবরুদ্ধ অবস্থায় থেকে নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে উদ্ধার করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ির আগুন নেভায়।

এ ব্যাপারে দাউদপুর পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি সহ অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়াকে সমর্থণ করি। যার কারণে নির্বাচনের পর থেকেই সমর্থকদের বাড়ীতে হামলা করা হচ্ছে। আমার বাড়িতেও হামলা করার কথা কিন্তু এলাকাবাসীর সাহায্য পেয়েছি বলে এমন ঘটনা হয় নাই। আজ আমাকে টার্গেট করেই ওরা এসেছিল। এলাকার দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে শীত বস্ত্র বিতরণ করতে ইউপি কার্যালয় প্রাঙ্গনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে চেয়ার টেবিল দেয়া হয়। কোন কিছু বোঝার আগেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নামধারী ওই সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন প্রকার অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গেট ভেঙ্গে আমার লোকজনের উপর হামলা করে। তারা গাড়ি ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। চেয়ার টেবিল ভাঙচুর চালায়। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।

দাউদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী পরবর্তী আলোচনা সভার আয়োজন করি। সেখানে নেতাকর্মীরা বসেছিলেন। এ সময় নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা অফিসে থাকা চেয়ার টেবিল, বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গোলাম দস্তগীর গাজীর টানানো ছবি ভাঙচুর করে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপঙ্কর চন্দ্র সাহা বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সেই সাথে ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ও তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

RSS
Follow by Email